শিক্ষার্থীদের বাবা-মা সেজে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ!

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কুড়িগ্রামের উলিপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে উপবৃত্তির তালিকায় শিক্ষার্থীদের বাবা হিসেবে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নাম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও উপবৃত্তির তালিকায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাই পরিচয়ে প্রধান শিক্ষকের ছেলের নাম এবং মায়ের নামের স্থলে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর নাম ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এতেই ক্ষান্ত হননি প্রধান শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে তার দুই শ্যালকের নামও ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় সুবিধা বঞ্চিত ও সংক্ষুদ্ধ এক অভিভাবক ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম মাহাবুবার রহমান। তিনি উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মাদারটারী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সাল থেকে উপজেলার মাদারটারী পূর্ব পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাহবুবার রহমান প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রধান শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে নিজের পক্ষীয় লোকজন দিয়ে পকেট কমিটি তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে স্লিপ, প্রাক-প্রাথমিক ও রুটিন মেইনটেন্স প্রকল্পের টাকা নয়-ছয় করে আসছেন।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছর জানুয়ারিতে সরকার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির টাকা বরাদ্দ দিলে প্রকৃত শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে প্রধান শিক্ষক। তালিকায় ৯১, ১২৮, ১২৯, ১৬৯, ১৭৪, ২১৫ নং ক্রমিকের শিক্ষার্থীদের বাবা, ৫৯ নং শিক্ষার্থীর চাচা হিসেবে নিজের নাম ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও ১০৪, ১৬৮, ২১২ নং শিক্ষার্থীর মা হিসেবে তার স্ত্রী সাবিনা বেগম, ১৩০ ও ১৩২ ক্রমিকের শিক্ষার্থীর ভাই এবং ৭ নং ক্রমিকের শিক্ষার্থীর বাবা হিসেবে প্রধান শিক্ষকের ছেলে সাদেকুলের নাম ব্যবহার করা হযেছে বলে অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের দুই শ্যালক মাইনুল ও মেহেদীকে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাই, চাচা ও পিতা হিসেবে তালিকায় নাম দেখানো হয়েছে।

জানা গেছে, কিট এলাউন্সসহ ১৭ শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্দ হওয়া প্রায় ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা নামে বেনামে আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক মাহাবুবার রহমান। এছাড়াও করোনা কালে শিক্ষার্থীদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাহাবুবার রহমানের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নাকচ করে বলেন, ‘আসলে বিষয়টা সেরকম না, সাক্ষাতে বলবে বুঝতে পারবেন।’ তবে তালিকায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নামের স্থলে তার ও তার স্ত্রী-পুত্রের নাম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি কোনও সদুত্তোর দিতে পারেননি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাদিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।