বেনাপোলে সক্রিয় মানবপাচারকারী, ১ মাসে ৭ বাংলাদেশির ভিসা বাতিল



আজিজুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে মানব পাচারকারীরা সীমান্ত পথ ব্যবহার করলেও বর্তমানে বেনাপোল রুটে বৈধ পথে তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত এক মাসে এ পথে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর সময় সন্দেহজনক এমন ৭ জনের ভিসা বাতিল করে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন।

পাচার প্রতিরোধে ভারত অংশে ইমিগ্রেশনে বেশ কড়াকড়ি দেখা গেলেও বাংলাদেশ অংশে পাচারকারীরা ম্যানেজ করে অনায়াসে নিয়ে যাচ্ছে ওপারে। তবে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বলছেন সন্দেহ হলে তারাও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু ভারতীয় হাইকমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেহেতু যাচাই-বাছাই করে ভ্রমণের অনুমতি দিচ্ছে তাই অনেক সময় আইনগত জটিলতায় সন্দেহ হলেও আটকানো সমস্যা হয়ে দাড়ায়।

পাচার প্রতিরোধ সংস্থ্যাগুলো বলছেন, পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য কমাতে ভিসা প্রদান সংস্থাগুলোর পাশাপাশি সীমান্তের ইমিগ্রেশনগুলোকে আরো সতর্কতা বাড়াতে হবে।

সুত্রগুলো জানায়, আগে মানবপাচারকারীরা অসহায়দের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ নিতে সীমান্ত পথ ব্যবহার করতো। বর্তমানে সীমান্ত পথ অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ায় বৈধ পথ ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে গেল কয়েক বছর ধরে রুট হিসাবে বেশি ব্যবহার করছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন আর ওপারের ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন। পরে ভারতে নিয়ে সেখান থেকে পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে।

গেল দেড় বছর ধরে করোনার মহামারীতে সরকারের নানা বিধি নিষেধে ট্যুরিস্ট ও বিজনেস ভিসা বন্ধ থাকায় পাচারকারী সিন্ডিকেট অনেকটা বেকায়দায় পড়লেও আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বৈধ পথেই নিচ্ছে ভারতে। এক্ষেত্রে ভিসা ও ভ্রমণ অনুমতির সাথে জড়িত এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মেডিকেল ভিসাও সংগ্রহ করছে। পরে তাদের পছন্দের রুট বেনাপোল দিয়ে পাঠাচ্ছে ভারতে। এ সীমান্তে পাচার কাজে তারা শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। অভিযোগ রয়েছে এসব সিন্ডিকেটের সদস্যদের সাথে দুই পারের ইমিগ্রেশনের রয়েছে গভীর সখ্যতা। কয়েক বছর আগে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের সামনে দূর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহতের ঘটনা এবং চেকপোস্ট দিয়ে মানব পাচারের অভিযোগ কেন্দ্রে পৌঁছালে কড়াকড়ি আরোপ করে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন। এরপর থেকে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন এলাকায় অবৈধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এখনও সে অবস্থা চলছে। ফলে মানবপাচারে সহযোগী সিন্ডিকেটের সদস্যরা সুবিধা করতে পারে না। তবে বাংলাদেশ অংশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সাইন বোর্ডে সাধারণদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা লেখাসহ নানান সতর্কবানী থাকলেও হরহামাশায় সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন পরিচয়ে ঢোকে ইমিগ্রেশন ভবনে।

গত ২৮ জুলায় ভারতে তিন বছর জেল খেটে বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ট্রাভেল পারমিটে দেশে ফেরে ১০ বাংলাদেশি। এদের মধ্যে ৪ জনকে মালায়েশিয়া পাঠাতে দালালরা ভারতে নিয়েছিল। পরে ব্যাঙ্গালোর বিমান বন্দরে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের হাতে আটক হয় বলে জানায় ফিরে আসা একজন ভুক্তভোগী শাকিল।

মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা এনজিও সংস্থা রাইটস যশোর এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, পাচারের শিকার যাদেরকে উদ্ধারের পর ফেরত আনা হয়। এরা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন সহযোগিতা মেলে না। ফলে পাচারকারীরা পার পেয়ে যাওয়ায় দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।

এনজিও সংস্থ্যা জাস্টিস এন্ড কেয়ারের যশোরের এরিয়া ম্যানেজার এবিএম মুহিত হোসেন জানান, ভারতে পাচারের শিকার হওয়া যে সকল নারী, পুরুষদের তারা ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে ফেরত আনেন। এদের অনেকেই নেওয়া হয়েছিল বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে। পাচারকারীরা ভারতে নেওয়ার আগে তাদের এমন ভাবে শিখিয়ে নেন তাদের শনাক্ত করা কঠিন।

পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা ব্র্যাকের সিনিয়র জেলা ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানান, তাদের পরিসংখ্যান মতে প্রতিবছর সীমান্ত পথে ভারতে ৫০ হাজার নারী, শিশু ভালো কাজের প্রলোভনে পাচার হচ্ছে। যাদের বড় একটি অংশ যশোর সীমান্ত পথে ভারতে নেওয়া হয়। যে পরিমান পাচারের শিকার হয় তার মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পাচার প্রতিরোধ করতে গেলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আরো কঠিন ভূমিকা পালন করতে হবে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, গত এক মাসে বেনাপোল ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে যাওয়ার পর ভারতীয় ইমিগ্রেশন সন্দেহভাজন ৭ জন বাংলাদেশিকে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। এরা মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতে যাচ্ছিল। তাদের বিষয়ে আমরা ডায়েরী এন্টি করেছি। এরা ভারত ভ্রমণের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারাই তাদের ফেরত পাঠায়। জানতে পেরেছি এরা অনেকেই ভারত হয়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য আসে।

