খুলনায় ২ লাখ ৯২ হাজার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল
খুলনায় ২ লাখ ৯২ হাজার সাতশত ৯৩ শিশুকে একটি করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা নগরীর স্কুল হেলথ ক্লিনিক সম্মেলনকক্ষে জেলা পর্যায়ের অবহিতকরণ ও কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক সভায় এসকল তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে খুলনা সিভিল সার্জন দপ্তরের আয়োজনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, আগামী ১১ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী অনুষ্ঠেয় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে খুলনা মহানগরী ও জেলার নয়টি উপজেলার ছয় থেকে ৫৯ মাস বয়সী দুই লাখ ৯২ হাজার সাতশত ৯৩ শিশুকে একটি করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইন চলাকালে ৬-১১ মাস বয়সী প্রত্যেক শিশুকে একটি নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রত্যেক শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইনে শিশুর জন্য মায়ের দুধের গুরুত্ব ও শিশুর ছয় মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে পরিমান মতো ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন করা হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় সিভিল সার্জন আরো বলেন, ভিটামিন এ ক্যাপসুল রাতকানাসহ শিশুর অনেক রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এটি শিশুর শরীরে কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। জাতীয়ভাবে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনার ফলে দেশে রাতকানা রোগের প্রকোপ বর্তমানে নেই বললেই চলে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ক্যাম্পেইন চলাকালে খুলনা মহানগরী ও জেলার নয়টি উপজেলার এক হাজার ছয়শত ৯০টি টিকাদান কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিবেচনা করে এই ক্যাম্পেইনে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সর্তকতা অনুসরণ করা হবে।
ভিটামিন ‘এ’ অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুকে রক্ষা করে, শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ভরাপেটে খাওয়ানো ভালো। এই ক্যাপসুল শিশুর জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এটি খাওয়ালে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হওয়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই। ভ্রমণে থাকাকালীন রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে অবস্থিত কেন্দ্র থেকে শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে। তবে ছয় মাসের কম অথবা পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশু, চার মাসের মধ্যে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে এমন শিশু এবং মারাত্মক অসুস্থ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক জয়ন্ত নাথ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সভায় জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আনোয়ারুল আজিম, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিশুর জন্য ভিটামিন ‘এ’ এর প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শারাফাত হোসাইন।