দিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক অনুষ্ঠিত
ভারত সফররত পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৃহস্পতিবার ( ২৪ জানুয়ারি) নয়াদিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা পারস্পরিক স্বার্থের বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দুই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর মধ্যে ক্রমাগত ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের গতি ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যস্ততার ওপর জোর দিয়েছেন।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র সচিব দুই দিনের সফরে ভারত গেছেন । চেন্নাইয়ে নতুন খোলা বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন পরিদর্শন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন তিনি। সেখান থেকে তিনি আজ দিল্লি পৌঁছান।
তার এই সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে আলোচনা। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সাথে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনে শেখ হাসিনার চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি সফরের কথা রয়েছে। গত বছরের মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে আসেন। তখন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উল্লেখ করেন ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তির দ্রুত সমাপ্তির অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধানে ভারতের সহযোগিতা চান পররাষ্ট্র সচিব । তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে দ্রুত, নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা রাষ্ট্রদূত মাসুদকে নয়াদিল্লিতে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত আলাপচারিতার ওপর জোর দেন। তিনি জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একে অপরকে সমর্থন করার জন্য একসাথে কাজ করার জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশে ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের অধীনে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নে ভারত সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে স্বাধীনতা সড়ক সম্পূর্ণ করতে এবং ৮ নাম্বার থিয়েটার রোডের ঐতিহাসিক ভবনটি হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ করেন, যা ১৯৭১ সালে প্রথম বাংলাদেশ সরকারের সদর দফতর হিসেবে কাজ করেছিল। উভয় পররাষ্ট্র সচিবই কোভিড পরিস্থিতি সন্তোষজনকভাবে উন্নতি হওয়ায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার ওপর জোর দেন। তারা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে স্থগিত বিভিন্ন শহরের মধ্যে বাস ও রেল পরিষেবা চালু করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
উভয় পররাষ্ট্র সচিব আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সমসাময়িক বৈশ্বিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।