নানক পরিচয়ে সচিবের কাছে তদবির করতে গিয়ে ধরা বিএনপি নেতা!

ছবি: বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পরিচয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ফোন করে চাকরির সুপারিশ করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এক প্রতারক। গ্রেফতারকৃত প্রতারকের নাম তারেক সরকার।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন।
ডিসি ফারুক হোসেন জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পরিচয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেনকে ফোন করেন তারেক সরকার। নিজেকে নানক পরিচয় দিয়ে একটি চাকরির তদবির করেন। কিন্তু তার আচরণ সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্তার হোসেন। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগকে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তের মাধ্যমে তারা জানতে পারে তারেক একজন প্রতারক। সে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে ৩টি প্রতারণা মামলা রয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে সচিবকে ফোন করেন তারেক।
আরও জানান, রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর তারেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, সে নরসিংদী জেলা জাতীয়তাবাদী প্রচারদলের সদস্য সচিব। নিজেকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের পিএস বলে পরিচয় দেয়। সে ২০০৬ সালে কারারক্ষী পদে নিয়োগ পায় এবং ২০২০ সালে একজন সংসদ সদস্যকে আইজি প্রিজন্স পরিচয়ে ফোন করার অপরাধে চাকরি চলে যায়। চাকরি হারিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নাম ব্যবহার করে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে তদবির বাণিজ্যে করে আসছিল তারেক। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজ পত্রাদি (যেমন- এডমিট কার্ড, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ প্রতি আর্থিক লেনদেনের হিসাবসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
ফারুক হোসেন জানান, তারেকের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা রয়েছে। এছাড়া রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রয়েছে। এ মামলায় সে ৬ মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হয়।
বিএনপি নেতার পিএস পরিচয় ব্যবহার করার বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে যদি পিএস পরিচয়ের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে বিএনপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বিএনপি নেতা পরিচয় দিলেও তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তারেক কারারক্ষী চাকরি নেওয়ার সময়ে কোনো সুপারিশ ছিলো কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তারেকের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।