রাজবাড়ীতে ৪০ বছরের বিরোধপূর্ণ জমির মিমাংসা
প্রায় ৪০ বছর ধরে ৭০ শতাংশ বাড়ির জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে চলছিল বিরোধ। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান এই বিরোধপূর্ণ জমির সীমানা নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা আশ্রয় নেন আদালতের। একের পর এক উভয়েই পাল্টাপাল্টি মামলা করেন জমির দাবিদার হিসেবে। বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে বিচারাধীন। এরই মাঝে এলাকার শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেন ইউপি চেয়ারম্যান। আর প্রথম উদ্যোগেই সফল হোন তিনি। দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান করায় উক্ত জমির দুজন দাবিদারই সন্তুষ্ট। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন চেয়ারম্যান।
ঘটনাটি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের জামসাপুর গ্রামের। নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার মো. জহুরুল ইসলামের উদ্যোগে গ্রাম্য সালিসে বিরোধপূর্ণ জমির সীমানা নির্ধারণ হওয়ার পর সেই জমির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।
নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জামসাপুর মৌজার ২০ নং খতিয়ানের ১৫৯ নং দাগের ৭০ শতাংশ জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জামসাপুর গ্রামের ইউসুফ হোসেন ও রব মন্ডলের মধ্যে প্রায় ৪০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই জমি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বারবার সালিস বসলেও মিমাংসা করতে ব্যর্থ হয় সালিসদাররা। এক পর্যায়ে বিষয়টির সমাধানের জন্য গড়ায় আদালতে। একে অপরের বিরুদ্ধে মামলাও করে। যা এখনো চলমান।
বিষয়টি নারুয়া ইউনিয়নের নবাগত চেয়ারম্যান মো. জহুরুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি ১৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) মিমাংসার লক্ষ্যে ঘটনাস্থলে একটি সালিসের ব্যবস্থা করেন। তিনি প্রথম সালিসেই সফল হোন। পরে ওই জমির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমও সম্পন্ন করান তিনি।
বিরোধপূর্ণ ওই জমির দুজন দাবিদার ইউসুফ হোসেন ও রব মন্ডল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এই জমি নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। অনেক টাকাও আমাদের নষ্ট হয়েছে। চেয়ারম্যান নিজে উদ্যোগ নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের একটা ঝামেলা মিটায়ে দিয়েছেন। আমরা খুবই খুশি হয়েছি। আমরা এখন মামলাগুলো তুলে নিব।
জামসাপুর গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি এই জমি নিয়ে অনেক ঝামেলা ও মারামারি পর্যন্ত হয়েছে। চেয়ারম্যান ক্ষমতা পাওয়ার পরই যেভাবে ঝামেলাটা মিটায়ে দিল তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এই ৭০ শতাংশ জমি নিয়ে এলাকাতে বেশ কয়েকবার গন্ডগোল বেঁধেছে। আমি নিজ উদ্যোগেই মিমাংসার জন্য প্রস্তাব দেই উভয় পক্ষকে। আমার প্রস্তাবে তারা সাড়া দিলে আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে দলিলপত্র দেখে ঝামেলাটা মিটিয়ে দেই। বাদী-বিবাদী উভয়ই খুশি মনে মেনে নিয়ে যার যার নামে রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছে। আমি আমার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই কাজটি করেছি।