হোটেল রয়েল টিউলিপ-৪২০



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
টিউলিপ সি পার্ল বীচ রিসোর্ট এন্ড স্প্যা

টিউলিপ সি পার্ল বীচ রিসোর্ট এন্ড স্প্যা

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার থেকে ফিরে: আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল শার্টলে হোটেল রয়েল টিউলিপে যাবো। কক্সবাজার এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে বেশ আনন্দ নিয়ে কোস্টারে (ট্যুরিস্ট কোচে) উঠলাম। গাড়িতে ওঠার পর জানানো হলো চাকা পাংচার হয়েছে আরেকটি বাস আসছে তাতে করে যেতে হবে।

রোদে দীর্ঘক্ষণ পার্কিংয়ে থাকায় কোচটিতে তেষ্টানো দায়। গরমে সেদ্ধ হওয়ার জোগাড় এসি চালু করার অনুরোধও প্রত্যাখ্যাত হলো। পরের বাস না আসা পর্যন্ত গরমের মধ্যেই অপেক্ষা। টিমের দ্বিতীয় ফ্লাইটের যাত্রীদের ক্ষেত্রে ঘটল ভিন্ন রকম বিপত্তি। ২টি আসন ফাঁকা থাকায় বাসটি ছাড়া হচ্ছে না। বলা হলো পরবর্তী ফ্লাইট এলে যাত্রী পূর্ণ হবে তারপর ছাড়বে। এদিকে গরমে যাত্রীদের ত্রাহী অবস্থা এবারও এসি ছাড়বার আবেদন নিষ্ফল হলো। তাদের সাফ কথা দাঁড়ানো অবস্থায় এসি চালানো নিষেধ রয়েছে। বাড়তি দুই আসনের ভাড়া দিতে চেয়েও কাজ হলো না। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণ নিয়ে মনের মধ্যে যে চনমনে ভাব ছিল তা মলিন হতে শুরু করলো কক্সবাজার নেমেই।

পরে চাকা গড়তে শুরু করলে কিছুটা স্বস্তি ফেরে এসির শীতল হাওয়া ও মেরিন ড্রাইভের নৈসর্গিক দৃশ্যে। সবাই তখন উদগ্রীব কতক্ষণে হোটেলে ঢুকবেন ড্রেস চেঞ্জ করে সমুদ্রে জলকেলি করবেন। মাত্র দুই দিনের সফরের একটি মুহূর্তও কেউ মিস করতে চান না। হোটেলে প্রবেশ করে আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। ঘড়ির কাঁটা তিনটা ছুঁই ছুঁই করছে প্রথম টিমের সদস্যরাই রুম পাননি। রিসিপশনে কথা বলেও কোনো সমাধান মিলল না। কখন রুম পাওয়া যাবে জানতে চাইলে বললেন, রুম রেডি হয়নি রেডি হলেই পাবেন। কখন পাবেন বলা সম্ভব না। এখানে বলে রাখা ভালো রিসিপশনে থাকা স্টাফদের কথাবার্তা ও আচরণ মোটেই পাঁচ তারকার সঙ্গে যায় না।

প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম কাপে দেওয়া হচ্ছে ড্রিংকস

