বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মতবিনিময় সভা

মতবিনিময় সভা

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তান: আইসিটি সহযোগিতা প্রসারের সম্ভাবনা’ বিষয়ে উভয় দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সাথে সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উজবেকিস্তান রাজধানীর তাসখন্দ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সেন্টারে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের আইসিটি খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি ও শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উজবেকিস্তানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন উজবেকিস্তান এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট আদখাম ইকরামভ।সভায় দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরা হয় এবং এই খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যসহ উন্নয়ন ও বিকাশে যৌথভাবে কাজ করার ক্ষেত্রসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সর্বশেষ অগ্রগতি বিস্তারিতভাবে এসময় উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তান দীর্ঘ পরীক্ষিত বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথা জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে ২০০৮ সালে রূপকল্প: ২০২১ ঘোষণা দেন। এর ফলে বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতি দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। দেশের প্রায় ১২ কোটির মতো মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। আর এটি ডিজিটাল অর্থনীতির সবেচেয়ে সম্ভাবনাময় দিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনীতিতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার ইতিমধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতির তিনটি এজেন্ডা হাতে নিয়েছে। এগুলো হলো- প্রযুক্তি দক্ষ
মানবসম্পদ গড়ে তোলা, দেশের সব নাগরিককে ব্রডব্যান্ড সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা এবং ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলা। মোবাইল ব্যাংকিং থেকে ডিজিটাল ওয়ালেটে রূপান্তরের কাজ চলছে। দেশের নারীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে উল্লেখযোগ্য হারে এগিয়ে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণ্য শক্তিই এই ডিজিটাল অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি।

ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপের (আইএসডিবি গ্রুপ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক
উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে তাসখন্দে এক সরকারি সফরে রয়েছেন ১৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির, বর্তমান সহ-সভাপতি এম.এ রাজ্জাক খান রাজ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএম) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, বিসিএস সভাপতি শাহিদ উল মুনীর, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক লিয়াকত আলী লিয়াকত, ওয়ালমার্ট ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকটনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ ফরিদ আহমেদ, ওয়ালকার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবিহা জারিন অরনা এবং দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রেসিডেন্ট এ. কে.এম সামসুদ্দোহা সহ প্রযুক্তি, শিল্প ও পোশাক খাতের উদ্যোক্তাগণ।

   

উপজেলা নির্বাচন: লোহাগড়ায় ১৩ জনের মনোনয়ন বৈধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জনসহ ১৩ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস- চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৫ জন, ভাইস- চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬১ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২১ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই হয় ২৩ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২ মে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং ভোট গ্রহণ ২১মে।

চেয়ারম্যান পদে ৭জনের মধ্যে ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪ নং নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে. এম ফয়জুল হক রোম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৬ নং জয়পুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম শরিফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুন্সী নজরুল ইসলাম (সাবেক নিবন্ধক- আই.জি.আর), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নড়াইল শাখার সভাপতি মো: তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। চেয়ারম্যান পদে ৭ জনের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগ নেতা মো: আইয়ুব হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

অপরদিকে ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে মনোনয়ন বৈধ হয়েছেন ৩ জনের মধ্যে ২ জন। তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, জেলা আওয়ামী মহিলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ইতি এবং মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মিসেস কনিকা ওছিউর।

ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে একমাত্র প্রার্থী পৌর মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোছা: কাকলি বেগমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২১০৭৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১০৫৭৮৫ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১০৪৯৮৩ জন। এই উপজেলা ১২ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত।

;

ময়মনসিংহে ট্রেনের ধাক্কায় রিকশার দুই যাত্রী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় রিকশার দুই যাত্রী মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও এক শিশু। নিহতরা হলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উজান বাড়েরা গ্রামের আব্দুর রহমান (৬২) তার ভাতিজি শেফালী আক্তার (৪৫)।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বিদ্যাময়ী রেলক্রসিং এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নাজমুল হক খান এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুর গামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার পথে বিদ্যাময়ী রেলক্রসিং রেললাইনে উঠে পড়া রিকশাটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যায়। এই ঘটনায় আহত হয় এক শিশু।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক এসআই দীপক পাল জানান, ঘটনাস্থলে দুই জন মারা গেছেন। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে হয়েছে এবং ঢাকা ময়মনসিংহ লাইনে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।

;