   

মালয়েশিয়ায় প্রতারিত হওয়া শ্রমিকরা পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ ইস্ট এশিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের পাওনা বেতন বাবদ আড়াই কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে জোহরবারুতে ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের খোঁজ মেলে। তাদেরকে প্রায় ৪ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করানো হচ্ছিল এবং প্রতিশ্রুত কাজও দেয়া হয়নি। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জোহর শ্রম অধিদফতর এই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার জন্য ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।

শ্রম বিভাগ জানিয়েছে মোট অপরিশোধিত বেতনের পরিমাণ ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৭ বাথ। যা বাংলাদেশি অর্থে আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মসংস্থান আইন ১৯৫৫ এর ধারা ৬৯(৪) এর অধীনে জোহর শ্রম অধিদফতর এখন নিয়োগকর্তাকে দায়রা আদালতে এনে শ্রম আদালতের জারি করা আদেশ কার্যকর করবে।

মালিকপক্ষ দোষী সাব্যস্ত হলে, কোম্পানি প্রতিটি অপরাধের জন্য ৫০ হাজার রিঙ্গিত বা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা মজুরি নিষ্পত্তি করতে হবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চলা মোট ১০টি তদন্তের মধ্যে ৪টিতে মামলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বাকি ৬টি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও কোম্পানিটিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নিয়োগকর্তাকে নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, একটি বিশেষ ‘নিয়োগকর্তা পরিবর্তন প্রক্রিয়া’ (পিটিএম) এর মাধ্যমে মোট ৬৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীকে এরই মধ্যে নতুন কর্মস্থলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

;

সকাল ৯টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা কিছুদিন বৃষ্টিপাতের পর গত ২-৩ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সিলেট বিভাগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। 

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যায় দেয়া আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়, সিলেটে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রাজশাহীতে ৩, নওগাঁর বদলগাছী ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ২, বগুড়ায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় রংপুরেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

এর পরের ২৪ ঘণ্টা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। 

;

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের আনন্দ শোভাযাত্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর জিইসি মোড় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে এম.ই.এস কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশরত্ন শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে ফিরে আসে তখন থেকে বাঙালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করে বাঙালির সেই স্বপ্নকে নষ্ট করতে চেয়েছিল খুনিরা। কিন্তু শত বাধা,ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

'আজকে শেখ হাসিনা মানেই উন্নত বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই তারুণ্যের চোখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনে বিদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বদেশে এসে খুনি, স্বৈরাচার জিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঘোষণা করেন, আমার হারানোর কিছুই নাই, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমি লড়াই করবো।'

তারা আরও বলেন, আজ বাংলার মানুষ ভোট এবং ভাতের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র জয় থেকে মহাকাশ জয় শুধু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং সাহসিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ ধন্য।

শোভাযাত্রায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইমাম উদ্দীন নয়ন, রাকিব হায়দার, নুরুন নবী সাহেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাজ্জাদ হোসেন, রবিউল ইসলাম খুকু, আব্দুর রাজ্জাক, সাজ্জাদ আলম, নুর মোহাম্মাদ সানি, আওরাজ ভূইয়া রওনক, নুরুজ্জামান বাবু, তৌফিক চৌধুরী প্রমুখ।

;

লালমনিরহাটে নির্মিত হলো দেশীয় প্রযুক্তির প্রথম টার্ন টেবিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাট রেল বিভাগে ব্রিটিশ আমলের প্রযুক্তি সরিয়ে দেশেই তৈরি হলো প্রথম টার্ন টেবিল। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে বিকল হলে তা ব্যবহার বন্ধ করে রেল বিভাগ। তাই ইঞ্জিন বা কোচ ঘোরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হত। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সিক লাইন এলাকায় প্রস্তুত দেশে তৈরি এ টার্ন টেবিলটি উদ্বোধন হলে সময় ও অর্থ দু'টোই সাশ্রয় হবে রেলওয়ের।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দফতর জানায়, রেলের কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়। এতে বাঁ দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁ দিকে চলে যায়। ফলে দুই পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়। এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে ও দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে। ব্রিটিশ আমলে তখনকার কর্মকর্তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল প্রস্তুত করেন। যা ১৯৯৩ সালে বিকল হয়ে পড়লে ব্যবহার বন্ধ করে রেলওয়ে দফতর।

'এরপর থেকে লালমনিরহাট বিভাগের কোচ ও ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কোচ ও ইঞ্জিনগুলো কয়েক মাস পর পর ঢাকায় নেয়া হত। যাতে সময় ও অর্থ অপচয় হত। তাই দেশেই টার্ন টেবিল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। লালমনিরহাটে সিক লাইন এলাকায় এটি নির্মাণের জন্য ৯শতক জমি নেয়া হয়। নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া ২৫ লাখ টাকা। বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এ টার্ন টেবিলটি তৈরি হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন করা হবে।

বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল। ৩৫০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে। এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়। স্থাপনাটির তিন ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানা প্রাচীর, সুরক্ষা প্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত। এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া। এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গেল ও জিআই পাইপের রেলিং ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবদুস সালাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্প টাকা ব্যয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মিত হয়েছে। এতে অব্যবহৃত লাইন, চাকাসহ অন্য লৌহজাত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এটি তার উদাহরণ।

;