ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা আদনান নিখোঁজ, রংপুরে মায়ের জিডি
রংপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে তিন সঙ্গীসহ নিখোঁজের ঘটনায় আলোচিত বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের খোঁজ চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার মা আজেদা বেগম। আদনান গত ৩ দিন থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তার সঙ্গে গাড়িচালকসহ অপর দুই সঙ্গীর হদিসও মিলছে না। নিখোঁজ আদনান অনলাইনে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিত।
রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় আদনানের মা আজেদা বেগম জানান, শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে তিনি রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেছেন। তাদের বাড়ি রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডের আহলে হাদিস মসজিদ সংলগ্ন। তবে ত্ব-হা তার স্ত্রী এবং দেড় বছর বয়সী ছেলে ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে শালবন মিস্ত্রীপাড়া চেয়ারম্যান গলিতে ভাড়া বাসায় থাকেন। আদনান অনলাইনে আরবি পড়ানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুতবা দিতে যেতেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকাল চারটার দিকে তিন সঙ্গীসহ আদনান রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকায় রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে আদনান সাভারে যাচ্ছেন বলে তাকে জানান। এরপর রাত ২টা ৩৬ মিনিটে স্ত্রী হাবিবা নূরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের। এ সময় তিনি ঢাকার গাবতলীতে আছেন বলে জানান। তারপর থেকেই তার ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আজেদা বেগম আরও জানান, আদনানের ফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এরপর সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি শেষে তাকে না পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়।
আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের শ্যালক জাকারিয়া হোসেন জানান, নিখোঁজের সময় ত্ব-হার সঙ্গে আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দীন ছিলেন। তারাও নিখোঁজ রয়েছেন। ওই রাত থেকে সকলের মোবাইল ফোনই বন্ধ রয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) আলতাব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ত্ব-হার নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। তার মা থানায় জিডিটি করেন। জিডির বিষয়ে তদন্ত চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবু ত্ব-হা নিজেকে ইসলামিক স্কলার (পণ্ডিত) দাবি করে ইউটিউবে ধর্মীয় বিষয়ে স্পর্শকাতর ভিডিও আপলোড করতেন। সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত তার বক্তব্যে ঢাকাকে ‘কেয়ামতের শহর’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। নারীর ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধেও তার বক্তব্য আছে ইউটিউবে। পড়াশোনা শেষ না হলেও তিনি ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে নিজের মতো করে ব্যাখা দিয়ে যাচ্ছেন অনেকদিন ধরেই, যা নিয়ে বিতর্ক আছে।