‘সকল আমলা, সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব নেওয়া হোক’
এমপিদের সম্পদের হিসাব যেমন নির্বাচনের আগে নেওয়া হয় তেমনি দেশের সকল আমলা, সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের সম্পদের হিসাব আপটুডেট করার আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সংসদ নেত্রীর কাছে প্রস্তাব করব। আমরা যারা এমপি আছি আমাদের হিসাব যেহেতু নির্বাচনের হলফনামায় দেওয়া আছে। আমরা আপনার (স্পিকারের) মাধ্যমে অনুরোধ করব বাংলাদেশে যারা আমলা আছেন, সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তি ও যারা ব্যবসায়ী আছেন যাদের সুন্দর সুন্দর বাড়ি, গাড়ি এত দামের প্রত্যেকের সম্পদের হিসাব আপটুডেট দেওয়া হোক।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।
মুজিবুল হক বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন বিদেশে টাকা পাচার যারা করে তাদের নাম বলার জন্য। আমরা কি অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি নাম আমরা বলব? নাম তো আপনি বের করবেন। আপনি বাজেট বক্তৃতায় ১০ পৃষ্ঠার বিবৃতি দিলেন বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যের। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণাভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্স ইন্টিগ্রিটি সিএফআই যে প্রতিবেদন সেই প্রতিবেদন বলা হয়েছে গড়ে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৫৬ কোটি ৭৩ লাখ ডালার পাচার হয়। যা প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আপনার (অর্থমন্ত্রীর) অনেক সংস্থা আছে, সেগুলো দিয়ে বের করুন।
তিনি বলেন, ফেসবুকে দেখলাম আমাদের এই সংসদের একজন সদস্য তার নামে কানাডায় একটি বাড়ি দেখানো হয়েছে, দেখানো হয়েছে কানাডায় সে বাড়িতে হাঁটছেন অমুক এমপির স্ত্রী এবং অমুক এমপির বাড়ি এটা। ৭৪ লাখ কোটি টাকা দিয়ে বাড়িটা ক্রয় করা হয়েছে। এইগুলো কি দোষারোপ ? নাকি সত্য ঘটনা, আমাদের উচিত এগুলো খুঁজে বের করা, অর্থমন্ত্রী এগুলো খোঁজেন।
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন সাহেব বলেছেন দুদক কেন আমাদের খোঁজে না। আমাদের বিষয়ে অনেক মানুষের প্রশ্ন আছে। অনেকে বলেন এমপি হয়েছি, এমপি সাহেব ৫ কোটি টাকা দেন, আবার অনেকে বলেন এমপি সাহেব ১০ লাখ টাকা ধার দেন তারা বলে এমপি মন্ত্রী হলে টাকার অভাব আছে নাকি? এই যে কথা, এই কথার কারণে এই সংসদে সংসদ নেত্রীর কাছে প্রস্তাব করব। আমরা যারা এমপি আছি আমাদের হিসাব যেহেতু নির্বাচনের সময় হলফনামায় দেওয়া আছে। আমি আপনার (স্পিকারের) মাধ্যমে অনুরোধ করব বাংলাদেশে যারা আমলা আছেন, সামরিক বেসামরিক ব্যক্তি, যারা ব্যবসায়ী আছেন যাদের সুন্দর সুন্দর বাড়ি-গাড়ি এত দামের প্রত্যেকের সম্পদের হিসাব আপটুডেট দেওয়া হোক।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বিষয়টা দেখবেন তাহলে বাজেটে টাকার অভাব হবে না। আজ গ্রামে যান কি সুন্দর সুন্দর বাগানবাড়ি। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় রিসোর্ট, এত দামি দামি রিসোর্ট সেই রিসোর্টের টাকা কোথা থেকে আসে? সেই রিসোর্ট গড়ার পয়সা কোথায় পায়? আমার মনে হয় যারা আমরা দায়িত্বে কোন মন্ত্রী, এমপি, বেসরকারি-সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী তারা কত ট্যাক্স দেয়, তাদের কি সম্পদ সমস্ত হিসাব দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আদেশ দেওয়া হোক দুই মাস বা তিন মাস সময় দেন। সমস্ত লোকের যারা প্রশাসনে জড়িত আছি আমাদের কি আছে সেই হিসাব দেওয়া হোক। আমি বলতে পারি আমার হিসাব চাইলে আমি এক সপ্তাহের মধ্যে আমার সমস্ত সম্পদের হিসাব দেব। আমার হিসাবের বাইরে যদি এক পয়সা থাকে আমার কোন আপত্তি নেই সরকার নিয়ে যাবে।
তিনি করোনা ভ্যাকসিন প্রদান নিয়ে বলেন, ১০ কোটি মানুষকে এক বছরের মধ্যে টিকা দেন, তাহলেই বাজেট ফলপ্রসূ হবে। অন্যথায় বাজেট ফলপ্রসূ হবে না।