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর: ময়লার ভাগাড়ে পরিণত শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল। সকাল ৯টা। হঠাৎ করেই বড় একটি দুর্ঘটনার সাক্ষী হয় দেশবাসী। ধ্বসে পড়ে রানা প্লাজা নামের একটি ভবন। প্রাণ হারায় হাজারের বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার। আহতদের মধ্যে অনেককেই বরণ করতে হয়েছে আজীবন পঙ্গুত্ব।

আলোচিত সেই রানা প্লাজা ট্রাজেডির কেটে গেছে ১০ বছর। বিষাদ ভুলে গেছে অনেকেই। তবে কেমন আছে আহতরা। তা জানতে আমরা গিয়েছিলাম রানা প্লাজার সামনে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রানা প্লাজার সামনে শহীদদের স্মরণে একটি সৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও তা পড়ে রয়েছে অযত্ন অবহেলায়। সামনে গাড়ির পার্কিং আর পেছনে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাচ্ছেন পথচারীরা।

সেদিন আহতদের মধ্যে একজন ফারুক হোসেন। রানা প্লাজা ভবনের নিচে দোকান ছিল তার। সেদিনের দুর্ঘটনায় তিনিও আহত হয়ে হাতের দুটি আঙুলের কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। কিন্তু পোশাক শ্রমিক না হওয়ার কারণে কোন ক্ষতিপূরণ পাননি তিনি।

দীর্ঘ চিকিৎসার পর এখন আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। ফারুক হোসেন বার্তা২৪.কমের কাছে আক্ষেপ নিয়ে বলেন, সেদিন আমি দোকানে বসেছিলাম। কাস্টমার ছিল, চা বানাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমরা ভূমিকম্পের মতো কিছু একটা অনুভব করতে-করতে দেখি ভবন নড়ছে। সাথে সাথে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও হাতে ভবনের একটি পিলার এসে আঘাত করলে আমার হাতের দুইটি আঙুল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনায় অনেকে নানা রকমের সাহায্য সহযোগিতা পেলেও আমি কোন সাহায্য পাইনি। অনেকদিন বউবাচ্চা নিয়ে অভাবে দিন কাটাইছি। অনেক সাংবাদিক আগে এসে ইন্টারভিউ নিয়েছে, কিন্তু কোন সাহায্য পাইনি।

সে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজন পোশাকশ্রমিক রিক্তা। ডান হাত হারিয়ে এখন অসহায় জীবন পার করছেন গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে। কাজ করার ক্ষমতা অর্ধেক হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখনো সেই স্মৃতি মনে ভাসলে নির্বাক হয়ে যান তিনি। তাকে খুঁজতে গিয়ে বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় তার পরিবারের সঙ্গে। রিক্তার শ্বশুর জানান সেদিনের সেই দুর্বিষহ ৭২ ঘণ্টার কথা।

তিনি বলেন, টানা ৭২ ঘণ্টা আমার ছেলের বউ এই ভবনে আটকে ছিল। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো মারা গেছে। কিন্তু তিন দিন পরে আমি দেখতে পাই আমার ছেলের বউর মুখটা। আমার ছেলের বউ যখন আটকে থাকা অবস্থায় আমাকে আব্বা বলে ডাক দিল, তখন আমি নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। শুধু আল্লাহর কাছে পুত্রবধূর প্রাণভিক্ষা চাইছি। তারপর আমি নিজে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে রিক্তার ডান হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে বের করেছি।

দুর্ঘটনার সময় রিক্তা গর্ভবতী ছিলেন। বর্তমানে তার একটা মেয়ে আছে ৯/১০ বছর বয়সের। বর্তমানে সে কোন কাজ একা ঠিকঠাক করতে পারে না। তবে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া সে এখনো বেঁচে আছে। ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সময় কিছু ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলাম, কিন্তু তা খুবই সামান্য। শুনেছিলাম আরও অনেক কিছু পাবো। কিন্তু তার আর কোন খোঁজখবর নাই।

রানা প্লাজা ভবনটি যেখানে ছিল সেখানে শ্রমিকদের জন্যে একটি ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অযত্নে অবহেলায় জায়গাটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যদি এই জায়গায় শ্রমিকদের জন্য একটা বাসস্থান করে সংরক্ষণ করতো, শ্রমিকদের থাকার জায়গা দিতো তাহলে আরও ভালো হতো। এখনো অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

স্থানীয় শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বার্তা২৪.কমকে জানান, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে রানা প্লাজার এই জায়গায় মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলে নোংরা করে ফেলছে। এছাড়া রাস্তার মানুষ হেঁটে যাওয়ার সময় এখানে প্রস্রাব-পায়খানা করে, যা শ্রমিকদের জন্যে অমর্যাদাকর।

এছাড়াও তিনি সরকার ও বিজিএমইএর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আহত-নিহত শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং এখনো যাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের সুচিকিৎসার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এব্যাপারে কথা বলতে গেলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দকে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

;

এক দশকেও শেষ হয়নি লামায় পানি শোধনাগার নির্মাণের কাজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের লামা পৌরসভার বাসাবাড়িতে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার ১০ বছরেও কাজ শেষ হয়নি।

বান্দরবানের লামা পৌরসভার বাসিন্দারা এখনো নদী, পাহাড়ের ঝিরি, ঝর্ণা ও টিউবেয়েলের পানির উপর নির্ভরশীল। একারণে এলাকায় বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রয়ে গেছে। ২০১৩ সালে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মাতামুহুরী নদী থেকে পানি উত্তোলন করে শোধনের মাধ্যমে সরবরাহের কাজ শুরু করলেও প্রকল্পটি শেষ না হওয়ায় জনদূর্ভোগ এখনো রয়েছ।

এতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠির পানির চাহিদা মেটাতে প্রকল্প নির্মাণে ৬ কোটি টাকা সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেয়া হলেও নেই কোনো হদিস।

সেসময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নির্মাণ খরচ বেড়ে গিয়েছিলো। রিভাইজ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সথাসময়ে বিল পরিশোধ করার পরও প্রকল্পটির কাজ শেষ করেনি। বর্তমানে আমি চাকুরীতে নেই, ওখানে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।

বান্দরবান জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী অনুপম দে জানিয়েছেন, বাস্তবতার আলোকে প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যয় বেড়ে গেছে। এই পরিমান অর্থের অভাবে প্রকল্পটির কাজ শেষ করা যাচ্ছেনা। ঠিকাদার পুরো টাকা কিভাবে উত্তোলন করছেন, জানতে চাইলে তিনি তা জানেন না বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে লামা পৌরসভায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি শুরু করে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় রিভাইজ করে ৭ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়। ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না দেয়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটিতে ঘণ্টায় ১০০ ঘনমিটার ক্ষমতা সম্পন্ন পানি শোধনাগার নির্মাণ ও ৪টি প্যাকেজের মাধ্যমে পাইপ লাইন স্থাপন কাজের কার্যাদেশ পান মেসার্স রতন সেন তংঞ্চগ্যা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

ঠিকাদার জানায়, পাইপ লাইন স্থাপনে ইতিমধ্য ৮৮ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪ টি প্যাকেজের কাজ শেষ হয়েছে । বরাদ্দ না থাকায় ৪২ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকার কার্যাদেশ দেয়া একটি প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এছাড়া পানি শোধনাগার প্রকল্পের মেকানিক্যাল, মেশিনারিজ ও ইলেকট্রিক্যাল কোন কাজই করা হয়নি।

লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জানান, লামা পাহাড়ি জনপদের জন্য নিরাপদ পানিয় জল অত্যান্ত জরুরি। তাই প্রকল্পটি চালু হলে পানির সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তৎকালিন দায়িত্বপালন কালে সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মন গড়া প্রকল্প কাজ করায় ও উর্ধ্বতন মহলের তদারকির অভাবে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। যদি ঢাকা অফিস একাধিক বার প্রকল্পের অবস্থা জানানোর জন্য বান্দরবান প্রকৌশলীকে চিঠি দিয়েছেন তবে কোন উত্তর জানানো হয়নি। যার ফলে এ প্রকল্পটি অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ।

স্থানীয় বাসিন্দা মো, ইব্রাহিম বলেন, লামা পৌরবাসীর নিরাপদ পানীয়জল সরবরাহের উদ্দেশ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটির কাজ শুরু করায় আমরা সীমাহীন আশান্বিত হয়েছিলাম। প্রকল্পটির কিছু কাজ করার পর পরিত্যক্ত হওয়াল ফলে একদিকে সরকারি টাকার অপচয় অন্যদিকে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। নিরাপদ পানীয় জলে দুর্ভোগ থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করার জোর দাবি জানিয়েছে।

;