গ্রাহক নিজেই গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার বসাতে পারবেন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
গ্রাহক নিজেই গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার বসাতে পারবেন

গ্রাহক নিজেই গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার বসাতে পারবেন

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাসের আবাসিক গ্রাহকরা চাইলে বাজার থেকে কিনে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করতে পারবেন। এতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বছরে কমপক্ষে ৬ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে।

গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারি রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ১ হাজার টাকার গ্যাস রিচার্জ করলে প্রায় ৩ মাসের মতো চলে যায়। অর্থাৎ তার মাসের খরচ সাড়ে ৩’শ টাকার মতো পড়ছে। লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হামিদ মিয়াও প্রায় একই রকম তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, আমি জোর দিয়ে বলতে পারি বড় পরিবার হলেও ৫’শ টাকার বেশি গ্যাস লাগবে না। আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন ১ হাজার টাকার গ্যাস রিচার্জ করলে দুই থেকে আড়াই মাস চলে যায়, ৬০ টাকা মিটার ভাড়াসহ।এই যখন প্রি-পেইড মিটারের অবস্থা তখন মিটারবিহীন গ্রাহকের কাছ থেকে (দুই চুলা) প্রতিমাসে ৯৭৫ টাকা হারে আদায় করে আসছে গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো।

এক সময় বলা হতো আবাসিকের গ্রাহকরা অনেক বেশি গ্যাস পুড়ছে তাই দাম বাড়ানো উচিত। ওই বিতর্কের মধ্যেই ২০১৬ সালে লালমাটিয়া এলাকায় প্রথম পাইলট আকারে প্রি-পেইড মিটার বসানো হয়। এতে রেজাল্ট এলো পুরো উল্টো, দেখা গেলো প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারিদের বিল আসছে অর্ধেকের কম(দেড়’শ থেকে আড়াই’শ টাকা)। তখন মিটার বিহীন গ্রাহকের মাসিক ৭৮ ঘনমিটারের বিল ছিল ৬৫০ টাকা নেওয়া হতো। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে এই বিল বাড়িয়ে দুইচুলা ৯৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ২০১৬ সালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন, “প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের রেজাল্ট খুব ভালো। দুই চুলায় মাসে ৩৩ ঘন মিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে”।

পাইলট প্রকল্পের রেজাল্ট দেখে বিপরীত দিকে হাটা শুরু করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। তারা গ্রাহকের এই পকেট কাটার কর্মযজ্ঞ অব্যহত রাখতে চায়। এতে একদিকে যেমন বিপুল রাজস্ব আয় হয়, অন্যদিকে বিশাল চুরিকে ধামাচাপার ফন্দি আটতে থাকে। তিতাসে গ্রামের পর গ্রাম চোরাই লাইন থাকলেই তাদের সিস্টেমলস নেই। সবচেয়ে বড় এই বিতরণ কোম্পানিটি একবার সিস্টেম গেইনও (অর্থাৎ গ্যাস যা কিনেছে তার চেয়ে বেশি বিক্রি দেখায়) করেছে। আবাসিক গ্রাহকদের পকেট কাটা টাকা দিয়ে সমন্বয় করা হয়। অন্যদিকে চোরাই লাইনের টাকায় ফুলে ফেপে উঠেছে কর্তাদের ব্যাংক ব্যালান্স, বাড়ি গাড়ি।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তথ্য মতে দেশে বৈধ আবাসিক গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৩৮ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৩ লাখ ৬৮ হাজার প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করছে। অর্থাৎ প্রতিমাসে সাড়ে ৩৪ লাখ গ্রাহকের পকেট কাটা হচ্ছে। মাসে ৫’শ টাকা হারে ধরলেও মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পকেট কাটা টাকার পরিমাণ বছরে ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।এই হিসেব বড় পরিবারের, কিন্তু অনেক ছোট পরিবার রয়েছে যাদের ১ হাজার টাকার গ্যাসে ৪ থেকে মাস চলে যায়। যুগ যুগ ধরে চলছে এই পকেট কাটার মহোৎসব।

গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো মিটার স্থাপনের বিষয়েটি নিজের হাতে রাখতে মরিয়া। একদিকে মিটারের দর বেশি দেখিয়ে টু-পাইপ কামানো, অন্যদিকে, ধীর গতিতে কাজ করে কম গ্যাস দিয়ে বেশি দর আদায় করে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইনস্টলেশন অব প্রি-পেইড গ্যাস মিটার প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী ফয়জার রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৮ হাজার গ্রাহক প্রি-পেইড মিটারের আওতায় এসেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আরও ২৫ হাজার মিটার স্থাপন শেষ হবে। আরও দু’টি প্রকল্প পরিকল্পনাধীন রয়েছে। একটি ৭ লাখ মিটার অপরটিতে ৫ লাখ ৪৯ হাজার মিটার স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

