সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন হলে বিতর্ক থেকেই যাবে
সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন হলে বিকর্ত থেকেই যাবে মন্তব্য করে মানববন্ধনে জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ইসি গঠন করা উচিত। সরকার একক সিদ্ধান্তে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করলে রাজনৈতিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এ অর্ন্তভুক্ত ৯০বি ধারা বাতিলসহ সকল কালো আইন বাতিল ও সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন করার দাবীতে’ বাংলাদেশ জনতা ঐক্য আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সংগঠনের সভাপতি মো. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খন্দকারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএলডিপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বক্তব্য রাখেন গণ আজাদী লীগ মহাসচিব মোহাম্মদ আতাউল্লাহ খান, গর্জো সভাপ্রধান সৈয়দ মইনুজ্জামান লিটু, জাতীয় লীগ সভাপতি ড. ইফতেখার ফুয়াদ, কর্মসংস্থান আন্দোলনের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, বিএনজে চেয়ারম্যান এইচ সিদ্দিকুর রহমান খোরশেদ, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল হক প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী এম, নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন ২০২০ সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের মতামত চেয়েছেন। আমরা বাংলাদেশ যুব শক্তি মনে করছি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ আইনের ৯০’র বি ধারাসহ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন ২০২০ গণনেতৃত্ব বিকাশের অন্যতম অন্তরায়। প্রস্তাবিত এই আইনের অধিকাংশ ধারা উপ-ধারাই বাংলাদেশের সংবিধান, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, পরপর দু’টি সার্চ কমিটির ইসি গঠনের ফলাফল মানুষকে হতাশ করেছে। নির্বাচন কমিশন দলীয় সরকারের না নির্দলীয় সেটাও গুরুত্বহীন অনেকটা। কারণ মেধাহীন মেরুদণ্ডহীন মানুষদের যদি সাংবিধানিক পদে বসানো হয় তাদের আচরণে, কথা বার্তায় জাতিকে সংকটের আবর্তে পড়ে হিমসীম খেতে হয়। এখনো যে সময় আছে, তাতে একটি আইন করা সম্ভব। কারণ, এই আইনের একটি খসড়া করা আছে। এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন এই খসড়া করেছিল।
তিনি বলেন, সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেভাবে একটি আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। নতুন কমিশন গঠন করার আগে এই আইন করার মতো সময় এখনো আছে। সরকার আন্তরিক হলে আইন করা সম্ভব। বর্তমান ও এর আগের নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণে নির্বাচনী ব্যবস্থায় মানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষের আস্থা ফেরাতে নির্বাচন কমিশন এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
গণ আজাদী লীগ মহাসচিব মোহাম্মদ আতাউল্লাহ খান প্রত্যাশা করেন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম স্তম্ভ হওয়ায়, আমাদের প্রত্যাশা দেশে সুস্থ ধারার গণতন্ত্রের চর্চা বজায় রাখতে, গণনেতৃত্ব বিকাশে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ আইনের ৯০’র বি ধারাসহ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন ২০২০ বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে মো. আরিফুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন ও বিধান অসাংবিধানিক। এটা মানুষের রাজনীতি করার অধিকার খর্বের শামিল। তারা এ ধরনের অবাস্তব শর্তারোপ না করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগী শর্ত দিয়ে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা প্রয়োজন।
তিনি সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।