আবির হোসেনের চাচা শামীম হোসেন জানান, পাড়ার কয়েকজন বন্ধু মিলে খান্দার এলাকায় মেডিকেল সড়কে ব্রিজের নীচে ডোবায় মাছ ধরতে যায়। তারা বৈদ্যুতিক পাম্প দিয়ে ডোবার পারি নিষ্কাশন করে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় আবির ডোবার পানিতে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে আবিরকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
আবির এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছিলেন। আবিরের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মানুষ আর নতুন কোনো কথা শুনতে চায় না, তারা ভোট দেয়ার অপেক্ষায় বসে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাই দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠে চলমান শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শহীদ জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন বাংলাদেশ তৈরিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বিএনপি নেতা বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়বাদ চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে সাথে নিয়ে এ যাত্রায় আমাদের জয়ী হতে হবে।
বাবু গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি ইতিমধ্যে ৩১ দফা সংস্কার রূপরেখা উপস্থাপন করেছে, যা সরকার পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে পারে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার হওয়া উচিত। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিদদের দিয়েই সমাধান করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপি-র পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি'র সাবেক মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, টুর্নামেন্টের সদস্য সচিব লালমনিরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক একেএম মমিনুল হক প্রমুখ।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপির মূল দাবি ছিল সংস্কার করে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেওয়া। আমরা মনে করি যতদিন পর্যন্ত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না, ততদিন দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে না।
ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এখন শেখ হাসিনা নেই। আন্দোলন করা ছাত্র-জনতা অন্তর্বর্তীকালীন এনেছে। এই সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসররা এখনো বিভিন্ন জায়গায় বহাল তবিয়তে আছে উল্লেখ করে দ্রুত তাদের অপসারণ ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, একসময় এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করতো কিন্তু বিভিন্ন শিল্প কারখানা মাটি ভরাট করে খাল জবরদখল করে ফেলে। প্রশাসনের উদ্ধার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে ভালুকা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার ভূমি ফারহান লাবীব জিসান বলেন, মাটি ভরাট করে অনেক অংশে দীর্ঘদিন যাবৎ পানি প্রবাহ আটকে ছিলো। পানিপ্রবাহ টিকিয়ে রাখতে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাগবে পৌর ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য ও খবরের কাগজ প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাউদপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা নিশ্চিত করেন।
সাংবাদিক রফিকের স্বজনরা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে একটি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজি অটো রিকশা করে 8 জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হানা দেয়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়।
এসময় তারা রফিকুল ইসলামের সাথে জরুরী কথা আছে বলে ঘর থেকে বাইরে ডেকে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। রফিকুল ইসলাম ঘর থেকে বের হতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম থানা পুলিশ ও প্রতিবেশীদের ফোনে খবর দিলে প্রতিবেশীরা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ছুটে আসছে জেনে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তার প্রতিবেশী বন্ধু মোহাম্মদ নুর আলম নুরু টেইলারের মামলার তদারকি করায় মামলার এজাহার নামীয় ও খুনের সাথে জড়িত আসামি নিকু ও তার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালাতে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল, লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক গাজী মমিন উল্লাহ, যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল মালেক নিরব, লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্বাছ হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন পৃথক পৃথক বিবৃতিতে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
তারা অবিলম্বে হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও সাংবাদিক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কায়সার হামিদ জানান, হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামে রাতের আঁধারে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে একদিকে নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামের ফসলি জমিসহ মানুষের বসত বাড়ি। ইতোমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শতাধিক পরিবার।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোরে রামপ্রসাদের চর গ্রামের পাড় ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচর গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই ড্রেজিং কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের পরিবর্তে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, নলচর গ্রামের আঃ বারেক, তার ছেলে মহসিন, আলী হোসেন ও হাসনাত প্রধান, হাবিবুল্লার ছেলে মো. রবিউল ইসলাম রবি, সোবহান মিয়ার ছেলে মো. জোয়েল এবং আক্কাস আলীর ছেলে মো. টিটু এই কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত। ব্যবহৃত ড্রেজারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হলো ‘এমবি তানসিল জিসান এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজ’, ‘এমবি সরকার এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল্লাহর রাসূল এন্টারপ্রাইজ’, ‘রিয়া সুপার-১,২,৩,৪’ এবং ‘এমবি তোহা লোডিং ড্রেজার’।
৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১২ অক্টোবর চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ একটি ড্রেজার জব্দ করে। এরপর ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুজনকে আটক করা হলেও অপরাধীদের কার্যক্রম থামেনি।
রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন বলেন, কয়েক বছর আগে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আবার রাতের আঁধারে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। নদীর এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে চালিভাঙ্গা ও রামপ্রসাদের চর এলাকায় ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। তারা সরকারি আইন অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদেরে ইচ্ছেমত বালু উত্তোলন করছে। পাশাপাশি নদীপথে চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অপরাধেও তারা জড়িত।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত মো. রবিউল ইসলাম রবি এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের ইজারা বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর বিগত দুই বছর বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে মুসলিমা বলেন, মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের জন্য সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। যেকোনো ধরনের বালু উত্তোলনই অবৈধ। যারা ইতোমধ্যে এই কাজের সঙ্গে জড়িত বা ভবিষ্যতে জড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং অবৈধ কার্যক্রম প্রতিহত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।