মিরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

কুষ্টিয়ার মিরপুর থানা পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ ৮ ডিসেম্বর। বাঙ্গালী ও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে বহুত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে জেলার মিরপুর থানা পাকহানাদার মুক্ত হয়েছিল।

সে থেকে এ দিনটি মিরপুর থানা পাকহানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. আফতাবউদ্দিন খাঁনের নেতৃত্বে শতাধিক মুক্তিকামী ছাত্রজনতা বর্তমান মিরপুর মাহমুদা চৌধুরী কলেজ রোড’ পোষ্ট অফিস সংলগ্ন মসজিদে শপথ গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

৩০ মার্চ শেষ রাতে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে প্রতিরোধ যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শুরু হলে পাকবাহিনী নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে যশোর সেনানিবাসের সাহায্য চায়। কিন্তু সেখান থেকে কোন সাহায্য না পাঠানোর সংকেত দিলে হানাদার বাহিনী রাতের অন্ধকারে তিনটি গাড়িতে করে গুলিবর্ষণ করতে করতে যশোর সেনানিবাসের দিকে পালিয়ে যায়।

এ সময় পাক সৈন্যদের ২টি গাড়ী ঝিনাইদহ জেলার গাড়াগঞ্জের কাছে রাস্তা কেটে তৈরী করা মুক্তি বাহিনী ফাঁদে পড়ে যায়। এবং ওই এলাকায় মুক্তি বাহিনীর হাতে নিহত হয়। পাক বাহিনীর অপর ৬ জন সদস্য ভোরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে মিরপুরের দিকে পালিয়ে আসতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

প্রথম তারা মশান বাজার সংলগ্ন মাঠের মধ্যে তীব্র প্রতিরোধের মধ্যে পড়ে। কিন্তু পাক সৈন্যদের গুলিতে মশানের ডা. আব্দুর রশিদ হিলম্যান, গোলাপ শেখ, আশরাফ আলী ও সোনাউল্লাহ শহীদ হন। মিরপুর থানার কামারপাড়ায় বিছিন্ন ৩ পাক হানাদারের সাথে স্থানীয় মুক্তি কামীদের আবার ও যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মিরপুর থানার সিপাহী মহিউদ্দিন শহীদ হন।

অপরপক্ষে পাকবাহিনীর ওই ৩ সদস্য ও নিহত হয়। উল্লেখ্য শহীদ সিপাহী মহিউদ্দিনের কবরের পাশে মিরপুর উপজেলার শহীদ স্মৃতি সৌধ নির্মিত হয়েছে।

৮ ডিসেম্বর ভোরে আফতাব উদ্দিন খান ১শ’ ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে তৎকালীন মিরপুর থানা কাউন্সিলের সুলতানপুর ক্যানেলের পাশে আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দারের বাগান বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে সকালে মিরপুর থানায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গান স্যালুটের মাধ্যমে উত্তোলন করেন।

এর পর ৬৫ জন পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ও রাজাকার পাহাড়পুর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে আত্মসমর্পন করে। মিরপুর হানাদার মুক্ত হওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিভিন্ন বয়সের হাজার ও নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। দিনটি উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও প্রশাসন কর্তৃক দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন।