ওমিক্রন রোধে বেনাপোল বন্দরে সুরক্ষা জোরদার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল(যশোর)
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রনের সংক্রমণ  রোধে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থল বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বন্দর।  প্রথম দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ৪ মাস এপথে আমদানি, রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ্ হয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এতে এবার ব্যবসায়ীরা আগাম  সুরক্ষা জোরদারের দাবি জানালে বাড়ে বন্দরে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবে আরও নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।

সি অ্যান্ড এফ ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন জানান, বন্দরে করোনা সংক্রমণ রোধে শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মানার কথা থাকলেও অনেকে তা মানছে না। ভারতীয় ট্রাকে জীবাণু নাশক স্প্রে করা হলেও মাস্ক ছাড়া অনেক শ্রমিক ও  ভারতীয় ট্রাক চালক বন্দর এলাকায় চলাফেরা করছে। নিরাপত্তা কর্মীদের তদারকিও অনেকটা গা ছাড়া ভাব। এতে চালক ও  শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়ানোর ভয় বাড়ছে।

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনসহ কোভিড ১৯ আক্রান্তের হার  বেড়ে যাচ্ছে। এতে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। মাস্ক ছাড়া বন্দর ও ইমিগ্রেশন এলাকায় কোন ভাবে চলাচল করা যাবে না। বন্দর শ্রমিকরা যাতে যথাযথ ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানে সেদিকে নজরদারী বাড়াতে হবে। যদি সংক্রমণ বেড়ে যায় তবে ভারত ফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালুর সব প্রস্তুতি রাখা দরকার। কেউ স্বাস্থ্য বিধি না মানলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে বেনাপোল বন্দর,কাস্টমস,পুলিশ প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি ও আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় সুরক্ষা জোরদারে নির্দেশ দেওয়া  হয়েছে জানান তিনি।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি,রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে ভয়াবহতা রোধে স্কুল,কলেজ বন্ধ করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে জরুরী চিকিৎসা,ব্যবসা ও শিক্ষা গ্রহণের কাজে প্রতিদিন পাসপোর্ট যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত ও আমদানি,রফতানি বাণিজ্য চালু রয়েছে।  তাই এখানে সুরক্ষা আরও জোরদার করতে হবে। ভারতীয় ট্রাক চালক যেন অপ্রয়োজনে বন্দরের বাইরে না আসে এবং বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা ভারতে প্রবেশ কালে যেন শতভাগ সুরক্ষা মানে নিশ্চিত করতে হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতে করোনা আক্রান্তের অবস্থা আবারো ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা সন্তোষ জনক না।  সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লে আবারো বাণিজ্য বন্ধের শঙ্কা রয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার আজিম উদ্দিন  বলেন, ওমিক্রন রোধে ভারত ফেরত করোনার সন্দেহ ভাজন ৬৫ জন  যাত্রীদের শরীরের নমুনা নিয়ে র‍্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ ছিল। তবে তারা শরীরে ওমিক্রন বহন করছে কিনা তা পরীক্ষার পরে বোঝা যাবে। আক্রান্তরা যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক আব্দুল জলিলের দাবি  মাঝে করোনা রোধে বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা শিথিল থাকলেও এখন  ওমিক্রন রোধে তা জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ কালে জীবাণু নাশক স্প্রে করা হচ্ছে। মাস্ক বিতরণ ও সতর্কতায় প্রচার প্রচারণা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু জানান, ওমিক্রনের কারণে ভারত অংশে কড়াকড়িতে এপথে কমেছে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত।  টুরিস্ট ভিসা বন্ধ। মেডিকেল,বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় যাত্রী যাতায়াত করছে।  বর্তমানে  বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিনে ৫ থেকে ৬শ জনের মত ভারত ভ্রমণ করছে। ভারতীয়রা দেশে আসছে দিনে দেড়শ থেকে ২শ জন। ভারত ভ্রমণে প্রয়োজন হচ্ছে আরটিপিসিার থেকে পরীক্ষা করানো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ সনদ ও ভারতে থেকে ফিরতে লাগছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নেগেটিভ সনদ।

  

   

ঈদযাত্রার ৬ বছরে সড়কে ১৬৭৪ প্রাণহানি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গত ৬ বছরে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৪ ও আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৭৬৫ জন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংস্থাটি রাজধানীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য তুলে ধরেন।

