যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র সচিব

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সমালোচকরা আসলে দেশের জনগণের সামর্থ্য জানে না, বরং তারা জাতির সামর্থ্যকে সবসময় অবমূল্যায়ন করে।
তিনি বলেন,‘আমাদের সমালোচনাকারিরা দেশের মানুষের শক্তি, সাহস ও ক্ষমতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। নইলে তারা বার বার বাধা দেবে কেন? তারা আসলে জাতি হিসেবে আমাদের সক্ষমতাকে সবসময় অবমূল্যায়ন করে। হেয় প্রতিপন্ন করে। সবসময় যেন অন্যের কাছে হাত পেতে চলার মানসিকতায় ভোগে।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ ও ২০২২ সালের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন। এদিন সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিয়ে এখানে কতগুলো প্রশ্ন এসেছে, বিরোধী দলের সদস্যরা অনেক কথাই বলেছেন। প্রথম প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার কোটি ধরা হলেও পরবর্তীতে ৩০ হাজার কোটি লাগার কার্যকরণ বিশ্লেষণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতু নির্মাণে তাঁর সরকারের বহুদিনের প্রচেষ্টা ছিল, যার ভিত্তিপ্রস্তরও তিনি ২০০১ সালে স্থাপন করে যান। যদিও পরবর্তী বিএনপি সরকার সেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। আর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি ব্যয় প্রাক্কলন করে (১০ হাজার কোটি টাকা) যার কোন বাস্তব ভিত্তি যেমন ছিলনা তেমনি এরপর বহু যোজন বিয়োজন হয় প্রকল্পে।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আবারও রাষ্ট্র্রচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ২২ দিনের মাথায় পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘মনসেল এইকম’কে নিয়োগ দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় রেল সুবিধা যুক্ত করে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নের নির্দেশ প্রধান করেন তিনি। শুরুতে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল ৫ দশমিক পাঁচ-আট কিলোমিটার। পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার হয়। প্রথম ডিপিপিতে সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে তিনটির নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা রেখে নকশা করা হয়েছিল। পরে ৩৭টি স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের সুযোগ রাখার বিষয়টি যুক্ত করা হয়।
সংশোধিত ডিপিপিতে বেশি ভার বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন রেল সংযোগ যুক্ত করা হয়। কংক্রিটের বদলে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামো যুক্ত হয়। সেতু নির্মাণে পাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও বাড়তি গভীরতা ধরা হয়। বাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ব্যয়ও।
সেতু নির্মাণকালিন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সে সময়কার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক প্রতিশ্রুত অর্থ প্রত্যাহার করে নিলে অন্য উন্নয়ন সহযোগীরাও তখন সরে দাঁড়ায়। যদিও পরবর্তীতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ কানাডার একটি আদালতে মিথ্যা বলেই প্রমাণিত হয়। আর নিজস্ব অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
সে সময় দেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তির বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমি জানি তখন আমাদের দেশের অনেক বিশেষজ্ঞ, অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারি এমনকি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভেবেছিলেন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা ছাড়া এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হবেনা, যে কথাটি আমাকে বার বার শুনতে হয়েছে। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে সেতু করতে পারলে তবেই করবো, কারো কাছে হাত পেতে করবো না এবং বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াবে ও নিজেই করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতু নির্মাণ করতে গেলে দেশিয় রিজার্ভের ওপর চাপ আশার যে আশংকা ছিল সেখানে তাঁর একটা হিসেবে ছিল যে সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর সময় লাগতে পারে এবং সে সময়ে বছরে ৫০ মিলিয়ন ডলার করে যদি ব্যয় করা যায় তাহলে রিজার্ভে কোন চাপ পড়বে না।
