এলপি গ্যাসের নতুন দর, ১২ কেজি ৮৯১ টাকা
এলপি গ্যাসের নতুন দর সিলিন্ডার প্রতি (১২ কেজি) ৮৯১ টাকা পুনঃনির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কেজি প্রতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ দশমিক ২৪ টাকা। অন্যদিকে যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজির দর লিটার প্রতি ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুন) এই দর ঘোষণা করেছে বিইআরসি। নতুন দর জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য মকবুল ই এলাহী চৌধুরী।
যদিও বিইআরসির আদেশ অমান্য করে অনেক আগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এলপিজি আমদানিকারকরা। বিইআরসি জুন মাসের জন্য সিলিন্ডার (১২ কেজি) প্রতি খুচরা মূল্য ৮৪২ টাকা ঘোষণা করে। কিন্তু কোথায় এই দামে কেনাবেচা হওয়ার খবর পাওয়া যায় নি। পাইকারিতেই এই দরের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দর বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। নতুন একটি বিষয় বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগে।
তিনি বলেন, দর না মানলে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে আইনে। এ জন্য বিধি প্রনয়ণ করতে হবে, আর বিধি করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আমরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।
দেশে প্রথমবারের মতো গত ১২ এপ্রিল এলপিজির দর ঘোষণা করা হয়। সে সময় এম মাইনাস ওয়ান (এক মাস পর) ফরমুলা চালু করা হয়। আমদানি নির্ভর পণ্যটি বিদেশ থেকে দেশে আনতে প্রায় ২০ দিনের মত সময় লাগে, সেই গ্যাস বাজারে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছতে সবমিলিয়ে প্রায় ১ মাস লেগে যায়। সে কারণে আলোচনার ভিত্তিতে এম মাইনাস ওয়ান ফরমুলা চালু করা হয়। অর্থাৎ সৌদিতে দর বাড়লে বাংলাদেশে বাড়বে ১ মাস পরে। মে মাসের দর বিবেচনায় নিয়ে ৩১ মে জুন মাসের দর ঘোষণা করা। তখন প্রোপেন ও বিউটেনের যথাক্রমে সৌদি দর ছিল টন প্রতি ৪৯৫ ও ৪৭৫ ডলার। কিন্তু পরের দিন ১ জুন ঘোষিত সৌদি সিপির দর যথাক্রমে ৫৩০ ও ৫২৫ ডলারে। সেই দর দেখেই সঙ্গে সঙ্গে সিন্ডিকেট করে দেশে এলপিজির দর বাড়িয়ে দেয় কোম্পানিগুলো। আর অসহায়ের মতো চেয়ে চেয়ে দেখেছে বিইআরসি।
সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তি মূল্য অর্থাৎ গ্যাসের নীট মূল্য ধরা হয়েছে। সিপির দর উঠা-নামা করলে প্রতিমাসে দর সমন্বয় করা হবে। অন্যান্য কমিশন ও প্রফিট অপরিবর্তিত থাকবে পরবর্তী গণশুনানি না হওয়া পর্যন্ত। মার্চের সিপি (সৌদী আরামকো কন্ট্রাক্ট প্রাইস)দর ছিল যথাক্রমে প্রতি টন প্রোপেন বিউটেন ৬২৫ ও ৫৯৫ ডলার। পরের মাস এপ্রিলে হয় যথাক্রমে ৫৬০ ও ৫৩০ ইউএস ডলার হলে সিলিন্ডার (১২ কেজি) প্রতি এলপি গ্যাসের দর নির্ধারণ করা হয় ৯০৭ টাকা। মে মাসে ৪৯৫ ও ৪৭৫ ডলারে নেমে এলে দর নির্ধারণ করা হয় ৮৪২ টাকা। জুনে দর উঠেছে যথাক্রমে ৫৩০ ও ৫২৫ ডলারে।
এদিকে এলপিজি আমদানিকারকদের সংগঠন লোয়াব প্রথম থেকেই আপত্তি করে যাচ্ছে। তখন প্রতিমাসে নিয়মিত দর পুনঃনির্ধারণ করে যাচ্ছে বিইআরসি। সম্প্রতি আবার কমিশন বাড়ানোর আবেদন দিয়েছে এলপিজি বাজারজাতকারি কোম্পানিগুলো। তারা কমিশন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে, তাদের সেই প্রস্তাবের ওপর আগামী ৭ ও ৮ জুলাই গণশুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।