২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৬ বছরে ঈদযাত্রায় মোট ৮৩ দিনের তথ্য তুলে ধরে মাহবুব উদ্দিন আহমেদ জানান, ২০১৯ সালে ঈদযাত্রার ১৪ দিনে ১৪৬টি দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১৯৪ জন ও আহত হয় ৪০২ জন। ২০২০ সালে ১২ দিনে ১২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৪৭ জন ও আহত ৩১৮ জন। ২০২১ সালে ১৪ দিনে ২৩৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩১৪ জন ও আহত ২৯১ জন। ২০২২ সালে ১৪ দিনে ২৮৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৬ জন ও আহত ১৮০০ জন। ২০২৩ সালে ১৪ দিনে ২৪০টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৮৫ জন ও আহত ৪৫৪ জন। ২০২৪ সালে ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ৩৫৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬২ জন ও আহত হয়েছেন ১৫০০ জনের বেশি।

চলতি বছরের তথ্য তুলে ধরে মাহবুব উদ্দিন আহমেদ জানান, এ বছর ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে (৪ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ১৫০০ জনের বেশি। যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যা ৪৯৩ জন। শুধু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই (পঙ্গু হাসপাতালে) ঈদের তিনদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪৫৪ জন, যার অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এই বাস্তবতায় ১৫ দিনে সারা দেশের হাসপাতালে আহত মানুষের সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি হবে।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহতের মধ্যে নারী ৬৩ জন, শিশু ৭৪ জন।এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৫৬ জন, যা মোট নিহতের ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫১ দশমিক ১১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয়েছেন ৬৮ জন, যা মোট নিহতের ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪১ জন, অর্থাৎ ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ।

একই সময়ে ৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৮ আহত হয়েছেন। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১০৪টি দুর্ঘটনায় ১১৩ জন নিহত এবং সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৩টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত।

এবার ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছরে ঈদুল ফিতরে ২৪০টি দুর্ঘটনায় ২৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ১৪টি দুর্ঘটনায় ২০ দশমিক ৩৫ জন নিহত হয়েছিল। এ বছরে ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ২৩ দশমিক ৮৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ দশমিক ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এই হিসেবে এবছর দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২০ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ।

৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

;

সমিতির লোকদের টাকা দিতে কাটা হবে রাস্তার পাশের ৩ হাজার গাছ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁধবাজার থেকে মাদুলিয়া পর্যন্ত রাস্তার পাশের তিন হাজার গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছে বন বিভাগ। গাছ কাটার জন্য গাছের গাঁয়ে নাম্বারিং করে দরপত্রও সম্পন্ন করেছে তারা। তবে, গাছ না কাটার দাবি তুলেছে স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশবীদরা।

জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর লাহিনীপাড়া থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত পাউবোর জিকে খাল ঘেঁষে প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। সড়কে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় সমিতির মাধ্যমে প্রায় ১০ বছর পূর্বে কয়েক হাজার ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করেছিল উপজেলা বনবিভাগ।

দরপত্রের মাধ্যমে ২০২৩ সালে যদুবয়রা থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কের আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার গাছ কাটা হয়েছে। চলতি বছরেও ওই সড়কের লাহিনীপাড়া থেকে বাঁধবাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটা হয়েছে।

সম্প্রতি বাঁধবাজার থেকে মাদুলিয়া পর্যন্ত আরও তিন কিলোমিটার সড়কের কয়েক হাজার গাছ কাটার জন্য গাছের গাঁয়ে নাম্বারিং করে দরপত্র সম্পন্ন করেছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গাছগুলো না কেটে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ, পরিবেশবীদ ও পথচারীরা।

সরেজমিন দেখা যায়, জিকে খালের লাহিনীপাড়া এলাকায় সড়কের ধারে আর সবুজের নয়নাভিরাম দৃশ্য আর নেই। কাটা গাছগুলোর গোঁড়া ও কিছু অংশবিশেষ পড়ে আছে। চাঁপড়া বোর্ড অফিস এলাকার খালের পাকা ও কাঁচা সড়কের দুপাশে মেহগনি, বাবলা, কড়ইসহ নানান জাতের কয়েক হাজার বড় বড় গাছ রয়েছে। সেগুলোর গাঁয়ে নাম্বারিং করা।

