রাজশাহীতে ওঠানামা করছে সংক্রমণের হার



শিরিরন সুলতানা কেয়া, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহীতে ওঠানামা করছে সংক্রমণের হার

রাজশাহীতে ওঠানামা করছে সংক্রমণের হার

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলছে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’। তারপরও সংক্রমণের হার তেমন কমেনি। নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণের হার ওঠানামা করছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সংক্রমণ কমেছে।

রাজশাহীতে এখন আরটি-পিসিআর, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন এবং জিন এক্সপার্ট টেস্ট করা হচ্ছে। গড়ে সংক্রমণের হার ২২ থেকে ২৫ শতাংশ। তবে শুধু পিসিআর ল্যাবে সংক্রমণের হার এখনও ৪০ শতাংশের ওপরে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা পিসিআর ল্যাবে করা পরীক্ষাকেই সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য বলছেন।

রাজশাহীতে দুটি ল্যাবে পিসিআর মেশিনে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ভাইরোলজি বিভাগে। অন্যটি রামেক হাসপাতালে। দুটি ল্যাবের নমুনা পরীক্ষায় গড় সংক্রমণের হার একদিন ৩০ শতাংশে নামলে পরদিন ৪০-এ উঠে যাচ্ছে।

রাজশাহীতে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে গত ১১ জুন বিকাল থেকে। তখন শুধু পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ছিল ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। তারপর হার কিছুটা কমেছে। বর্তমানে পিসিআর ল্যাবে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে থাকছে সংক্রমণের হার।

লকডাউন শুরুর পরদিন ১২ জুন দুটি পিসিআর ল্যাবে সংক্রমণের গড় হার ছিল ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ১৩ জুন কমে হয় ৪১ দশমিক ১৮ শতাংশ। এর পরদিন ১৪ জুন সংক্রমণের হার পাওয়া যায় ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ। ১৫ জুন হার ছিল ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১৬ জুন ছিল ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া ১৭ জুন ৪৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ১৮ জুন ৩০ দশমিক ০৫ শতাংশ, ১৯ জুন ৪৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং সর্বশেষ ২০ জুন সংক্রমণের হার পাওয়া গেছে ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

পিসিআর ল্যাবে সংক্রমণের হার বেশি থাকলেও কম হচ্ছে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং জিন এক্সপার্টে। ফলে গড় সংক্রমণের হার কমে যাচ্ছে। ১৯ ও ২০ জুন গড় সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে পিসিআর ল্যাবের হারকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে যাঁদের উপসর্গ আছে, তাঁদের দ্রুত সময়ের মধ্যে র‌্যাপিড টেস্ট করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

রাজশাহীর জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, এখনও অনেক মানুষের মাঝে করোনার টেস্ট করাতে অনীহা রয়েছে। ফলে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে তাঁদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা শুরুর আগেই। এর ফলে মৃত্যু কমানো যাচ্ছে না। তাই আরও বেশি যেন টেস্ট হয় সেটা তদারকি করতে হবে। তিনি মনে করেন, রাজশাহীতে এখন এলাকাভিত্তিক করোনার সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে। এ কারণে একদিন কম অন্যদিন সংক্রমণের হার বেশি হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করলেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদারও। তিনি বলেন, ‘ধরুন আজ শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকার নমুনা বেশি টেস্ট হয়েছে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের হার কম। কিন্তু পরদিন যখন সাহেববাজার এলাকার নমুনা বেশি টেস্ট হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের হার বেশি।’

তবে লকডাউনের ফলে সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে বলেই মনে করেন স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার। তিনি বলেন, ‘লকডাউন শুরুর সময় তো সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। এখন সেটা কোনদিন ৩০, কোনদিন ৪০ হচ্ছে। তাহলে একটু কমেছেই।’

যদিও প্রকৃত চিত্র বুঝতে অন্তত ১৪ দিন অপেক্ষা করার কথা বলছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। তিনি বলেন, ‘এখন যাঁরা শনাক্ত হচ্ছেন, তাঁরা আগেই আক্রান্ত হয়েছেন। কোয়ারেন্টিনের নিয়ম হচ্ছে ১৪ দিন। তাই ১৪ দিন পরই প্রকৃত চিত্রটা বোঝা যাবে। এ জন্য লকডাউনটা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।’

সোমবার (২১ জুন) সকালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের সময় তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ বলতেছি। আমরা যেটা খবর পাচ্ছি যে এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে করোনা রোগী । সংক্রমণ বাড়ছে, শঙ্কাও বাড়ছে দিনে দিনে। লকডাউনও চলছে। বাট আমার কাছে যেটা মনে হয় ব্যক্তিগত মতামত যে, সঠিক সময়ে আমরা সঠিক কাজটা করতে পারিনি। সে জন্য আমাদের করোনা রোগীর সংখ্যা এভাবে বেড়ে গেছে। এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। আমরা সম্মিলিতভাবে যদি কাজ করি, এখনও সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করা।’

