২০২১ সালে ৫৩৭১ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬২৮৪ জন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২১ সালে দেশে ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন। আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ . ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও বেপরোয়া গতি।

এ ছাড়া রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪৭ জন ও নৌ দুর্ঘটনায় ১৫৯ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

শনিবার (০৮ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতের মধ্যে নারী ৯২৭, শিশু ৭৩৪। ২০৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২১৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৫.২৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৫২৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৪.২৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৯৮ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০১৪টি (৩৮.৪৯%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৬৭০টি (৩১.০৯%) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৫৪টি (১৭.৭৬%) গ্রামীণ সড়কে, ৬৬৫টি (১২.৩৮%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬৮টি (১.২৬%) সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন:

দুর্ঘটনাসমূহের ১০৫৭টি (১৯.৬৭%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮১৩টি (৩৩.৭৫%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৫৬৬টি (২৯.১৫%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৮২২টি (১৫.৩০%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১৩টি (২.১০%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৩৪৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৫৪৫ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে। ৩৯৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৪৩ জন।

রেল ক্রসিং দুর্ঘটনা:

সারাদেশে ৮২ শতাংশ রেল ক্রসিং অরক্ষিত। এসব রেল ক্রসিংয়ে গত বছরে ৩৩টি দুর্ঘটনায় ৭৪ জন নিহত হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ, সেনাসদস্য, বিমান বাহিনী সদস্য, এপিবিএন সদস্য, র‌্যাব সদস্য, বিজিবি সদস্য, আনসার সদস্য, শিক্ষক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যাংক কর্মকর্তা, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী, ক্রিকেটার, শ্রমিক, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, প্রবাসী, রাজনৈতিক নেতা এবং দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১- এই তিন বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছাড়া অন্যান্য দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় সমান। খুব বেশি কম-বেশি হয়নি। মূলত ক্রমবর্ধমান মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির কারণেই ২০২০ এবং ২০২১ সালের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির মোট সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৬.১৪ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৫৪.৮১ শতাংশ। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৫০.৪৭ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৫১.৩৩ শতাংশ।

২০২১ সালের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বিশ্লেষণ:

২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ২০৭৮টি, নিহত হয়েছে ২২১৪ জন, আহত ১৩০৯ জন। নিহতের মধ্যে ৭৪.৩৯ শতাংশ ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার বিষয়টি প্রবল। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং অন্যদেরকে আক্রান্ত করছে।

দেশে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতায় মোটসাইকেল সংস্কৃতি চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব মোটসাইকেল চালক সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে। এদের বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারী নিহতের ঘটনাও বাড়ছে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি ব্যাপক অংশ ঘটছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ ও বাসের ধাক্কা, চাপা এবং মুখোমুখি সংঘর্ষে। এসব দ্রæত গতির যানবাহনের চালকদের অধিকাংশই অদক্ষ ও অসুস্থ। তাদের বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর ফলে যারা সাবধানে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তারাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে।

পথচারী নিহতের দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ:

২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫২৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে। রাস্তায় হাঁটার সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৩.৫১ শতাংশ এবং রাস্তা পারাপারের সময় ঘটেছে ৪৬.৪৮ শতাংশ। ৬১.৮০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে এবং ৩৮.১৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে পথচারীদের অসতর্কতার কারণে।

পথচারী নিহতের ঘটনা মহাসড়কে ৩০.৯০%, আঞ্চলিক সড়কে ২৩.৮৬%, গ্রামীণ সড়কে ২৯.৮৯%, শহরের সড়কে ১৪.৩২% এবং অন্যান্য স্থানে ঘটেছে ১%।

যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সড়কের সাইন-মার্কিং-জেব্রা ক্রসিং চালক এবং পথচারীদের না মানার প্রবণতা, যথাস্থানে সঠিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং ব্যবহার উপযোগী না থাকা, রাস্তায় হাঁটা ও পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা, চ্যাটিং করা এবং সড়ক ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণ ও সড়কের উপরে হাট-বাজার গড়ে উঠা ইত্যাদি কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।

   

মানিকগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় যুবক খুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজনের আঘাতে হাবিনুর রহমান (২২) নামের এক যুবক খুন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম নাওডুবি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক বাল্লা ইউনিয়নের মাচাইন গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে।

থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা বলেন, কয়েকমাস আগে মাচাইন মাজার শরীফের ওরশে বাস্তা ও নাওডুবি এলাকার কয়কজন যুবকর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে মাজার কমিটির লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেয়।

সেই একই বিরোধকে কেন্দ্র করে দুপুরে কয়েকজন যুবক হাবিনুরের উপর হামলা করে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ আলম জানান, হাবিনুর খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।

;

উপজেলা নির্বাচন

সিরাজগঞ্জে প্রচারণায় বাধা-মারপিটের অভিযোগ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

৮ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী অপর এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা ও কর্মী সমর্থকদের মারপিটের অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ ও কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম অপর প্রার্থী কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান সিরাজীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান সিরাজী ও তার বাহিনী প্রতিটি ইউনিয়নে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ গড়ে তুলেছেন। আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় নামলেই তাদেরকে মারপিট করছে। পোস্টার ও লিফলেট কেড়ে নিচ্ছেন এবং ছিঁড়ে ফেলছেন। সেইসঙ্গে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি প্রদান করছেন।

তারা জানান, ২৪ এপ্রিল প্রচারণা চালানোর সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে মারপিট করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী থানায় চারটি জিডি করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

