ভাঙচুরের অভিযোগ ঢাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, ৩ রুটে লেগুনা বন্ধ
দৈনিক পাঁচ হাজার করে মাসে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে, দাবির সেই টাকা না দেওয়ার অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রলীগের কর্মী পাঠিয়ে লেগুনা ভাংচুর ও মালিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মুনায়েম শাহরিয়ার মুনের বিরুদ্ধে।
গতকাল শুক্রবার রাতে এমন ঘটনা ঘটলে তার প্রতিবাদে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ের ৩টি রুটে লেগুনা চলাচল বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে লেগুনা মালিক সমিতি।
লেগুনা মালিক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে নীলক্ষেত থেকে গুলিস্তান ও চকবাজারমুখী ৩টি রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লেগুনা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে লেগুনা সমিতির নীলক্ষেত মোড় লেগুনা রুটের দেখভালের দায়িত্ব থাকা মৃধা মানিক বলেন, ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার দাবি করা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় নীলক্ষেত মোড়ে চারটি লেগুনা ভাঙচুর করেন তাদের সমর্থকরা। লেগুনা মালিকদের মারধরও করা হয়েছে৷ এর আগেও কয়েকবার লেগুনা ভাঙচুর করেছেন তারা।
তিনি বলেন, চার দিন আগে লেগুনা মালিক সমিতির নেতাদের ডাকেন স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। তারা সমিতির নেতাদের কাছে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ নিয়ে মালিক সমিতির সঙ্গে তাদের দুদফা বৈঠক হয়। কিন্তু মালিক সমিতি চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার বিকেলে লেগুনা ভাঙচুর করেন তাদের সমর্থকরা। এতে চারটি লেগুনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হল শাখা সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এটা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমরা কমিটি পেয়েছি ফেব্রুয়ারি মাসে এখন কেন এসব চাইব। আমাদের কেউ এর সাথে জড়িত নয়। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের মানহানি করা হয়েছে। আমরা মানহানির মামলার বিষয়ে ভাবতেছি।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন বলেন, তাদের সাথে আমাদের কখনো বসা হয়নি, কথা হয়নি। তারা কোথায় থেকে আমাদের এই বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসছে আমরা জানি না। যতটুকু জানি এক মাস আগে আমাদের হলের ছেলেপেলের বাইকের সাথে লেগুনা লাগায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, ভাঙচুর করেছে। সে ইস্যুকে কেন্দ্র করে হয়ত এখন তারা আমাদের দোষ চাপাচ্ছে। আমরা এখন লেগুনা মালিক সমিতির সাথে সাথে দেখা করার চেষ্টা করছি, তাদের সাথে আগে কখনো কথা হয়নি। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি এ ঘটনার সাথে হল ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি তাদের (হল ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) জিজ্ঞেস করেছি তারা বলেছে এমন কিছু ঘটেনি। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল লতিফ বলেন, লেগুনা ভাঙচুরের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব
উল্লেখ্য, নীলক্ষেত থেকে গুলিস্তান ও চকবাজারমুখী ৩টি রুটে এই প্রায় ৭০-৮০টি লেগুনা চলাচল করে বলে জানা গেছে।