সাগরে মাছ শিকার বন্ধ
মার্চ-এপ্রিল ২ মাস দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার পর আজ ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত আবার ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।
ইলিশ শিকারে উপর্যুপরি এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় ভোলার জেলেদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
একদিকে নদীতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না অন্যদিকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তারা নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি নয় বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য কারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
ইলিশসহ দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভোলা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালীসহ দেশের ৬টি অভয়াশ্রমে মার্চ-এপ্রিল ২ মাস মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছিলো।
৩০ এপ্রিল সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার পর আজ ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত আবারও ৬৫ দিনের জন্য সাগরে সকল মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের রক্ষণাবেক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যেই সরকারের এই পদক্ষেপ।
কিন্তু ভোলার জেলেদের দাবি, ইলিশ নদীতেও থাকে, সাগরেও থাকে। নদী বা সাগর যেখানের ইলিশই হোক না কেন সেগুলো এখন শিকার উপযোগী। দু’মাস বন্ধ থাকার পর তারা এখন নদী বা সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করবে- এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সামুদ্রিক মাছ রক্ষার নামে জেলেদেরকে ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখার অর্থই হচ্ছে
তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার নামে পাথর চাপিয়ে দেয়া। একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় তাদের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হওয়ায় এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি নন ভোলার জেলেরা।
জেলে মো. ফরিদ মাঝি বলেন, কিছুদিন পরপরই সরকার অভিযান দেয়। কয়েকদিন আগে দুই মাসের অভিযান শেষ হয়েছে। এখন আবার ৬৫ দিনের অভিযান। এরকম অভিযান দিলে আমাদের সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয়। এজন্য আমরা এখন এই অভিযান চাই না।
মো. শামসুদ্দিন ফরাজী বলেন, সরকার কিছুদিন পরপর অভিযান দেয় আমরা সেই অভিযান মানি কিন্তু আমাদের জন্য সরকার তো কিছুই করে না। আমাদেরকে সরকার যে চাল দেয়, সে চাল আমরা পাই না। আমাদের অনেক দেনা আছে, সমিতির ঋণের কিস্তি দিতে হয়। তাহলে এরকম কিছুদিন পরপর অভিযান হলে, আমরা কিভাবে তা মানবো।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য বিভাগের কিছু করার নেই। তবে জেলেরা যাতে নিষেধাজ্ঞা মেনে সাগরে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকে সেজন্য তাদেরকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রণোদনা হিসেবে চাল দেয়া হবে। আর যারা আইন অমান্য করবে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ভোলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী জেলে হচেছ ৬৪ হাজার। এর বাইরে আরও অন্তত ৩ লাখ জেলে রয়েছে। বছরে দেশে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায় তার ৩ ভাগের ১ ভাগ সংগ্রহ করে ভোলার এসব জেলেরা।