সরিষা ফুলের গন্ধে মুখরিত চলনবিল
চলনবিল এলাকা জুড়ে সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলে একাকার হয়ে গেছে। কৃষকরা আশা করছেন এবার বাম্পার ফলনের। এ কারণে কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। কৃষি অফিস সূত্র জানায় এ বছরে চলনবিলের অঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।
জানা যায়, এ বছর চলনবিলের অধ্যুষিত অঞ্চলের গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, ভাঙ্গুড়া উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদে তেমন কোনো পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। তাছাড়া সময়মত সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের কোনো প্রকার বেগ পেতে হচ্ছে না। পোকার আক্রমণ থেকে সরিষা রক্ষা করতে জেলা কৃষি অফিস থেকে আগেই বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলে জানান কৃষকরা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুনর রশিদ জানান, এবছর গুরুদাসপুর উপজেলায় ৩শত ৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, চলনবিলাঞ্চলে দ্রুত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার কারণে আগাম সরিষার চাষ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, একসময় চলনবিলের কৃষকরা শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও বুদ্ধির বিকাশ ঘটেছে। তারা বিগত দেড় যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, ভূট্টা, ও সরিষার আবাদে ঝুঁকেছে। গত কয়েক বছর ধরে বন্যার পানি কম ও দ্রুত মাঠ থেকে নেমে যাওয়ার ফলে সরিষার আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চোখে পড়ে সরিষা ফুলের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমন প্রিয় মানুষ। ছবি তুলতে ও ব্যস্ত ছোট থেকে সকল বয়সী ভ্রমন পিপাসুরা তাতে জমে উঠেছে চলনবিলের সরিষা ক্ষেত হলুদের সমারোহ।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুনর রশিদ জানান, এ বছর কৃষককে সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মতবিনিময় সভা ও উঠান বৈঠক করেছেন। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমন হলে কি করনীয় সে বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করেছেন। তাছাড়া কর্মকর্তারা সব সময় মাঠে থেকে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হতে পারে।