   

পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকালে আটক ৫



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার মিরপুরে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে নদী থেকে নৌকা ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলনের সময় নৌ পুলিশের বিশেষ অভিযানে একটি নৌকা ও একটি ড্রেজারসহ আটক হয়েছেন ৫ বালি উত্তোলনকারীচক্রের সদস্য।

গতকাল মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া থেকে রূপপুর নৌ পুলিশের বিশেষ একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেন। এ সময় নৌকার মাঝি-মাল্লাসহ একটি লোডিং ড্রেজার এবং একটি বালি টানার কারগো /নৌকা আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- কুষ্টিয়া জেলার তালবারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ফারুক মাঝি (৫৫), মো. সজিব, মোহাম্মদ আলতাফ (৩৫), মো. সাবদুল(৩৫) এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামার উপজেলার মসলেমপুর গ্রামের মো. মামুন (২৫)।

অভিযান পরিচালনাকারী এসআই জামাল জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে বালি মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা করা হয়েছে।

;

মিয়ানমার থেকে ফিরছে ১৭৩ বাংলাদেশি, অপেক্ষায় স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাজা ভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি নাগরিক। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে তাদের বহনকারী জাহাজ কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বাঁকখালী নদীর মোহনায় বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এদিকে, হিট অ্যালার্ট অপেক্ষা করে প্রিয়জনের অপেক্ষায় সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে আছেন তাদের স্বজনেরা।

ইয়াঙ্গুনের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, মিয়ানমার থেকে আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজারের, ৩০ জন বান্দরবানের এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে রয়েছে।

তীব্র গরম অপেক্ষা করে প্রিয়জনকে দেখতে ঘাটে স্বজনরা

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্বজনরা কেউ ৩/৪ দিন ধরে কক্সবাজারে এসে অপেক্ষা করছেন। বেলা ১২টা বাজলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত জাহাজটি কক্সবাজারে এসে পৌঁছায়নি। সময় যতই যাচ্ছে নুনিয়ারছড়ার এ ঘাটে স্বজনদের উপস্থিতি বাড়ছে।

মহেশখালীর শাপলপুর থেকে আসা গুনু মিয়া বলেন, আমার ছেলে কায়সার হামিদ দুই বছর ধরে মিয়ানমার কারাগারে বন্দী। আজকে ছেলে ফিরছে। তার জন্য অপেক্ষায় আছি। রোদ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও এ অপেক্ষা কষ্ট দিচ্ছে না।

টেকনাফের কুলারপাড়া থেকে আসা স্বজন আব্দুল শুক্কুর বলেন, আমার ভাই মোহাম্মদ ইসমাইল ৯ বছর আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলো। সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বন্দী জীবন শেষে আজকে সে ফিরছে।

ছেলের অপেক্ষায় পথের দিকে তাকিয়ে আছেন বাবা

প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) মিয়ানমার থেকে ফেরা ১৭৩ বাংলাদেশিকে যাছাই বাছাই শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

মিয়ানমার ফেরত ১৭৩ জনের মধ্যে ১৪৪ জন দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ছিলেন। তাদের সবার সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে আগেই। বাকি ২৯ জনের সাজার মেয়াদ শেষ না হলেও তাদেরকে বিশেষ ক্ষমার আওতায় আনা হয়েছে।

;

মোংলায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাগেরহাটের মোংলায় তীব্র দাবদাহের সঙ্গে অসহনীয় রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মোংলার জনজীবন। তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদ গাহ মাঠে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্ম প্রাণ মুসলিমরা।

মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে এবং পৌর কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে এ নামাজে সব শ্রেণি-পেশার অন্তত দুই হাজার মুসল্লি অংশ নেন। 

ইসতিসকার নামাজে ইমামতি করেন মোংলা ইমাম পরিষদের সভাপতি ও বি এল এস মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম। নামাজ শেষে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলা দাবদাহ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া হয়।

নামাজে আসা মুসল্লী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক এসএম মহিউদ্দিন বলেন, 'সারাদেশের মতো মোংলাতেও অসহনীয় গরম পড়েছে। অনেকদিন ধরেই বৃষ্টি হওয়ার কথা, কিন্তু হচ্ছে না। তীব্র গরমে শুধু মানুষ না পশু পাখিরাও কষ্ট পাচ্ছে। সে জন্য রাসুল (সা.) এর সুন্নত অনুযায়ী দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করলাম, বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইলাম।'    