গ্রুপ ট্যুরের হওয়ায় পূর্বেই হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী দুপুর ২টার মধ্যে রুম দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।মৌখিকভাবে বলা হয়েছিল দুপুর ১২টার মধ্যে রুম দেওয়া হবে। সে কথা মনে করে দিলে জবাব এলো, রুম ফাঁকা না হলে আমাদের কিছুই করার নেই। অনেক প্রশ্নের এক উত্তর রুম রেডি হলেই পেয়ে যাবেন। টিমের সদস্য বাসসের সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ প্রশ্ন তুললেন আপনাদের তো ওয়েলকাম ড্রিংকস দেওয়ার কথা। রিসিপশন থেকে লবির দক্ষিণ পশ্চিম কোণে ছোট্ট কফিশপ দেখিয়ে বললেন ওখান থেকে দেওয়া হয়। তাকে প্রশ্ন করা হলো এই ড্রিংকস কি গেস্টদের খুঁজে নিতে হয়, না আপনারা নিজে থেকে পরিবেশন করেন। কোনো উত্তর দিলেন না। এবার সেই কফিশপে গেলেন শুক্কুর আলী শুভ, সেখান থেকে জানানো হলো লবিতে বসেন আমরা নিয়ে আসছি। আমাদের টিমের সদস্য ৯০ জন, আরও অনেকে তখন রুমের অপেক্ষায়। ৫টি কাঁচের কাপ ও ৭টি ওয়ানটাইম কাপে করে জুস নিয়ে হাজির হলেন। ঠিক যেমন কয়েক দশক আগে এবাড়ি ওবাড়ি থেকে প্লেট গ্লাস ধার করে এনে বিয়ে শাদী সারানো হতো। প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম কাপ নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করলেন। ছেলেটি জানালেন গ্লাস কমতো তাই ওয়ানটাইম কাপে করে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে রেস্টুরেন্টেও একই হাল পানি খাওয়ার জন্য কাচের গ্লাসের পাশে প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম কফি কাপ সাজানো।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলেছে ওয়েলকাম ড্রিংকসে কি ক্ষুধা মরে। বাধ্য হয়ে ব্যাগপোটলা নিয়ে দুপুরের খাবারে অংশ নিতে হলো। চলতে থাকল ভূড়িভোজ, এবার পিলে চমকানোর মতো অবস্থা, একজন অর্ধেক খাবার পর খাবারের মধ্যে মৃত মাছি আবিষ্কার করলেন। খাবার রেখে দ্রুত ছুটলেন বেসিনে। রেস্টুরেন্ট বয়কে দেখানো হলে খুব একটা অবাক হলেন বলে মনে হলো না, বললেন অনেক সময় মাছি উড়ে ঢুকে পড়ে। ছোট্ট করে বললেন সরি, কিন্তু সরিতে কি রুচি বাড়ে দুইবার বমি করে দুপুরে না খেয়ে উঠে পড়লেন তিনি।

পরদিন সকালের নাস্তায় বিজনেস ইনসাইডারের সাংবাদিক হাসান আজাদ আবিষ্কার করলেন খাবারের মধ্যে লম্বা চুল। এবারও বয়কে অবগত করা হলো, তিনি শুধু প্লেট বদলে দিয়ে দায় সারলেন। নাস্তা সেরে ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে গিয়ে আরেক দফায় বিড়ম্বনা। ট্যুরের চুক্তিতে ছিল প্রত্যেকে একদিন করে ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে আনলিমিটেড সময় উপভোগ করতে পারবেন। ডিউটি ম্যানেজারকে বলা হলো ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তিনি জানালেন সব বার্তা দেওয়া আছে আপনারা গেলেই উপভোগ করতে পারবেন।

ড্রিংকস দেওয়া জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে কফি কাপ ও কাচের গ্লাস

ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে গেলে বলা হলো আমাদের কাছে এমন কোনো বার্তা দেওয়া নেই। তখন চুক্তির কপি দেখালে বলেন, এমনটাতো দেওয়ার কথা না। কারণ ওয়াটার ওয়ার্ল্ড কমপ্লিমেন্টারি হয় না। কে চুক্তি করেছে আমাকে জানান তার বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করবো। আরও নানা রকম হম্বিতম্বি। চুক্তিতে তাদের পরিচালক (সেলস এন্ড মার্কেটিং) মাহমুদ রাসেলের স্বাক্ষর রয়েছে জানালে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে প্রবেশ করার সুযোগ দিলেন। এবার বললেন, রুম নম্বর বলতে হবে, এক রুমে দুটির বেশি রিস্টবেন্ড (এন্ট্রিপাস) দেওয়া সম্ভব না। তাকে জানানো হলো আমাদের রুম ৩৮টি আর ৮৮ পারসনের অনুমোদন রয়েছে। আপনি দিতে থাকেন, ৮৮ হয়ে গেলে আর দেবেন না। কাউন্টারে বসা স্টাফরা বললেন, এভাবে হবে না। হয় রুমের নামে দু’টি করে নিতে হবে, না হলে ৮৮টি দিয়ে দিচ্ছি আপনারা একজন দায়িত্ব নিয়ে বিতরণ করবেন, আবার ফেরার সময় গুণে বুঝিয়ে দেবেন। হারিয়ে গেলে প্রত্যেকটির জন্য ৩’শ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। ওয়ার্টার ওয়ার্ল্ডের ভেতরের কাহিনী লিখলে মহাকাব্য হয়ে যাবে। সেটি অন্য পর্বের জন্য রেখে দিলাম।