নিজস্ব অর্থায়ণে তাঁর সেতু নির্মাণের ঘোষণায় দেশের জনগণের স্বতস্ফূর্ত ভাবে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসার কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কানাডার কোর্ট যখন বলে দিল পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি হয়নি তখন মানুষের মাঝে একটা অন্যরকম চেতনা আসলো। আর সেটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আর এক্ষেত্রে আমাদের পিছিয়ে যাওয়ার কোন পথ ছিলনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু কেবল দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রেই নয়, বাংলাদেশ যাতে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে তার স্বর্ণদুয়ারও উন্মোচন করেছে।
কোরবানির হাটে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) তথ্য বিবরণীতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কোরবানির হাটে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
১ জুলাই বিআরটিসির ঈদযাত্রার টিকেট
ঈদুল আহজা উপলক্ষে ঈদযাত্রায় 'ঈদ স্পেশাল সার্ভিস' চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)।বিআরটিসির বিভিন্ন ডিপোতে আগামী ১ জুলাই থেকে ঈদযাত্রার টিকিট পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিআরটিসি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঈদ উপলক্ষে আগামী ৪ জুলাই থেকে বিশেষ সার্ভিস চলবে। ঈদের পর ১২ জুলাই পর্যন্ত সেবা চালু থাকবে। ঢাকার মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, কল্যাণপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ি, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো থেকে ঈদের আগাম টিকেট পাওয়া যাবে।
মতিঝিল বাস ডিপো থেকে খুলনা, দাউদকান্দি, দিনাজপুর, রংপুর ও নেত্রকোণা রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।
কল্যাণপুর বাস ডিপো থেকে মিলবে রংপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, নওগাঁ, নেত্রকোনা, রানিশংকৈল, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর রুটের টকেট পাওয়া যাবে।
গাবতলী ডিপো থেকে আরিচা, রংপুর, দিনাজপুর, আরিচা ও পাটুরিয়া, যশোর রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।
জোয়ারসাহারা বাস ডিপো থেকে পয়সারহাট, বিশ্বরোড-পাঁচদোনা, রংপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও বগুড়া রুটের টিকেট পাওয়া যবে।
মিরপুর বাস ডিপো থেকে বরিশাল, রংপুর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও নওগাঁ রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।
মোহাম্মদপুর বাস ডিপো থেকে শরিয়তপুর ফরিদপুর, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া ও নওগাঁ রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।গাজীপুর বাস ডিপো থেকে বিশ্বরোড-পাঁচদোনা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও কুড়িগ্রাম রুটের টিকেট পাওয়া যাবে। যাত্রাবাড়ি বাস ডিপো থেকে ঢাকা-রংপুর, শরিয়তপুর, রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।
নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো থেকে ঢাকা-গোসাইরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, নওগাঁ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও পাবনা রুটের টিকেট পাওয়া যাবে। কুমিল্লা বাস ডিপো থেকে ঢাকা-রংপুর রুটের টিকেট পাওয়া যাবে। নরসিংদী বাস ডিপো থেকে নরসিংদী-মাদারিপুর, চরমুগুরিয়া, রংপুর রুটের টিকেট পাওয়া যাবে।
বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধ
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) দ্বিতল বাস চালুর একদিন পর নোয়াখালীর সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কে বন্ধ হয়ে গেছে বাস সার্ভিসটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) পরিবহন মালিক সংগঠনের বাধার মুখে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) দ্বিতল বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এর আগে, গতকাল বুধবার ওই সড়কে এ বাস সার্ভিস চালু করা হয়।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে। বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে, বিআরটিসির বাস বন্ধের প্রতিবাদে শুক্রবার (১ জুলাই) বেলা ১১টায় সুবর্ণচর উপজেলার হারিছ চৌধুরীর বাজার প্রধান সড়কে অবরোধের ডাক দিয়েছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে এই সড়কে মালিক সমিতির কোনো বাস চলতে দেবেন না স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর চেয়ারম্যানঘাট টু সোনাপুর সড়কে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল বুধবার বিআরটিসির দ্বিতল সার্ভিসটির উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
সোনাপুর শহর এলাকা থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এক ঘণ্টা পরপর বাস ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যানঘাট ভাড়া ধরা হয়েছে ৪০ টাকা,সোনাপুর থেকে আটকপালিয়ার বাজার ২০ টাকা।