ভ্যানচালক আব্দুল হাকিম জানান, তিনি নিয়মিত ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি প্রায়ই সড়কে বসে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেন। গাছ গুলো কাটা হলে আর বসা হবেনা তার। তার ভাষ্য, গাছের কারণে মানুষ স্বস্তিতে সড়কে চলাচল করতে পারে। অনেকেই বিশ্রাম নেন।

কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র মোস্তাক শাহরিয়ার বলেন, তিন মাস আগেও সড়কের ধারে গাছগুলো ছিল চোখের সৌন্দর্য। বড় পুকুরের ওখানে ছায়াতলে মানুষ বিশ্রাম নিত। আরামে চলাচল করত পথচারীরা। এখন সেখানে ধূধূ মরুভূমি, তীব্র দাবদাহ। অল্প কিছু টাকার জন্য সরকার যেন আর গাছ না কাটে।

আলিমুজ্জামান রাজিব নামের আরেক ছাত্র বলেন, যেহেতু গাছগুলো আমাদের ছায়া দিচ্ছে। সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা করছে। সেহেতু গাছ গুলো না কাটায় ভালো। তর ভাষ্য, গাছপালা কমে যাওয়ার কারণেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে না, তীব্র তাপদাহ চলছে। তিনি গাছ না কাটার দাবি জানান।

কুমারখালী উপজেলা বনবিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আর্থ-সামাজিক ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৪ সাল থেকে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বনবিভাগ। তারা প্রথমে স্থানীয়দের নিয়ে এলাকাভিত্তিক সমিতি গঠন করে। পরে বিভিন্ন সড়কের ধারে জ্বালানি কাঠের গাছের চারা রোপণ করেন। গাছ দেখাশোনা করে সমিতির সদস্যরা। গাছের বয়স যখন ১০ বছর পূর্ণ হয়। তখন গাছ কাটা ও বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করে বনবিভাগ। গাছ বিক্রির ৫৫ ভাগ টাকা পায় সমিতির সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ পায় ৫ ভাগ। আর বনবিভাগ ও সড়ক সংশ্লিষ্ট বিভাগ পায় ২০ ভাগ করে টাকা।

জনগণের গাছ রক্ষার দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক মঞ্জু।

সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, ছায়া ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে গাছগুলো থাকা দরকার। তিনি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে কিছু গাছ ঝড়ে ভেঙে পড়লে মানুষের ঘর-বাড়ি ও দোকানপাটের ক্ষতি হবে। সেগুলো কাটার কথাও জানান তিনি।

পরিবেশ নিয়ে প্রায় ৪১ বছর ধরে গবেষণা করছেন গবেষক গৌতম কুমার রায়। তিনি জানান, ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী দেশে ২৫ ভাগ বনভূমি বা গাছপালা থাকা দরকার। কিন্তু সেই তুলনায় গাছ আছে মাত্র ৯ ভাগের কম। তবুও প্রতিদিনই গাছ উজাড় হচ্ছে। যে মুহূর্তে প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে। পানির মহা সংকট চলছে। মানুষ গরমে নাভিশ্বাস করছে। পাখিকুল আশ্রয় পাচ্ছেনা। সেই মুহূর্তে গাছগুলো কাটার ঘটনা সত্যি অদ্ভুত ও দুঃখজনক বটেই। তার ভাষ্য, আমরা উন্মাদ মৃত্যুর জাতি। যে উন্মাদ মৃত্যুর মাধ্যমে আমরা শুধু ধ্বংসকেই আনন্দের সাথে গ্রহণ করি। সৃষ্টিকে না।

উপজেলা বনবিভাগ কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, ১০ বছর পূর্ণ হলেই সমিতির নিয়ম অনুসারে গাছ কেটে পুনরায় নতুন চারা রোপণ করা হয়। ইতিমধ্যে ওই সড়কের ১৩ কিলোমিটার এলাকার গাছ কাটা হয়েছে। অন্যান্য গাছগুলো দরপত্রের মাধ্যমে কাটা হবে। তার ভাষ্য, গাছ রক্ষার কোনো সুযোগ নাই।

যেহেতু তাপদাহ চলছে, সেহেতু এই মুহূর্তে গাছগুলো থাকাই ভালো বলে মনে করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি জানান, বনবিভাগের সঙ্গে আলাপ করে বিধিমতে কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়া হবে