৮ মে নির্বাচনের দিন খলিলুর রহমান প্রতিটি বুথে দুজন ক্যাডার রাখবেন। ভোটাররা চাপ বা টিপ দিয়ে ইভিএম ওপেন করে দিলে বুথের ভেতরে থাকা খলিলের কর্মীরা ভোট দিয়ে দেবেন বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকির কারণে ভোট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে এই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কোনো নির্দেশনাই খলিলুর রহমান সিরাজী মানছেন না। তিনি প্রভাব বিস্তার করে মানুষের ভোটের অধিকার হরণের চেষ্টা করছেন।

এ অবস্থায় সুষ্ঠু ভোট ও ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কাজিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উনারা ভোট পাবে না বলে ভোট প্রার্থনার জন্য ভোটারদের কাছে না গিয়ে শুধু অভিযোগ করে যাচ্ছেন’।

প্রসঙ্গত, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে এই কাজিপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় মোট ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

;

অবৈধ রেশন বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা নেতা খুন, নেপথ্যে আরসা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,কক্সবাজার
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রতিমাসে মাথাপিছু ১০ ডলার খাদ্য সহায়তা দেয় জাতিসংঘ। এই অর্থের বিনিময়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত ই ভাউচার আউটলেট থেকে চাল, ডাল, তেল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী রেশন হিসেবে রোহিঙ্গারা সংগ্রহ করে।

নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা মানুষগুলোর জীবনযাপনের অন্যতম এই অবলম্বন নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে অবৈধ রেশন বাণিজ্য।

প্রতিমাসের নির্ধারিত দিনে রেশন সংগ্রহে যাওয়া সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে এসব রেশন ক্রয় করে অবৈধ এই বাণিজ্যে জড়িত অসাধু রোহিঙ্গারা, কেউ দিতে না চাইলে তার উপর শুরু হয় নির্যাতন।

সাধারণ রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, কথিত সশস্ত্র সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) এর সাথে জড়িত। আরসার সমর্থক ও সদস্যরা নিজেদের তহবিল সংগ্রহের নামে এধরণের কর্মকাণ্ড চালায়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উখিয়ার ২ ডব্লিউ ক্যাম্প থেকে সৈয়দুল আমিন (৪৫) নামে এক রোহিঙ্গার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রোহিঙ্গাদের সূত্র বলছে, এই হত্যাকান্ডের কারণ অবৈধ রেশন বাণিজ্য।

নিহত সৈয়দুল আমিন (৪৫), ২ ডব্লিউ ক্যাম্পের এ-১১ ব্লকের আশরাফ আলীর পুত্র এবং তিনি ঐ ব্লকে মাঝির (রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা) দায়িত্ব পালন করতেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামীম হোসেন জানিয়েছেন, ২ ডব্লিউ ক্যাম্পের একটি মসজিদের সামনে পেয়ে সৈয়দুল আমিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান, রোহিঙ্গাদের মাঝে জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোটায় নেমে আসা, প্রতিপক্ষ আরএসওর প্রতিরোধসহ নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে আরসা।

মিয়ানমারের মংডু থেকে ২০১৭ সালে পালিয়ে আসার আগে থেকেই আরসার সাথে সখ্যতার কারণে সংগঠনটির হয়ে ২ ডব্লিউসহ কুতুপালংয়ের ৪টি ক্যাম্পে অবৈধ রেশন বাণিজ্য সামলানোর দায়িত্ব পান সৈয়দুল আমিন।

সম্প্রতি আরসার প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় সংগঠনটিকে নির্ধারিত চাঁদার অংশ দেয়া বন্ধ করে নিজের মতো ব্যবসা করছিলেন তিনি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে কৌশলে আরসার সদস্যরা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের।

২ ডব্লিউ ক্যাম্পের এ ব্লকে বাস করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান (অডিও সংরক্ষিত), " সৈয়দুল আমিন একসময় আরসা করতেন, আরসাকে প্রতিমাসে রেশন ব্যবসা থেকে মোটা অংকের টাকা দিতেন। শুনেছি আরসার নেতারা ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি তাদের কে টাকা দিতেন না, ফলে আরসা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলো।"

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী ব্লকের এক মাঝি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সৈয়দুল আমিন টাকা দেওয়া বন্ধ করায় ওই ক্যাম্পে নিজেদের পক্ষের লোকজনকে রেশন তোলার দায়িত্ব দেয় আরসা নেতা হালিম।

ঘটনার সময় রেশনের চাল নিয়ে হাতাহাতি হলে হালিমের লোকজন সৈয়দুল আমিনকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বরত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এপিবিএন) এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল (অতিরিক্ত ডিআইজি) এ প্রসঙ্গে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে। কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটলো সেই রহস্যও উদঘাটন করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এপিবিএনের তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

;

মানিকগঞ্জে হাসপাতাল থেকে নারীসহ দালাল চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জে সরকারি জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া চক্রের (দালাল) নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের ভেতরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ার পাঞ্জনখাড়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে পাপ্পু মিয়া (৩৫), একই উপজেলার পশ্চিম সেওতা এলাকার হযরত আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (৩৮), জাগীর শেঘশিমুল এলাকার মনির মিয়ার স্ত্রী শিলা আক্তার (২৫), সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম চর-তিল্লী এলাকার জহির আলীর মেয়ে বিউটি বেগম (৫০) ও ঘিওর উপজেলার হিজুলিয়া এলাকার মৃত মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪২)।

পুলিশ জানান, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ-সরল রোগী ও স্বজনদের ফুসলিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতেন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকদের কাছ থেকে কশিমন পেতেন দালাল চক্রের সদস্যরা।

জেলা হাসপাতালের ভেতর থেকে রোগী ধরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গত সোমবার জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনের সাথে দালাল চক্রের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়।

এর এক পর্যায়ে সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চলে যায় দালাল চক্রের ১০-১২জন সদস্য।

পরে এ ঘটনায় জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনে ১৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, মামলার পর মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে অভিযান চালিযে দালাল চক্রের নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

;