ইসতিসকার নামাজ পড়ানো ইমাম হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড গরম, তার ওপর বৃষ্টি নাই। ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে। সাধারণ মানুষের চলাফেরা, ইবাদাত বন্দেগি করতেও সমস্যা হচ্ছে। যে কারণে আমরা আজ বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহর কাছে চাওয়া তিনি আমাদের নামাজ কবুল করবেন এবং বৃষ্টি দিবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান জসিম, চালনা বন্দর আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা রুহুল আমীন, কোরবান আলী আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা গোলাম মোস্তফা, মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রহমানসহ পৌর শহরের সবকটি মসজিদের ইমাম ও সাধারণ মুসল্লীরা।

;

নওগাঁয় এক পরিবারের চার প্রতিবন্ধী ভাই-বোন, মানবেতর জীবনযাপন



শহিদুল ইসলাম,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
নওগাঁয় এক পরিবারের চার প্রতিবন্ধী ভাই-বোন, মানবেতর জীবনযাপন

নওগাঁয় এক পরিবারের চার প্রতিবন্ধী ভাই-বোন, মানবেতর জীবনযাপন

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রামের পথে প্রান্তরে। অথচ এখন হাঁটার শক্তি নেই, পারেন না দাঁড়াতেও। কোথায় যেতে হলে কারো সাহায্য নিতে বা প্লাস্টিকের টুল টেনে করতে হচ্ছে চলাফেরা। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নে হরিপুর গ্রামের একই পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোন। এ চার ভাই-বোনের বয়স যখন ১০ থেকে ১২ বছর পর থেকেই হাত-পা ছোট, চিকন ও শরীর বাঁকা হয়ে পড়ে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী আব্দুল হাকিম, ৩১ বছর বয়সী আলমগীর, ৩০ বছর বয়সী সালমা ও ২৭ বছর বয়সী আব্দুর রহমান। কিন্তু চার ভাই বোনের জীবনে ছন্দপতন ঘরে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সের পর থেকেই। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তাদের আর উচ্চতা। আস্তে আস্তে তাদের হাত-পা ছোট, চিকন ও বাঁকা হয়ে পড়ে, তারা হয়ে যান শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পরে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোন লাভ হয়নি। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দেখাতে পারেনি ভালো কোন ডাক্তারও। ছেলে-মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মা। এরপর চার ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য তাদের বাবা আবারো বিয়ে করেন। বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন কাজে কাজে সহায়তা করেন সৎ-মা মো. কমলা। নিজের সন্তান না হলেও প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোনকে নিজের সন্তানের মতোই পরম আদরে দেখাশোনা করছেন তিনি। এইভাবেই সংগ্রাম করে জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবারটি।

পরিবারটিকে সহায়তায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান স্থানীয়রা।

প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমান ও আলমগীর বলেন, আমাদের বয়স যখন ১০ বছর পর্যন্ত আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম। বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতাম, আড্ডা দিতাম, হাটে-বাজারে যেতাম। অনেক স্মৃতি ছিল। এখন ছোটবেলার কথা মনে পড়লে কষ্ট হয়, অনেক সময় কান্নাও করি। ভবিষ্যতে আমাদের দেখবে কে? বাইরের কোন মানুষজন আমাদের চার ভাই-বোনের চলাফেরা দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না।


তারা আরও বলেন, আমরা চার ভাই বোন অনেক কষ্ট আর সমস্যার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছি। চলাফেরা করা যায় না টুল টেনে না হলে হামকুর পেরে কোনরকম চলাফেরা করতে হয়। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ভালো না হওয়ায় কোন অসুখ হলে ঠিকমতো ওষুধও কিনে খেতে পারি না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বা কোন বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়ালে একটু উপকার হতো।

তাদের প্রতিবন্ধী বোন সালমা বলেন, ১০ বছরের পর থেকে আমি আর স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারি না। টুল নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। আমার ভাইদের চেয়ে আমার কষ্ট আরও বেশি। সব সময় অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে।

সৎ-মা মোছা. কমলা বলেন, আমার বিয়ে হয়ে এখানে আসার পর থেকেই তাদেরকে টুল টেনে চলাফেরা করতে দেখছি। তাদের সব কাজ আমাকেই করে দিতে হয়। তাদের কথা চিন্তা করে নিজে কোন সন্তান নিইনি। নিজের সন্তানের মতই তাদেরকে সেবাযত্ন করে যাচ্ছি। আমার এই চার সন্তানদের পাশে কেউ দাঁড়ালে তাদের জন্য খুব ভালো হতো।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিতে বলেছি। এছাড়াও চিকিৎসা মাধ্যমে তাদেরকে ভালো করা গেলে চিকিৎসার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

;