;

বৃষ্টির জন্য হাহাকার, দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের ওপর দিয়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলমান তাপদাহে চরম বিপর্যয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ, শিশুসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা। ডায়রিয়াসহ গরমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকেই। এতে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো।

এর মধ্যেই তীব্র গরমে পাবনা, বরগুনা, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, জামালপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হিট স্ট্রোকে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

চলমান তাপদাহ থেকে মুক্তির জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। সিলেট বাদে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ আর গরম থেকে মুক্তি ও বৃষ্টির জন্য সারাদেশে চলছে হাহাকার। এর মধ্যেই খোলা মাঠে রোদ আর প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদার করছেন মুসল্লিরা।


ফেনী:

তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে ফেনীতে বৃষ্টি কামনায় সালাতুল ইসতিসকার বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। নামাজ পড়ে মোনাজাতে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর নিকট বৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা মাঠে এ নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকার কয়েকশত মুসল্লি অংশ নেন। নামাজে আগত মুসল্লিরা বলেন, তীব্র খরতাপে সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে দিন পার করছে। গরমের তীব্রতায় ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। সেজন্য আল্লাহর রহমতের আশায় নামাজ আদায় করে বৃষ্টি প্রার্থনা করতে সকলে সমবেত হয়েছেন।


কুষ্টিয়া:

বৃষ্টির প্রত্যাশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন কুষ্টিয়ার মুসল্লিরা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ খেলার মাঠে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা হয়। বিশেষ দোয়াতে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেদের পাপের জন্য অনুতপ্ত ও ক্ষমা চেয়ে বৃষ্টির জন্য আহাজারি করেন মুসল্লিরা। এতে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

বাগেরহাট:

বাগেরহাটের মোংলায় তীব্র দাবদাহের সঙ্গে অসহনীয় রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মোংলার জনজীবন। তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদ গাহ মাঠে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্ম প্রাণ মুসলিমরা। মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে এবং পৌর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এ নামাজে সব শ্রেণি-পেশার অন্তত দুই হাজার মুসল্লি অংশ নেন।


নীলফামারী:

নীলফামারীতে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষায় বৃষ্টি চেয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। বিশেষ এ নামাজে এলাকাবাসীসহ অনেক মুসল্লি অংশ নেন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই নামাজের আয়োজন করে আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ।

এ নামাজে ইমামতি করেন নীলফামারী মুন্সিপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. আব্দুস সামাদ। সেখানে দুই রাকাত নামাজ শেষে নীলফামারীসহ সারাদেশে বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। মোনাজাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়।

ঢাকা:

তাপদাহ থেকে মুক্তি ও বৃষ্টি চেয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে ঢাকার আফতাবনগরে ইসতিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। দুই রাকাত নামাজ শেষে একটু বৃষ্টির জন্য হাত তোলেন মুসল্লিরা। এসময় সারাদেশে বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

;

বিসিএস পরীক্ষা উপলক্ষে আরএমপি’র নিষেধাজ্ঞা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন কর্তৃক আয়োজিত ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্ট পরীক্ষা রাজশাহী মহানগরীর ২৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এ পরীক্ষা  অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) বিশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আরএমপির এক আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

আদেশে পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহের চতুর্দিকে ২০০ (দুই শত) গজের মধ্যে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ, বিক্ষোভ প্রদর্শন, মাইকিং, বিস্ফোরকদ্রব্য ও অস্ত্রশস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো হলো- রাজশাহী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বরেন্দ্র কলেজ, শাহ্ মখদুম কলেজ, শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজ, অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু কলেজ, শহীদ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান সরকারী ডিগ্রী কলেজ, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কোর্ট কলেজ, মাদার বখশ্ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, ক্যান্টমেন্ট বোর্ড স্কুল এন্ড কলেজ, হাজী জমির উদ্দিন শাফিনা মহিলা কলেজ, কলেজিয়েট স্কুল, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী প্রমথনাথ (পি.এন) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গভ: ল্যাবরেটরী হাইস্কুল, শহীদ নজমুল হক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ মিশন একাডেমী, লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লক্ষিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কোর্ট একাডেমী এবং নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।

;