এপিএসসিএল’র বিদ্যুৎ প্রকল্পে ইলিশ প্রজনন বাধাগ্রস্ত হবে
কলাপাড়ায় (পটুয়াখালী) নির্মাণাধীন এপিএসসিএল’র (আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি) বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ইলিশ প্রজনন বাঁধাগ্রস্ত হবে। আন্ধারমানিক চ্যানেলের পানি ও পরিবেশ দুষিত হয়ে এমনটি হবে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
বৃহস্পতিবার (২৬মে) বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবী করা হয়। এতে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিকুর রহমান। প্রকল্প নিয়ে একটি আর্থসামাজিক সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, প্রকল্পের কারণে ২৯ কিলোমিটার পানিপথ ভরাট করা হবে। এই প্রকল্পের আশপাশের শিল্পায়ন কলাপাড়া এলাকার নদী, পানি ও মৎস্য সম্পদসহ সাধারণ মানুষের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রথমে ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্কপ্পনা নিলেও, গতবছর তা বাতিল করে এলএনজি অথবা নবায়নযোগ্য জ্বালানী ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্কপ্পনা গ্রহণ করে। এখন এখানে ২৪০০ মেগাওয়াটের এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায়।
সরকার গতবছর ১০টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পেছনে মূল কারণ ছিল ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো যথা সময়ে কাজ এগিয়ে নিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সেই বাতিল হওয়ার প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে এপিএসসিএল’র প্রকল্পটিও।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, প্রকল্পের জন্য ৩ ফসলী কৃষিজমি অধিগ্রহণ হয়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের খবর মিলেছে।
সভাপতির বক্তব্যে এমএস সিদ্দিকী বলেন, বাপা কখনই উন্নয়নের বিপক্ষে নয়। কিন্তু যে উন্নয়ন দেশের কৃষি, পরিবেশ, নদী, জীববৈচিত্র ও প্রাণিসম্পদ ধ্বংস করে সে উন্নয়ন আমরা চাই না। সম্ভাব্য অভিঘাতসমূহ সঠিকভাবে পর্যালোচনা করা জরুরি।
বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানীভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো যেন এসডিজি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেজন্যও সরকারকে সচেতন হতে হবে। কলাপাড়ায় চলমান শিল্পায়ন দেশের মৎস্য সম্পদের, বিশেষভাবে ইলিশ এবং তরমুজ উৎপাদনের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী ফরিদ উদ্দিন বলেন, এলাকায় একরপ্রতি ৮০ মন ধান হয় প্রতি মৌসুমে। তিন ফসলী এ জমিতে ইরি-বোরো ছাড়াও তরমুজ চাষ হয়। প্রধানমন্ত্রী তিন ফসলী জমিতে যেন কল কারখানা না করা হয়। কিন্তু এখানে করা হচ্ছে। মাত্র ২০ শতাংশ লোক অধিগ্রহণের টাকা পেয়েছে।