ঊষাপতির দেখা নেই, ঘন কুয়াশার চাদরে খুলনা
খুলনায় হঠাৎ জেঁকে বসেছে শীত। মাঘের শুরুতে চারিদিকে প্রকৃতি যেন ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রকৃতির নিয়মে সূর্যোদয় হলেও ঘন কুয়াশার আস্তরণে কাবু হয়ে পরেছে ঊষাপতি।
ভোরে খুলনায় তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন খুলনায় শীতের তীব্রতা কম থাকলেও কুয়াশা ও শীতের মাত্রা হঠাৎই বেড়েছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় শীত পোশাকের দোকানে ভিড় বেড়েছে। কুয়াশার আধিক্যের কারণে দূরপাল্লার পরিবহল চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ও বাস গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। বেশীরভাগ রোড ফাঁকা, দু'এক জন রাস্তায় বের হলেও শীতে জবুথবু অবস্থা তাদের। হেডলাইট জ্বালিয়ে গুটি কতক রিক্সা আর গাড়ি চলাচল করছে।
কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা নেমে এসেছে ২০ গজের মধ্যে। কাছের সবকিছুও যেনো ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। ঘন কুয়াশা আর হালকা উত্তরীয় বাতাসে ভোগান্তি বেড়েছে কর্মজীবীদের। তবে একটু উষ্ণতার দেখা পেতে নগরীর চায়ের দোকানগুলোতে ভীড় বেড়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে সকালে খুলনা রেলস্টেশন থেকে সঠিক সময়ে ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। তাছাড়া দূর্ঘটনা এড়াতে দূরপাল্লার বাসগুলো স্বল্প পরিসরে চলাচল করছে।
এদিকে শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খুলনা শিশু হাসপাতালে বেড়েছে শিশু রোগীর চাপ। শীতজনিত সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ অভিভাবকরা ভিড় করছেন হাসপাতাল পাড়ায়। শীতজনিত রোগে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে।
সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে দূর পাল্লার যাত্রী ইসহাক হোসেন বলেন, কুয়াশার আস্তরণের কারণে কাছের কিছু্ই দেখা যাচ্ছেনা। বরিশাল যাবার জন্য এসেছিলাম বাস স্ট্যান্ডে। কিন্তু কুয়াশার কারণে যাত্রী কম, তাই বাস চালকরা ঠিকঠাক মতো গাড়ি ছাড়তেছে না। এখন তো নিজেই ভয় পাচ্ছি। এই কুয়াশায় রওনা দেবো কিনা, রাস্তায় দুর্ঘটনার ভয় তো অবশ্যই আছে।
নগরীর জেলখানা ঘাটের ট্রলার চালক রহিম মুন্সি বলেন, ভোর থেকে যাত্রী কম তাই আমরাও সীমিত আকারে ট্রলারগ চালাইতেছি। নদীর মধ্যে এত কুয়াশা কিছুই দেখা যায় না। আমি ভোরে ট্রলার চালানো শুরু কইরা মাত্র তিনটা টিপ মারছি, এত সময় তো আমার ২০ টা টিপ মারার কথা।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনায় মাঘের শুরুতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় রাত থেকে কুয়াশা বেড়েছে।খুলনায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সম্ভাবনা আছে। নদী অববাহিকা হওয়ায় এ অঞ্চলে কুয়াশা ও শীতের তারতম্য খানিকটা বেশি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।