এসএমই মেলায় অংশ নিবে ৬০ শতাংশ নারী: শিল্পমন্ত্রী
আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে নবম জাতীয় এসএমই মেলা। এবার মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ নারী বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে মেলা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী এসএমই প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-উদ্যোক্তাগণ অনেক উন্নত মানের পণ্য উৎপাদন করলেও বিপণন প্রক্রিয়ার যথার্থ জ্ঞানের অভাবে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা অর্জনের জন্য বাজার সংযোগ ও সম্প্রসারণ জরুরি। বাংলাদেশি এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে সহায়তা প্রদানে বহুমুখী বাজার সুবিধা সম্প্রসারণের গুরুত্ব বিদ্যমান। এসএমইদের পণ্য বিপণনের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ফাউন্ডেশন পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা প্রদান করে। যার অংশ হিসেবে রূপে এসএমই ফাউন্ডেশন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা আয়োজন করছে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের বাস্তবায়ন। আর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত হচ্ছে আর্থসামাজিক উন্নতির অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মূল চালিকাশক্তি। এলাকাভিত্তিক কাঁচামাল ও শিল্প সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে আমরা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব এসএমই শিল্পখাত গড়ে তুলতে পারি। এর ফলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে শিল্প পণ্যের যোগান দেয়ার পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর ও শিল্প উৎপাদনে স্বাবলম্বি হবে। আর শিল্প উৎপাদনে এমন স্বনির্ভরতার স্বপ্নই দেখতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মন্ত্রী বলেন, মেলায় দেশে উৎপাদিত লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্য, আইটি পণ্য, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হারবাল/অর্গানিক পণ্য, হ্যান্ডিক্রাফট, ফ্যাশন ডিজাইন, জুয়েলারি আইটেমসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের স্বদেশী পণ্য প্রদর্শিত ও বিক্রয় হবে।
বরাবরের মতই এই মেলার বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে, কোনো বিদেশি পণ্য এ মেলায় প্রদর্শন কিংবা বিক্রয় করা হবে না। দেশীয় পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের পাশাপাশি এ মেলায় ক্রেতা এবং বিক্রেতা মিটিং বুথ, রক্তদান কর্মসূচি, মিডিয়া সেন্টারসহ অনলাইন পণ্য মার্কেটিং বিষয়ক স্টল থাকবে। এছাড়া সরকারি সংস্থা বিসিক, বিএসইসি, বিসিআইসি, বিটাক এবং বিএসটিআই-এর পাশাপাশি মেলা স্পন্সর ব্র্যাক ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের স্টল থাকবে।
তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত গত ৮টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫৬১ জন উদ্যোক্তা প্রায় ২১.৮৮ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় এবং প্রায় ৩৬.৫০ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ এবং ৮৬টি আঞ্চলিক (বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে) এসএমই পণ্য মেলায় ৩১৬২জন এসএমই উদ্যোক্তা পণ্য প্রদর্শন করে ২৩.৩৩ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় এবং ২১.১৪ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ করেন।
০৫ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম চলবে। মেলায় কোনো প্রবেশ মূল্য থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জনাব জাকিয়া সুলতানা, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং মেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক এনায়েত হোসেন চৌধুরীসহ ফাউন্ডেশনের পরিচালক পর্ষদের সদস্যবৃন্দ।