সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব তলবের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদানের দাবি
১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যে চিঠি দিয়েছে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় সমাজের মানুষের কাছে সাংবাদিক নেতাদের তথা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ওই ১১ সাংবাদিক নেতারা।
তারা দাবি জানিয়েছে বলেছেন, আমরা সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও প্রতিকার দাবি করছি। কেননা এতে করে সরকার ও গণমাধ্যমকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালানো হয়েছে। যা কারো কাম্য নয়।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে এবং ডিআরইউ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। এই ঘটনায় শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনসমূহের নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আপনাদের মত আমরাও জানতে পেরেছি। দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলোর নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব এভাবে তলব করা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। কেননা এর আগে কোন দিন কোন সময়ে এরকম ঘটনা ঘটেনি। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় প্রতিষ্ঠিত সংগঠনসমূহের নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের নামে ঢালাওভাবে এ ধরনের পদক্ষেপ উদ্দেশ্যমূলক বলে আমরা মনে করি। নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সব সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকতা পেশাকে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কেন, কি কারণে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের ভোটে নির্বাচিত। তাই আপনাদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে কারণেই বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনাদের কাছে এবং আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি। সে বিবেচনায় আমরা দৃঢ়তার সাথে বলছি, আমাদের নেতৃবৃন্দের ব্যাংক হিসাবে যদি কোন অস্বাভাবিক লেন-দেন কিংবা কোন ধরণের মানি লন্ডারিং কিংবা জঙ্গি অর্থায়নের তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায় তা যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। আর যদি তা না হয় তবে সেটাও যেন যথাযথ গুরুত্বের সাথে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অতীতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লড়াই-সংগ্রাম, নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণমাধ্যমের বিভিন্ন সংকটে আপনারা আমাদের পাশে থেকেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতেও আমরা আপনাদের পাশে চাই। সাংবাদিকদের সুরক্ষা, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রশ্নে কোন ধরনের হুমকি ধামকিতে আমরা অতীতে যেমন পিছপা হইনি, ভবিষ্যতেও হবো না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএফইজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী।