তিন দিনেও নিখোঁজ ১০ জনের কেউ উদ্ধার হয়নি

ছবি: বার্তা ২৪.কম
নারায়ণগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনার তিনদিনেও নিখোঁজদের উদ্ধার করা যায়নি। পাওয়া যায়নি ডুবে যাওয়া ট্রলারটির সন্ধানও। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নিখোঁজের স্বজনরা।
গত বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ ঘাটে ধলেশ্বরী নদীতে এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রথমে ৮জন নিখোঁজ হলেও এখন নিখোঁজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নারী, শিশুসহ ১০ জনে।
খবর পেয়ে ওইদিন সকাল ৯টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ ও নৌবাহিনীর কোস্টগার্ড। টানা তিনদিনের চেষ্টাতেও ট্রলার কিংবা নিখোঁজ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনদিনে একজনেরও সন্ধান না মেলায় ক্ষুব্দ অপেক্ষমান স্বজনরা।
যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের যাত্রীদের মধ্যে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কিশোরগঞ্জের নিয়ামতপুর এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (২২), ফতুল্লার উত্তর গোপালনগর এলাকার রোকসত আলীর ছেলে মোতালেব (৪২), চরবক্তাবলীর রাজু সরকারের ছেলে সাব্বির (১৮), চরমধ্যনগর এলাকার একই পরিবারের সোহেল মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩০) এবং তার দুই মেয়ে তাসমিন আক্তার, তাসফিয়া আক্তার ও ছেলে তামিম (২), উত্তর গোপাল নগর মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল্লাহ এবং হকার শামসুদ্দিন (৬৫)।
নিখোঁজদের সন্ধানে নদীর দুই পাড়ে ভিড় করেন স্বজনরা। বারবার আহাজারি করে প্রিয় মানুষটিকে ফিরে পেতে চাচ্ছেন তারা। তারা অভিযোগ করেন উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাজ ঠিক মতো করছে না। ঠিকমতো করলে অনেক আগেই নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যেত। এত বিলম্ব হবে কেন?
এদিকে উদ্ধার কর্মীরা বলছেন একাধিক কারণে উদ্ধার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। দুই নদীর মহনা, নদীর গভীরতা, নদীর স্রোত, দুর্ঘটনার স্থান চিহ্নিত না হওয়ায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, তারা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। চেষ্টায় কোনো কমতি নেই। তবুও স্রোত ও দুই নদীর মোহনার কারণে সফলতার মুখ দেখতে পারছেন না। শনিবার আবারও উদ্ধারকাজ শুরু করবেন বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঘন কুয়াশার কারণে ধলেশ্বরী নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ৩টি ইউনিটের কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-পুলিশ, রেড ক্রিসেন্ট ও কোস্ট গার্ড।
এদিকে ট্রলারডুবির কারণ অনুসন্ধানে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। বিআইডব্লিউটিএ’র করা মামলায় এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসানসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামী রবিবার তাদের রিমান্ড শুনানি।