মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়কের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, মামলা
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিককে চাঁদার দাবিতে জিম্মি করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের দুই সহ সভাপতির বিরুদ্ধে। মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মাসুদ রানার নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
গত শনিবার ১৩ আগস্ট মিরসরাইয়ের বড় তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ১৪ আগস্ট রোববার হাসপাতালের মালিক জসিম উদ্দিনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন মিরসরাই থানায় এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তবে এ ঘটনায় কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন।
মামলার আসামিরা হলেন, মো. তুরিন (২৭), ইউসুফ (২৮), মো. মাসুদ রানা (২৭), আবির (৩৫), সোহেল মেম্বার (৩৫) ও মো. হাসান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদের মধ্যে তুরিন ও মাসুদ রানা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি। জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতির পদ ছাড়াও মাসুদ মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও তুরিন ১০ নম্বর মিঠানালা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তারা দুজনই খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বাকিরা তাদের কর্মী।
জসিম উদ্দিনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'গত ১৩ আগস্ট সকালে আমার স্বামী এবং আমার দুই মেয়ে মুনতাহা কারিনা বৃষ্টি (২০) এবং নুসরাত আফরিন বিথী (১৭) সহ আমাদের বড়জোর তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালে যাই। আমরা হাসপাতালে থাকা অবস্থায় দুপুরে তুরিন ও মাসুদ সহ ৮/১০ জন হাসপাতালে ঢুকে আমার স্বামীকে একটা কক্ষে নিয়ে মারধর শুরু করে।'
স্বামীকে বাঁচাতে রুমে ঢুকার চেষ্টা করলে তাকে ও তার মেয়েদের গালিগালাজ করার অভিযোগ করে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'আমি এবং আমার দুই মেয়ে সহ আমার স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে আসামিরা আমাদেরকে রুমে প্রবেশ করতে না দিয়া উল্টো গালিগালাজ করে এবং আমাদেরকেও মারধর করা চেষ্টা করে।'
স্বামী জসিম উদ্দিনকে ওই রুমে ৩ ঘণ্টা আটকে রেখে মারধর করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, 'তারা আমার স্বামীকে প্রায় তিন ঘন্টা অফিস কক্ষে মারধর করে। এসময় তারা বলে যে, আমার স্বামী নাকি হাসপাতালের রিসিপশনিস্ট নাদিমা সুলতানাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। তাকে ৩০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করত হবে। এ সময় আমার স্বামী নাদিমাকে তার সামনে এনে এই বিষয়ে কথা বলার অনুরোধ করলে তারা বিয়ের বদল ১৫ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার প্রস্তাব দেয়।'
'পরে তারা আমার স্বামীকে মারধর করে সে নাদিমাকে বিয়ে করবে এই মর্মে ৩০০ টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে যায়। পরদিন তারা ৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তারা হাসপাতাল ভাংচুর করবে বলে হুমকি দেয়। এই ঘটনায় আমরা মিরসরাই থানায় একটা মামলা দায়ের করেছি।'-- যোগ করেন সাবিনা ইয়াসমিন।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ওসি মিরসরাই।