তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ
রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ইবনুল রহমান চাকরি করেন এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। উত্তরা থেকে মতিঝিল যাওয়ার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, পুরো সড়কেই যানজট। আর যখন বাস চলছে তখন খুব ধীরগতিতে চলছে। অফিস সময়ে বাসগুলোতে যাত্রীর খুব ভিড় থাকে। অফিস সময়ে বের হয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ভাষাণটেক এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন দাঁড়িয়ে আছেন ইসিবি চত্বরে। যাবেন রামপুরা। তিনি বলেন, এই শহরে আমাদের জীবনের সময়ের কোনো মূল্য নাই। অফিস যেতে আর আসতে বাসেই পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লেগে যায়।
তবে কেবল উত্তরা-মিরপুর নয়, রাজধানীর বেশির ভাগ সড়কে ছিল তীব্র যানজট। সঙ্গে থেমে থেমে কয়েকদফা বৃষ্টিতে ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। নগরবাসী সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। কর্মব্যস্ত নগরবাসীর আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগেছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা যায়। দুপুরে কিছুটা ফাঁকা থাকলেও বিকেল থেকে আবার ঢাকাবাসীকে যানজটের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ সড়ক, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আসাদগেট, খামারবাড়ী, বিজয় সরণি, তেজগাঁও, মহাখালী, বনানী, গুলশান, বারিধারা, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, মতিঝিল, পল্টন, পুরান ঢাকা, মিরপুর, উত্তরা এলাকার প্রধান সড়ক ও অলিগলিতেও ছিল তীব্র যানজট। এ যানজটের কারণে নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে যোগদান করতে পারেনি মানুষ।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পরিদর্শক সাইদুর রহমান বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, আজ সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। এ কারণে সকাল থেকে মতিঝিল এলাকার সড়কে যানজট লেগে আছে। আমরা ধারণা করছি, রাত আটটা পর্যন্ত এই এলাকার যানজটের তীব্রতা থাকবে।
রাজধানীর কুড়িলের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এনায়েত হোসেন। মাঠপর্যায়ের কাজ শেষ করে তার বিকাল ৪টার মধ্যে অফিসে পৌঁছাতে হয়। বৃহস্পতিবার তিনি অফিসে পৌঁছান সন্ধ্যা ৬টায়। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, সড়কে এত যানজট যে অনেক চেষ্টা করেও নির্ধারিত সময়ে অফিসে পৌঁছাতে পারলাম না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, লকডাউন তুলে দেওয়ায় ঢাকার প্রাণচঞ্চলতা বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম চলছে। এ কারণে সড়কে মানুষের চলাচল অনেকাংশে বেড়েছে। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্প, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প, সড়ক সংস্কার, ঢাকা ওয়াসার পাইপলাইন স্থাপন এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ড্রেনেজ সংস্কার ও নতুন ড্রেনেজ নির্মাণ কাজের কারণে অনেক সড়ক বন্ধ এবং কোনোটি আংশিক চালু রয়েছে। এ কারণে ওইসব সড়কে গাড়ি চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, জনদুর্ভোগ বাড়ছে।