সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ। পাশাপাশি আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে এসব দাবি মেনে না নেয়া হলে সারাদেশে সমাবেশ ও মহাসমাবেশের মতো কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ কর্তৃক 'প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি ১০ম গ্রেড দ্রুত বাস্তবায়ন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির' দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি (আনিস-রবিউল) মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ।
তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি এবং এর পাশাপাশি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি কখনও সঠিকভাবে বিবেচিত হয়নি।
তিনি বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করার সুযোগ তৈরী করতে হবে। শিক্ষকদের সামাজিক, অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়। একজন সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল ১৩ তম গ্রেড, ১১ হাজার টাকা। সর্বসাকুল্যে একজন শিক্ষক বেতন পান ১৭ হাজার ৫৬০ টাকা। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সামান্য বেতনে জীবন চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সামান্য একটা চাওয়া বর্তমান সরকারের কাছে জানাতে চাই। সহকারী শিক্ষকদের ন্যূনতম ১০ম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে। ১০ম গ্রেড বেতন স্কেল অর্থাৎ ১৬ হাজার টাকা, সর্বসাকুল্যে বেতন হবে ২৪ হাজার ১০০ টাকা। সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় রেখেই আমরা এই সামান্য দাবিটা করছি।
এসময় তিনি তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো:
সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ করতে হবে; সহকারী শিক্ষক এন্ট্রি পদ ধরে শতভাগ পদোন্নতি দ্রুত চালু করতে হবে; সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল করতে হবে; টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করতে হবে এবং সহকারী শিক্ষকদের ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান করতে হবে; এবং বিদ্যালয়ের সময় সূচি ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।
এসব দাবি আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে মেনে না নেওয়া হলে সমাবেশ ও মহাসমাবেশের মতো কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেন তারা।
১০ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায় শিক্ষক সমাবেশ-
১০ জানুয়ারি ময়মনসিংহ বিভাগ; ১১ জানুয়ারি রংপুর বিভাগ; ২৪ জানুয়ারি সিলেট বিভাগ; ২৫ জানুয়ারি রাজশাহী বিভাগ; ১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিভাগ; ৭ ফেব্রুয়ারি বরিশাল বিভাগ, ৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগ। এছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সহকারী শিক্ষক মহাসমাবেশের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।