বালিয়াডাঙ্গীতে রাজাকার পুত্র পেলেন আ.লীগের মনোনয়ন
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেই নামের তালিকায় বড়পালাশবাড়ি ইউনিয়নে রাজাকারের পুত্র ও গতবারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। অপরদিকে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের বেশকিছু তথ্য গোপন করে কেন্দ্রে তালিকা পাঠান জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারি শান্তিকমিটি রাজাকার আলবদর আলসামস গণের তালিকায় বর্তমান নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের পিতা আব্দুল হালীমের নাম রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আব্দুল হালীমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলাও হয়। যার মামলা নম্বর ১৪৫/৭৪। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসের ২৯ তারিখে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তদন্ত চলাকালীন সময় উপজেলার বড়পলাশবাড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ইউনিয়ন কমান্ডার আব্দুল হামিদসহ বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালীমের বিপক্ষে স্বাক্ষর করেন।
অন্যদিকে সদ্য নৌকা মার্কার প্রার্থী শাহাবুদ্দিন গেল ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়। তার পরেও তার পক্ষে সাফাই গেয়ে কেন্দ্রে তালিকা প্রেরণ করেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এছাড়া কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় আমিনুল ইসলাম বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তা উল্লেখ্য করা হয় নাই।
স্থানীয়রা জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বড়পলাশবাড়ি ইউনিয়নে মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন নৌকা মার্কায় মনোনীত হয়েছেন কিন্তু তিনি তো একজন রাজাকারের সন্তান। তার বড়ভাই সালাউদ্দিন জামায়াত করেন ও ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। শাহাবুদ্দিন একজন রাজাকারের সন্তান এবং পুরো পরিবার জামায়াত বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। সবকিছু আড়াল করে কেন্দ্র কমিটিকে ভুল বুঝিয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে সহায়তা করা হয়েছে। অবিলম্বে তার প্রার্থীতা বাতিলের দাবি করছি। অন্যথায় মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়রা তার বিপক্ষে অবস্থান নিবে।
এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু এড়িয়ে যান।
আর বর্তমান চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রে ভুল তথ্য পাঠিয়ে আমাকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণে কেন্দ্রে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত জানান, বর্তমানে যারা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা তাদের তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। তবে যাচাই বাছাইয়ে সময় কম ছিল বলে ভুল হতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক কুরাইশী জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ধরনের সত্যতা পেলে তার প্রার্থীতা ও মনোনয়ন বাতিলের আবেদন করা হবে।