ওয়াটার ওয়ার্ল্ড থেকে একেকজন একেক সময়ে বের হওয়ার সময় রিস্টবেন্ড ফেরত দিতে চাইলে বলেন, এভাবে নিতে পারবো না। আপনারা ৮৮টি বুঝিয়ে দেবেন একবারে। বাধ্য হয়ে একজনের আনন্দ মাটি করে সারাদিন গেট পাহারা দিতে হলো রয়েল টিউলিপের গ্যাঁড়াকলে। মনে করেছিলাম এবার মনে হয় বিড়ম্বনার শেষ। পরদিন যেহেতু সকাল সকাল চেক আউট হতে হবে তাই বিল চাওয়া হলো। রাতে কম্পিউটারে প্রস্তুতকৃত একটি বিল দিলেন সিনিয়র ডিউটি ম্যানেজার সানাউল হক। তাকে বলা হলো পরদিন শার্টলের ভাড়া অগ্রিম নিয়ে নিতে। তিনি জানালেন, এটা আমাদের সিস্টেমে করা যাবে না। কালকে ব্যবহার করার পর আপডেট হবে। পিড়াপিড়ি করলে কম্পিউটার প্রিন্টের ওপর হাত দিয়ে লিখে দিলেন।

পরদিন সকালে বিল পরিশোধ করতে গেলে ডিউটি ম্যানেজার (নাইট ম্যানেজার) নাফিস মাহমুদ শাহরিয়ার নতুন করে বিল প্রিন্ট করলেন। তার দেওয়া বিলে টাকার অংকে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৮১৭ টাকা বেশি। রাতের বিলটি দেখালে বললেন আপনি ঘুরে আসেন আমি দেখছি কোথায় সমস্যা। দুপুরে যখন চেক আউট হতে যাচ্ছিলাম তখনও নাফিস মাহমুদ শাহরিয়ার বললেন ক্যাশ কাউন্টারে চলে যান সব ঠিক করে দিয়েছি। কাউন্টারে গেলে আবার কম্পিউটারে বিল প্রিন্ট করলেন ক্যাশিয়ার মনির। ওই কপিতে নানান ধরনের অসঙ্গতি। বিলের ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৪৯৯ টাকার একটি খরচ যোগ করে দেওয়া। তবে যোগফলে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৮১৭ টাকা বেশি। তিনি ওই টাকা জমা দিতে বললেন। বিলে ভুল এবং পূর্বের দু’টি বিল তাকে দেখালে শুরু হয় ভুল সংশোধনের পালা, এবার মনির ও নাফিস মাহমুদ শাহরিয়ার মিলে গলদঘর্ম হতে থাকলেন। তারা বলতে চাইলেন রাতের বিলটিতে ভুল ছিল আমরা যে বিলটি দিয়েছি এটাই প্রকৃত বিল। এটাই পরিশোধ করতে হবে।

এবার তাদের কাছে প্রত্যেকটি খাতের আলাদা বিল চাওয়া হলে ভুলটি বেরিয়ে আসে। দেখা যায় ভেতরে একটি বিল ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরো অংকটি যোগ করা হয়নি। এবার ভুলটি ধরা পড়লেও তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখা গেলো না। মনে হলো বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। পুরো হোটেলটিতে ফন্ট অফিস ম্যানেজার নাজিম, স্টাফ রাজ্জাক ও রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার আশিককে কিছুটা পেশাদার মনে হয়েছে কথা কাজে আচরণে। তারা সার্ভিস দিতে না পারলেও অন্তত বিনয়ের সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন। অন্যদের আচরণ কিংবা কথাবার্তা কোনটাই অন্ততপক্ষে পাঁচতারকার সঙ্গে যায় না। যেটা তারা দাবি করেন। খানিকটা ভাড়াটে গুন্ডার মতো বলা চলে দরাজ গলা, বেশি কথা বললেই বুঝি ঘাড় মটকে দেবে। রুম সার্ভিসকে পেতে ঘড়ি ধরে কয়েক ঘণ্টা সময় অপেক্ষা করতে হতে হয়েছে অনেককে। রুমের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বলাই বাহুল্য। বাথরুম যথাযথ না হলেও এ কথা ঠিক হোটেলটির রুমগুলোর পরিসর বেশ ভালো, প্রশস্ত লবি থাকলে দুই দিকে মাত্র একটি করে টয়লেট। একসঙ্গে একজনের বেশি ব্যবহার করার উপায় নেই।

