৩য় ধাপে ৮৮ ইউপিতে ‘প্রার্থী উন্মুক্ত’ আওয়ামী লীগের
আসন্ন ৩য় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্যদের আবেদনর প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদে প্রার্থী উন্মুক্ত থাকছে আওয়ামী লীগের। শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর জেলা, গোপালগঞ্জ-২ আসনের ৭ টি ইউপি সহ প্রায় ৮৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর এক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলায় ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক। এই দুই জেলায় দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার অনুরোধ করে দলীয় সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে চিঠি দিয়েছেন ছয়জন সংসদ সদস্য।যার প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার ইউনিয়ন গুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকছে।
প্রার্থীতা উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে এই দুই জেলা থেকে আবেদন কারী এমপিরা হচ্ছেন- মাদারীপুর-১ আসনের নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, মাদারীপুর-২ আসনের শাজাহান খান, মাদারীপুর-৩ আসনের ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শরীয়তপুর-১ আসনের ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-২ আসনের এ কে এম এনামুল হক শামীম ও শরীয়তপুর-৩ আসনের নাহিম রাজ্জাক।
এর আগে গোপালগঞ্জ -২আসনের সংসদ সদস্য এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন কাশিয়ানী উপজেলাভুক্ত সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।এর ফলে সংশ্নিষ্ট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা থাকবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অ.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য রশিদুল আলম এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া, বাহাদুরপুর, কুনিয়া, পেয়ারপুর, কেন্দুয়া, মস্তফাপুর, দুধখালী, কালিকাপুর, ছিরারচর, পাঁচখোলা, ঝাউদি, খোয়াজপুর, রাস্তি, ধুরাইল, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া, কোদালপুর, আলাওপুর, সামন্তসার, গোসাইরহাট, নলমুড়ি এবং কুচাইপট্টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ প্রসঙ্গে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা জানান, তারা দলীয়ভাবে তৃণমূল পর্যায় থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠান। যাতে করে সেখান থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ জন দলীয় মনোনয়ন পান প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে। তবে তৃতীয় ধাপ থেকে দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় নৌকা প্রতীক থাকছে না ২৬টি ইউনিয়নে।
প্রার্থীতা উন্মুক্ত থাকার বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবিদুর রহমান খোকা শিকদার গণমাধ্যমকে জানান, তারা ইউপি নির্বাচনে তার জেলায় দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রে চিঠি পাঠান। শরীয়তপুর জেলার তিন এমপিসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে ওই চিঠি পাঠান। যার প্রেক্ষিতে আসন্ন তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে তার জেলার ৫৫ ইউনিয়নে হচ্ছে নৌকা প্রতিকে নির্বাচন। দলীয় প্রার্থিতা থাকছে উন্মুক্ত।
উল্লেখ, দশম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে সারা দেশে এক হাজার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১০টি পৌরসভায় ভোট হবে ২৮ নভেম্বর। ২ নভেম্বর এসব ইউনিয়ন ও পৌরসভায় মনোনয়নপত্র দাখিল হবে। বাছাইয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৪ নভেম্বর। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে সময় থাকবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত।