ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় ৮ সেনাসদস্যসহ আহত হয়েছেন ২৬। নিহতরা হলেন- মর্তুজা বেগম (৬০) ও তার নাতনি জান্নাত আক্তার (৩), মাহিন মিয়া (১৮), রিনা খাতুন (৫০), জোবায়ের ঢালী (৩২) ও সিন্নাতুর (১)।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, গফরগাঁও,মুক্তাগাছা এবং ত্রিশালে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

ভালুকাঃ ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নানী ও নাতনীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এসময় সেনাবাহিনীর গাড়ী উল্টে আহত হয়েছে আরো ৮ সেনাসদস্য। সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার মেহেরাবাড়ী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সকালে বৃদ্ধ নানি মর্তুজা বেগম (৬০) তার তিন বছর বয়সী নাতনী জান্নাতকে নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছিল। এ সময় ঢাকাগামী অজ্ঞাত বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। পরে মহাসড়কে মরদেহ দেখে একটি বাস থামলে, পেছন থেকে দ্রুত গতির সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি সাইড নিয়ে চলে যাওয়ার সময় খাদে পড়ে উল্টে যায়। এ সময় গাড়িতে থাকা সেনাবাহিনীর ৮ সদস্য আহত হয়। আহত সেনাসদস্যদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতদের বাড়ি গফরগাঁও উপজেলায়।


এদিকে ময়মনসিংহের ভালুকা - গফরগাঁও সড়‌কের রাংচাপড়া নামক স্থা‌নে আজ দুপ‌ুরে বা‌সের ধাক্বায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ফিসা‌রি‌জে প‌ড়ে যায়। এতে দুই শিশুবাচ্চাসহ গুরুতর ৫জন আহত হ‌য়ে‌ছে।

ভরাডোবা মডেল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন বলেন, সকালে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উল্টে যায়।

গফরগাঁও: ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় জোবায়ের ঢালী(৩০)নামে এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার পাঁচভাগ ইউনিয়নের খুরশীদ মহল ব্রীজে। নিহত জোবায়ের গফরগাঁও ইউনিয়নের হুমায়ুন ঢালীর ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব প্রবাসী জোবায়ের ঢালী ছুটিতে এক মাস পূর্বে বিয়ে করে। তার শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয়দের আপ্যায়নের জন্য বাজার করতে হোসেনপুর বাজারে যাওয়ার পথে খুরশীদ মহল ব্রীজ মোড় এলকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় প্রবাসী জোবায়ের ঢালী।


মুক্তগাছা: মুক্তাগাছা উপজেলার সকাল ৮টার দিকে পৌর শহরের বড়হিস্যা বাজার সুপার মার্কেটের সামনে ট্রাকচাপায় মাহিন মিয়া (১৮) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার মনিরামবাড়ি এলাকার জুলহাস মিয়ার ছেলে।

আরেক দূর্ঘটনায় মুক্তগাছা উপজেলার ময়মনসিংহ-জামালপুর মহাসড়কের পদুরবাড়ী এলাকায় জামালপুরগামী একটি ট্রাক সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে রিনা খাতুন (৫০) মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত হন সিএনজি চালকসহ ৩ জন।

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান বলেন, হতাহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ত্রিশাল: ত্রিশাল উপজেলার ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের কাজী শিমলা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সাথে ঢাকাগামী বাসের ধাক্কায় সিন্নাতুর নামে এক বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়, আহত হয় অন্তত ১০ জন। আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে গুরুতর আহত শিশুর মা অমি আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত সিন্নাতুর সদর উপজেলার সুতিয়াখালী এলাকার রুবেল মিয়ার মেয়ে।

   

সাভারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার ৮



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় তাদের কাছ থেকে চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। এর আগে দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের ব্যাংক কলোনীর সাভার মডেল মসজিদ সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জের মো. রতন (৩৫), টাঙ্গাইলের মো. রানা মিয়া (৪০), ময়মনসিংহের মো. মিলন (১৯), ঠাকুরগাঁওয়ের মো. মুরাদ (২৮), মুরাদের ভাই মো. আরিফুল ইসলাম (৩১), সাভারের ছোট বলিমেহের এলাকার মো. আব্দুল আলীম (৩৬), মানিকগঞ্জের মো. মানিক (৩৫) ও সাভারের বনপুকুর এলাকার মো. রনি (৩০)।

তাদের কাছ থেকে ৪টি চাপাতি, ১টি সুইচ গিয়ার, ১টি দা, ১টি লোহার পাইপ ও ১টি কাঠের স্ট্যাম্প উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেকেই ভাসমান ছিলেন। বাকিরা বাসা ভাড়া নিয়ে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করত।

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। তাদের তথ্য ঘেটে দেখা হচ্ছে, তদন্ত করে তাদের সাথে আর কেউ জড়িত পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

;

হালদায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ৪ জনকে কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হালদা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে চারজনকে আটক করে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই কারাদণ্ড দেন।

দণ্ডিতরা হল- আব্দুল জব্বার, মোহাম্মদ অলিউল্লাহ, মোহাম্মদ খোকন ও আব্দুল মতিন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. এয়াকুব জানান, সকালে আমাদের বাড়ির সামনে হালদা নদী থেকে কিছু মানুষ বালু উত্তোলন করছে। এ সময় আমিসহ স্থানীয় লোকজন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে এসব বালু উত্তোলন করছে বলে জানায়। এ সময় তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হলে আমরা বালু উত্তোলনকারী চারজনকে আটক করে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হয়।

স্থানীয় কাউন্সিলর মো. সোলাইমান জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নাজিরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মতিভান্ডারের পাশে হালদা নদী থেকে চারজন ব্যক্তি নৌকায় বালু উত্তোলন করছিল। এ সময় তাদের মতিগতি সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন তাদের বালু উত্তোলনের মেশিনসহ একটি নৌকা আটক করে আমাকে জানায়। পরে ফটিকছড়ি থানা পুলিশকে খবর দিই।

ফটিকছড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ও ওমরা খান জানান, জরুরি সেবায় ফোন পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকে আটক করি। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ১০ দিনের কারাদণ্ড দেয়। বালু উত্তোলনে ব্যবহার করা নৌকা মালিকের জিম্মায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিকভাবে বালু উত্তোলনের সময় চারজনকে আটক করা হয়। তাদের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

;

শিশু হাসপাতালে আগুন, পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতাল ভবনের ৫ম তলার কার্ডিয়াক আইসিইউতে লাগা আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আগুনের ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, আগুনের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে আছেন একজন মেইনটেন্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিবেন।

শিশু হাসপাতালে পরিচালক আরও বলেন, এখন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সেবা চালু করা। আমাদের নিজস্ব টেকনিক্যাল টিম, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার, ডিপিডিসি ও ফায়ার সার্ভিস চেক করে যদি সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে আমরা নিচ তলা থেকেই চালু করতে চাই। এভাবে ধীরে ধীরে আমরা সকল কিছু চালু করতে চাই। কাজ চালু হয়ে গেছে। তবে তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু এখন বলতে পারছি না।

গত মঙ্গলবারও শিশু হাসপাতালে আগুন লেগেছিলো। এ বিষয় তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে আগুনের বিষয়টি সেভাবে বড় কিছু না। খাবার গরম করার চুলায় রোগীর স্বজনের কাপড়ে আগুন লেগেছিলো। যা নার্সসহ স্টাফদের চেষ্টায় সঙ্গে সঙ্গে নিভানো হয়। আজকের যে আগুন সেটির বিষয় এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

আগুন যেনো না লাগে আপনাদের প্রস্তুতি ব্যর্থ হয়েছে কি না জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, হাসপাতালে দুই শতাধিক এসি রয়েছে। শীত শেষে গরম আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকটি এসি সার্ভিসিং করা হয়। সেদিনের আগুনের পরেই আমাদের নার্সরা ফায়ার এক্সট্রিং গুইশার দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। আজকের আগুনে ধোয়া বেশি হওয়ার কারণে কেউ যেতে পারে নি। যার কারণে আমাদের ফায়ার এক্সট্রিং গুইশার আছে সেটি ব্যবহার করতে পারিনি। যার কারণে ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে হয়েছে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিস চলে আসায় কোনো হতাহত হয়নি। সবাই নিরাপদে আছে।

;

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধে রাস্তায় নামলেন হাজারো মুসল্লি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। আবার রাজনীতির নামে কিশোর-তরুণদের দলে ভিড়িয়ে গড়া হচ্ছে কিশোর গ্যাং। সেই গ্যাংয়ের হাতে কিছুদিন আগেই মারা গেছেন এক চিকিৎসক। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যেও নিয়মিত মারামারির ঘটনাও ঘটছে। দিনের পর দিন এসব চলে আসলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছিলেন না এলাকাবাসী। এবার তাই তারা রাস্তায় নেমে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত থামানোর দাবি জানালেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আবদুর পাড়া আদর্শ সমাজ ও শাপলা শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির ডাকে এ-ব্লক বাস স্ট্যান্ড মোড়ের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। এতে আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের হাজারো মুসল্লি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মাদক সন্ত্রাস বন্ধ ও এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে একটি গণমিছিল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে মাদক সেবন চলছে এলাকায়। তার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবত এই এলাকাটিতে চিহ্নিত কয়েকটি পরিবারের নারী, পুরুষ, যুবক যুবতি প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও কেউ তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয় আবদুরপাড়া সমাজের মুরুব্বি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন সওদাগর বলেন, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আমাদের আবদুর পাড়া এলাকায় দুপুর ২টার সময় আনা খাতুন নামের এক মধ্যবয়সী নারীকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় এলাকাবাসী। বিষয়টি পাহাড়তলী থানাকে অবহিত করা হলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ঐ মহিলাকে মাদকসহ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এলাকাটিতে মাদক বিক্রেতা এবং কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। অসংখ্যবার জানানোর পরেও যারা এটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাই রাস্তায় নেমেছে আজকে।

আবদুর পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার মসজিদের খুৎবায়, এলাকার মিটিং সিটিং এ আমরা মাদক সন্ত্রাস, অসামাজিক কার্যকলাপ এবং সবচাইতে বেশি যেটা আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে সেটা হচ্ছে কিশোর গ্যাং। তাদের অত্যাচারে এবং এসব অপকর্মে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারছে না। উঠতি কিশোর-তরুণদের বাধ্য করে কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হতে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামেও এখানে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদও করেও কিছু হচ্ছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই এলাকাবাসী আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। সন্ধ্যায় পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা আমাদের সমাজের সঙ্গে বসবেন। উনাদেরও আমরা আমাদের এলাকার বিষয়গুলো বলব।

মানববন্ধনে সাংবাদিক মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আব্দুরপাড়া ও শাপলা এলাকায় যেভাবে কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা বাড়ছে এবং যে হারে মাদক ব্যবসা, সেবন ও পতিতা ব্যবসা বেড়েছে-এতে উঠতি শিশু-কিশোর ও যুব-তরুণরা বেশ ঝুঁকিতে আছে। কিছুদিন আগে আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক চিকিৎসককে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই না এই ধরণের ঘটনা আর ঘটুক। যারাই এসবের সঙ্গে জড়িত, তারা যত বড় প্রভাবশালীই হোক এদের আইনের আওতায় আনা ও যেভাবেই সম্ভব তাদের অপরাধকাণ্ড থেকে সরিয়ে আনতে প্রশাসনকেই মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে।

দক্ষিণ কাট্টলীর স্পৃহা ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মো. জমির আলম বলেন, এখানকার যুব সমাজ প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করছে না বলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদের মনোভাব সব সময় রাখেন তাহলে অচিরেই মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে।

মানববন্ধনে শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও যুব সমাজ প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সমাজের সবাই একতাবদ্ধ থাকলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুরুব্বিদের এবং এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের যদি নিরপেক্ষভাবে আমাদের পাশে পাই, তাহলে আমরাই এসব বন্ধ করতে পারব।

স্থানীয় মসজিদের মুসল্লি সরোয়ার জাহান মুকুল বলেন, আমরা পুলিশকে তথ্য দেই। কিন্তু অপরাধীরা তথ্যদাতার তথ্য জেনে যায়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। কয়েকদিন আগে বাইরে থেকে কিশোরদের এনে আমাদের এলাকার এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে গেছে। এভাবেতো চলতে পারে না। ৯৯৯ নম্বরে কল করলেও অপরাধীরা কলদাতার তথ্য পেয়ে যায়। উদাহরণ আকবরশাহ এলাকাটি। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার কারণে সন্তান ও পিতার ওপর হামলা হয়েছে। পিতা মারা গেছেন। অথচ চিহ্নিতরা, অভিযুক্তরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। আমি আজকের এই মানববন্ধনের কথা শুনে নিজ থেকেই এসেছি প্রতিবাদ করতে। সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

;