সরকারের ভুলের কারণে মানুষ মরছে: ডা. জাফরুল্লাহ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ভুলের কারণে মানুষ মরছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, সরকারের ভুলের কারণে মানুষ মরছে। সরকারের ভুলের কারণে শিক্ষা ধ্বংস হচ্ছে। সরকার ভুল পথ হাঁটছেন। ভুল পথে হাঁটলেও সংশোধ করা যায় কিন্তু সরকারের সংশোধন করার কোনো ইচ্ছা নাই। সরকার জনসাধারণকে তার প্রজা মনে করেন। প্রজার কাছে কোনো জবাবদিহি থাকে না।

রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। করোনা মোকাবিলা, শ্রমিকদের হয়রানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ নাগরিক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গণস্বাস্থ্যের মিডিয়া উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর প্রমুখ।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলকে ছোট করা ছাড়া সরকারের আর কোনো কাজ আছে বলে আমার মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রীর কথা আর কাজের মিল নেই। ওনি সব সময় বলছে আমরা যুদ্ধে আছি, কিন্তু ওনি তো যুদ্ধ দেখেন নাই।

দেশে কোনো রাজনীতি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমলারা, ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ শাসন করছে। সরকার আজ যেটা বলছে কাল সেটা মানছেন না। সরকার লকডাউন করছেন নিজেই লকডাউন মানছেন না। লকডাউন মানার জন্য গরিব মানুষের ওপর অত্যাচার করছে। প্রতিদিন যত জরিমানা হয়েছে সব সাধারণ মানুষ, রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, দোকানদারদের।

কলকারখানা খোলার ব্যাপারে দ্বিমত নেই উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কলকারখানা খোলার ব্যাপারে কতগুলো নিয়ম আছে। শ্রমিকদের টিকা দিতে হবে। টিকা দেওয়া কঠিন কোনো কাজ না। গার্মেন্টস মালিকদেরও দায়িত্ব আছে। তারা যে এত দিন এত লুটপাট করেছে, বেগমপাড়া করেছেন, মালয়েশিয়ায় বাড়ি করেছেন, টাকা পাচার করেছেন। যে শ্রমিকদের কাঁধে ভর করে এত কিছু করেছেন, সেই শ্রমিকদের তো টিকা দিয়েই কারখানা চালাতে পারেন। টিকার টাকা তারাই জোগাড় করে দিতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, এখন যেভাবে ঘটনা প্রবাহ চলছে তাতে আমাদের ৬৪ জেলায় ৬৪টি অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা দরকার। অক্সিজেন উৎপাদনের সব চেয়ে উন্নত টেকনোলজি হচ্ছে জার্মান টেকনোলজি। মাসে ৫০ টন অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম টেকনোলজির দাম মাত্র ৬ কোটি টাকা। বহু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আছে যারা এটা করতে পারে। ৬৪ জেলায় ৬৪টি অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র করতে পারলে আমাদের কেউ অক্সিজেনের অভাবে মারা যাবে না।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা দেখছেন গতকাল থেকে কি একটা তুঘলকি কাণ্ড ঘটছে। হাজার হাজার লোক আসছে। কোন একটা রেসপন্সিবল গভর্নমেন্ট এটা করতে পারে। এদিকে বলা হয়েছে আপনারা যদি না আসতে পারেন কোন সমস্যা নাই। আপনাদের চাকরি যাবে না। অন্যদিকে মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিকদের টেলিফোনে করা হয়েছে। তাদের বলছে, কালকের (আজকের) মধ্যেই চাকরিতে যোগ দিতে হবে নইলে চাকরি থাকবে না। এটাকে তুঘলকি কাণ্ড বলবেন না তো কি বলবেন। সরকার কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন নি। সরকার রফতানিমুখী গার্মেন্টস মালিকদের চাপ সহ্য করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ডিসেম্বরের পর সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে। এটা কি সম্ভব। আমাদের ১৩ কোটি মানুষকে ২৬ কোটি ডোজ দিতে হবে। লাগবে ২৬ কোটি টিকা, কিন্তু কতজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। কত টিকা আছে, এটা সঠিক হিসাব সরকার দিতে পারে না। কত টিকা আসবে এটা তাদের জানা নেই।