সার্ভিস দুর্বল প্রশ্নে স্টাফদের কথা হচ্ছে আজকে (৭ জানুয়ারি) ৪২০টি রুমে গেস্ট রয়েছে তাই সার্ভিস দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। আর এই কথার সূত্র ধরেই একজনতো টিপ্পনি কেটে বললেন, সত্যিইতো তাই রয়েল টিউলিপ-৪২০ (ফোরটোয়েন্টি)। এখানে এরচেয়ে বেশি কি আশা করা ঠিক না। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে অবস্থিত হোটেলটি নাম রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা লিমিটেড হলেও রয়েল টিউলিপ নামেই সর্বাধিক পরিচিত। সেবার মান নিয়ে বরাবরই অভিযোগ রয়েছে। একবার গেলে দ্বিতীয়বার যেতে চাচ্ছে না গ্রাহকরা। সে কারণে বিশাল পরিসরের এই রিসোর্টটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানায় হওয়ায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কিংবা জেলা প্রশাসনও নাকি খুব একটা ঘাটাতে চান না। তাই তারা দিনদিন বেপরোয়া। আবার রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে দেশি বিদেশি এনজিও কর্মীদের অবস্থানের কারণে তাদের পোয়াবারো। ট্যুরিস্টদের সেবার প্রতি তাদের উদাসীনতা বড়ই দৃষ্টিকটু। সে কারণে অনেকেই মন্তব্য করলেন বিদেশি এনজিও কর্মীরা গেলে হোটেলটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেই পরিচালক (সেলস এন্ড মার্কেটিং) মাহমুদ রাসেল ফোন রিসিভ করেন নি।

   

কুষ্টিয়ায় বিল দখল করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিল দখল নিতে গিয়ে শাহেদ ইসলাম (২২) নামে জেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শাহেদ ইসলামকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শাহেদ ইসলাম কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সমর্থক ও শহরতলীর মোল্লা তেঘরিয়া এলাকার মহিবুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের জলমহাল (বিল বোয়ালিয়াবিল) দখলকে কেন্দ্র করে বোয়ালিয়া এলাকার বিলের বৈধ দাবীকৃত রাজিব ও মতিনের লোকজনের সঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সমর্থকদের গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় সাহেদ নামে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী। এসময় দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বোয়ালিয়া এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী রাজিব ও মতিন দীর্ঘদিন ধরে জলমহাল (বিল বোয়ালিয়াবিল) দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল। আমরা একটি মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা পেয়েছি। তাই আজ সকালে আমরা সেখানে গিয়ে আনন্দ উল্লাস করছিলাম। এ সময় হঠাৎ করেই রাজিব ও মতিনের লোকজন আমাদের লক্ষ্য করে অতর্কিত গোলাগুলি করলে শাহেদ ইসলাম নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে নিয়ে আমরা হাসপাতালে রয়েছি।

এ বিষয়ে রাজিব ও মতিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাদের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুতপা রায় বলেন, সাহেদ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এখন তিনি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি মারামারির খবর শুনে এলাকা পরিদর্শন করেছি। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে কিনা এটি আমার জানা নেই।

;

মসজিদের ফ্যানে ঝুলছিল খাদেমের মরদেহ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় দীঘিরপাড় শাহী জামে মসজিদের ভেতরে আকবর আলী শাহ (৬০) নামে এক খাদেম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আকবর আলী শাহের বাড়ি দীঘিরপাড় গ্রামে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে পুলিশ খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।