খোলা বাজার থেকে মিটার ক্রয় প্রশ্নে তিতাসের পরিচালক (অপরেশন)প্রকৌশলী রানা আকবর হায়দারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি পেট্রোবাংলা দেখছে, তারা ভালো বলতে পারবেন।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (আইটি এন্ড প্রিপেইড মিটারিং) প্রকৌশলী মু. রইস উদ্দিন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের ৬০ হাজার গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করছে। আরও ১ লাখ মিটার স্থাপনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। নীতিমালার কথা শুনেছি কিন্তু এখন দেখা হয় নি।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা)প্রকৌশলী মোস্তফা মাহিন সোহাগ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের কোম্পানিতে সিস্টেম ডেভেলপ করা হয় নি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করতে হলে তার আগে সফটওয়ার ডেভেলপ করতে হবে। আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সিস্টেম উন্নয়ন করার জন্য।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ২০১৮ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের দ্রুত করার আদেশ দেন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২০১৯ সালে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সেই নীতিমালায় বলা হয়েছে গ্রাহক নিজের পছন্দমতো দোকান থেকে মিটার ক্রয়করে বিতরণ কোম্পানিতে জমা দেবেন। বিতরণ কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করে স্থাপন করবে।

নীতিমালার প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটারের স্ট্যান্ডার্ড ও টেকনিক্যাল স্প্রেসিফিকেশন চুড়ান্ত করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং মিটার যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কারিগরি কমিটি কাজ করবে। এরপর হিমঘরে চলে যায় কার‌্যক্রম। অবশেষে চলতি মাসে এই স্প্রেসিফিকেশনসহ চুড়ান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে।

যদিও এখনও মিটারের সরবরাহ চেইন তৈরি হয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে নীতিমালা হওয়ায় এখন আমদানিকারকরা এতে আগ্রহী হবেন। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য (গ্যাস) মকবুল ই এলাহী চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেরি হলেও কাজটি যুগান্তকারি হয়েছে। এখন গ্রাহকদের সচেতন হওয়া দরকার তাহলেই পকেট কাটা বন্ধ হয়ে যাবে। এই মিটারের দাম ৩০ থেকে ৫০ ডলারের বেশি হওয়ার কথা না, এই টাকা এক বছরেই উঠে আসবে।

   

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;

ডিজিটাল হুন্ডিতে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, নিয়ন্ত্রণ দুবাই বসে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ বিষয়টি জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসের মালিক নাসিম আহমেদ (৬২), এজেন্ট সিমের টেরিটোরি সেলস ম্যানেজার ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), জেট রোবোটিক অ্যাপসের বাংলাদেশের প্রতিনিধি জহির উদ্দিন (৩৭) ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পিয়াস (৩৪)।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচার করেছে একটি চক্র। অভিযান চালিয়ে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, গত কয়েক মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা অবৈধভাবে এসেছে বাংলাদেশে। ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে অ্যাপটির সন্ধান পায় পুলিশ।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বেসড ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ থেকে এ চক্রটির টাকা লেনদেন হতো। বুধবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচজনকে আটক করা হয়।

তিনি জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তারা বিকাশের এজেন্ট সিম ভাড়া নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে টাকা পৌঁছে দিতো বলে জানান তিনি।

সিআইডি প্রধান জানান, এ চক্রের হোতা মামুন দুবাইতে থাকেন। তিনি এখানকার এজেন্ট সিম ব্যবহার করছেন। দুবাই থেকে পাঠানো নির্দিষ্ট লিংক ধরে ৪৮টা সিমের বাইরে পাচারকাজে ব্যবহৃত এই অ্যাপটি কাজ করতে পারে না। সাতজন শুধু এই অ্যাপে ঢুকতে পারবে।

এটা হুন্ডি ব্যবসার আধুনিক রূপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে রেমিটেন্স আসা ব্লক করে দিয়ে এই অ্যাপের মাধ্যমে দেশে টাকা সার্কুলেট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এরকম আরও ৫-৭টি অর্গানাইজেশন পেয়েছেন যারা এভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, গত তিন মাসে ৪০০ কোটি টাকা বাংলাদেশে আসতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে। অভিনব কৌশলে এ অ্যাপস ব্যবহারকারী পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের ডিভাইসগুলো জব্দ করা হয়েছে।

তিনি জানান, চট্টগ্রামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রয়েছে এক হাজার ১০০ বিকাশ এজেন্ট সিম। এসব এজেন্ট সিমের যাদের পারফর্মেন্স ভালো না, সেসব এজেন্টের সিমগুলো ডিএসওরা নিয়ে জেট রোবোটিক অ্যাপস ব্যবহারকারীদের সরবরাহ করে।

;