লিখিত বক্তব্যে গণসংহতির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইন হওয়ায় প্রতিযােগিতার কারণে যদি পােশাক শিল্প খুলতেই হয় সেক্ষেত্রে পােশাক কারখানা শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দিয়ে স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং প্রয়ােজনীয় পরিবহনের ব্যবস্থা করে
সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়ােজন ছিল। কিন্তু জনগণের ভােট ছাড়া আমলা নির্ভর এই সরকার যে জনগণ এবং বিশেষভাবে শ্রমিকদের প্রতি কি পরিমাণ দায়িত্বহীন, শ্রমিকদের এরা কি পরিমাণে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে তার আরেক বিভৎস দৃশ্যায়ন ঘটেছে গতকাল।

সাকি বলেন, আমরা আরেকটি বিষয়ে গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খােলার ব্যাপারে লাগাতার টালবাহানা করে যাচ্ছে। সরকারের বিবেচনাহীন এই সিদ্ধান্ত কোটি কোটি শিক্ষার্থীদের জীবনই কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, গােটা শিক্ষা ব্যবস্থাকেই এখন প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। আমরা অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানাই। প্রয়ােজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সময়সীমা এবং কর্মদিন কমিয়ে এনে হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে, এর কোনাে বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি ভ্যাকসিন সংগ্রহ এই মুহূর্তে সরকারের প্রধান কাজ। ক্রয়ের স্বচ্ছতা আমরা চাই, কিন্তু যে দামেই ভ্যাকসিন পাওয়া যাক, তাতেই আমাদের ভ্যাকসিন ক্রয় করা উচিত, কেননা লকডাউনের আর্থিক ক্ষতি ভ্যাকসিনের আপাত উচ্চ দামের চেয়ে অনেক বহুগুণ বেশি। তবে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভ্যাকসিন প্রদানের খরচের যে হিসেব ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে এসছে তাতে এক্ষত্রেও যে ভয়াবহ দুর্নীতি নতুন করে হচ্ছে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানাই। দুনীতি এবং সামগ্রিক ব্যর্থতার দায়ে এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণেরও আমরা দাবি জানাই।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেএসডির কার্যকারি সভাপতি সা কা ম আনিছুর রহমান খান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব এড. শাহ আহমেদ বাদল, গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

   

ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে পৃথক দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় তানভীর হোসেন সৈকত (১৬) ও শাকিল হক শান্ত (২৬) নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাইচ্ছুটি এলাকা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ডাক বাংলা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তানভীর হোসেন সৈকত ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ এলাকার গুড়াগাজী বাড়ির হারুনুর রশীদের ছেলে এবং অন্যজন শাকিল হক শান্ত ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের চাঁদগাজী এলাকার প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শান্ত দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সোনাগাজীতে তিন বন্ধু মিলে প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শান্ত। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলে প্রাণ হারান তিনি। এ সময় গাড়িতে থাকা তার অপর দুই বন্ধু অমি এবং রবিন গুরুতর আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে নিহত সৈকতের পরিবার জানায়, বিকালে বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে কাইচ্ছুটি রাস্তার মাথায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সৈকত। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সৈকতের ভগ্নিপতি মজিবুল হক বলেন, পরিবারে পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট সৈকত। আমি প্রবাস থেকে ফেরার পর ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ির সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। এখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিবারের সবাই চলে গেলেও সৈকত পরে বের হয়। পরে কাইচ্ছুটি এলাকায় পৌঁছালে তাকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দেয়। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না কেউ।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকজন পথচারী গুরুতর আহত অবস্থায় সৈকতকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

;

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;