পাগলা থানার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ খায়রুল বাশার ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আকবর আলী শাহ দীর্ঘদিন যাবত পাঁচবাগ ইউনিয়নের দিঘীরপাড় শাহী জামে মসজিদে খাতেম হিসেবে কাজ করতেন। মসজিদে ভেতরে রাতযাপন করতেন তিনি। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন আকবর আলী শাহ। সকালে এলাকাবাসী মসজিদের ভেতরে ফ্যানে আকবর আলী শাহ লাশ ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পাগলা থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেন। দাম্পত্য জীবনে আকবর আলী শাহ ৫ সন্তানের জনক।

পাগলা থানার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ খায়রুল বাশার জানান, এখনও আত্মহত্যার কোনো কারণ জানা যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

;

সৌদিতে দুর্ঘটনায় আহত, কটিয়াদীতে এসে প্রবাসীর মৃত্যু



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪,কম,কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের এক সৌদি প্রবাসী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ভাগলপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত সাইফুল ইসলাম রতন (৫৫) জালালপুর ইউনিয়নের টুনিয়ারচর বিরামের বাড়ি মহল্লার বাসিন্দা।

একবছর আগে সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনাটায় আহত হয়ে কোমায় চলে যায় সাইফুল ইসলাম। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে গত রমজানে লোক-মারফত দেশে পাঠানো হয় তাকে। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সাইফুল ইসলামকে। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

;

নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর মহাপরিকল্পনা তৈরির দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে হওয়া ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি পাওয়ার মাস্টার প্ল‍্যান (আইইপিএমপি) ও সমন্বিত মহাপরিকল্পনা সংশোধন করে টেকসই ও জলবায়ুবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর মহাপরিকল্পনা তৈরির দাবি তুলেছে বাংলাদেশের শতাধীক জলবায়ু কর্মী। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করে তারা এই দাবি ও দাবির পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, 'আইইপিএমপিকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্বার্থ দেখতে হবে, অন্য কারো নয়। এবারের পরিকল্পনায় তিনটি নতুন প্রযুক্তি- হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া আর কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ প্রযুক্তিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি প্রসার বাড়লেও সৌর ও বায়ুর মতো পরীক্ষিত নবায়নযোগ্য প্রযুক্তির অংশ রাখা হয়েছে সামান্য। আমরা তরুণরা ভুয়া সমাধানগুলো প্রত্যাখ্যান করছি এবং জ্বালানি রূপান্তরনির্ভর মাস্টার প্ল্যান বানানোর পথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যে মহাপরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো অগ্রাধিকার পাবে এবং সকলের জন্য একটি ন্যায্য রূপান্তর নিশ্চিত করবে। 

এসময় তরুণ জলবায়ু কর্মীদের হাতে থাকা ব্যানার ফেস্টুনে জ্বালানি খাতের রূপান্তর, জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধন, নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা ও বিভিন্ন জ্বালানি নীতির সমন্বয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিপদ, জলবায়ু অর্থায়ন ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানান স্লোগান দেখা যায়।

সমবেত জলবায়ু কর্মীরা আইইপিএমপির ব্যয়বহুল ও ক্ষতিকারক বিষয়গুলোর ব্যাপারে আলোচনা করে দ্রুত সেগুলো সংশোধনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

নবায়নযোগ্য শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ও অন্যান্য জাতীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি আইইপিএমপি বানানোর তাগাদা দিয়ে তরুণ জলবায়ু কর্মীরা বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে, সংশোধিত আইইপিএমপিতে নবায়নযোগ্য শক্তি সংক্রান্ত জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্তি করে তা অর্জনে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

গ্লোবাল ফ্লাইমেট স্ট্রাইকের অংশ হিসেবে ১৯ এপ্রিল সারা বিশ্বেই বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আরও সোচ্চার হতে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে জলবায়ু কর্মীরা।

এছাড়া প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন জীবাশ্ম জ্বালানিতে আর বিনিযোগ না করে তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এসব তরুণ জলবায়ু কর্মীরা।

;