‘বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে’
বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় হলেও বর্তমান বাংলাদেশে তাদের এজেন্টরা এখনো বেঁচে আছে। তারা (বিএনপি) নানান সময়ে নানা মিথ্যাচার করে, অভিযোগ করে বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ফ্লোরে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার' শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শোকসভার আয়োজন করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন, আদর্শকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য তাকে হত্যা করা হয়নি। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও তাদের দোসর পশ্চিমা মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে হত্যা করতে চায়। বঙ্গবন্ধু, পরিবারের প্রতি এখনো তাদের বিদ্বেষ আছে। তাই তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে।
বাংলাদেশে রাজনীতিতে দু’টি ধারা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আর আরেকটি হলো বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী প্লাটফর্ম। এই ধারা পাকিস্তানের নির্দেশে চলে।
হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বলতে গেলে বাংলাদেশ আসে আর বাংলাদেশের ইতিহাস বলতে গেলে বঙ্গবন্ধুর জীবনী চলে আসে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি কেনো গোলটেবিল বৈঠকে এসেছে? কোনো মেজর হুইসেলে এসেছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে।
আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা বইয়ে লিখেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য জড়িত। শুধু কতিপয় বিপথগামী সদস্য জড়িত ছিলো না। ১৯৭১ সালে পরাজিত হওয়া পাকিস্তান ও তাদের মিত্র পশ্চিমা মহাশক্তিদর রাষ্ট্র পরাজয়ের পতিশোধ নিতে উন্মুখ ছিলো। তখন থেকেই তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্লট রচনা করেছে। রাজাকার, আলবদরের ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করেছে এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর, তা তার এসএসসির সার্টিফিকেটে আছে। উনার পিতা মরহুম ইস্কান্দার মজুমদার মাসিক ‘নিপুণ’ এ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, খালেদা জিয়া ৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নিয়েছিলেন। আর ১৯৯৩ সালে ক্ষমতায় থাকতে তিনি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীতে সারা জাতি যখন কাতর থাকে সেই দিন মিথ্যা জন্মদিন পালন করে খালেদা জিয়া উল্লাস করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দণ্ডপ্রাপ্ত অনেকের রায় কার্যকর হয়েছে। কয়েকজন আত্মস্বীকৃত খুনি পালিয়ে আছে, তাদের রায় কার্যকর হয়নি। প্রত্যাশা করছি দ্রুত কার্যকর করে আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করবো।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, সাবেক মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন হক আরা মিনু, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী তারিক সুজাত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওছার।