ঘরে বসে শামীমার মাসে আয় ৪০ হাজার টাকা



আরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
শামীমা সুলতানা

শামীমা সুলতানা

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা আরও বেশি পরিমাণে সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। নিজের জমানো মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে বর্তমানে ৩ লাখেরও বেশি টাকার পুঁজি করেছেন ‘আনকোরা’র স্বত্ত্বাধিকারী শামীমা সুলতানা। প্রতি মাসে আয় করছেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

নিজের স্বামী ও এক মেয়েকে ঠিক যতটুকু সময় দেন, তার চেয়ে বেশি সময় দেন নিজের ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আনকোরায়। এক কন্যা সন্তানের মা অনার্স শেষ না হতেই যখন চাকরির আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে গিয়ে নিজের মধ্যে হতাশা আবিষ্কার করলেন, ঠিক তখনই ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন মাথায় চাপে। এরপর স্বামীর অনুপ্রেরণায় নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুললেন। ‘আনকোরা’ ফেসবুক পেজ তার জীবনকে নিয়ে গেল এক অনন্য উচ্চতায়। 

এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে। কিন্তু সংসার ও সন্তান লালন-পালনের পাশাপাশি সফলতার সঙ্গে চালিয়ে যান পড়াশোনা। শামীমা সুলতানা টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করেছেন। চাকরির আশায় বসে না থেকে তিনি উইয়ের মাধ্যমে শুরু করেছেন অনলাইন ব্যবসা। ‘আনকোরা’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে দেশীয় আমসত্ত্ব বিভিন্ন রকমের আচার ফেসবুক পেজে আপলোড দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে অর্ডার আসতে থাকে। সেইসঙ্গে মানুষের চাহিদাও বাড়তে থাকে; ফলে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে ‘আনকোরা’ পেজ।

শামীমা সুলতানা বলেন, ছোটবেলা থেকে নিজে কিছু করতে চাইতাম তবে সেটা চাকরি না, নিজের স্বাধীনতা থাকবে এমন কিছু রান্না-বান্নায় মোটামুটি ঝোঁক থাকলেও কিভাবে কি করবো সেটা বুঝতাম না। আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্পটা শুরু মূলত করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়ে। করোনার জন্য স্বাভাবিক জনজীবন যখন স্থবির তখন ফেসবুকে দেখা পেয়েছিলাম ‘উই’ নামক একটি ফেসবুক পেজ। যেখানে হাজার হাজার নারী উদ্যোক্তাদের মিলন-মেলা। ঘরে বসেই সব সামলাচ্ছেন তারা, বেশ একটা সাহস সাথে অনুপ্রেরণাও পেলাম। তখন আমারও মনে হলো আমিও তো কিছু করতে পারি। রান্নার প্রতি টুকটাক ঝোক থাকার কারণে আচার বানানোটা ভালোই পারতাম আর সেটা নিয়ে সেখান থেকেই শুরু হলো উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। এ জন্য কষ্ট হলেও কাজ দিয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। নিয়মিত থেকে নিজেকে নিজের কাজের মাঝে টিকিয়ে রাখতে হয়। অন্যের সমালোচনা বা কটু কথা শুনে যদি শুরুতেই হতাশ হয়ে যান তবে কখনোই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না। আর আপনি যখন সত্যি ভালো কিছু করছেন বা করবেন তখন পারিবারিক বা সামাজিকভাবে সমর্থন এমনিতেই পেয়ে যাবেন। তবু আমার ক্ষেত্রে যেটা না বললেই নয় আমার স্বামী শুরু থেকেই আমাকে সমর্থন করে আসছেন যে কারণে এগিয়ে যাওয়াটাও আমার পক্ষে অনেক সহজ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ৩ বছরের উদ্যোক্তা জীবনে আমি একদিনও অনিয়মিত হইনি। যেহেতু আমি এখনও ছাত্রী সেই সাথে সংসার বাচ্চা তো আছেই তবুও আমি আমার কাজের জায়গায় শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি। আমি এখন যতটা এগিয়ে আসতে পেরেছি সেটা হলো আমার নিয়মিত ধৈর্য ধরে থাকার জন্য। ভালো পণ্য প্রতিনিয়তই গ্রহণের জন্য আর যেটা না বললেই নয় তা হলো একজন মানুষ হিসেবে ভালো ব্যবহার যা ছাড়া ব্যবসা বা কাস্টমার কোনটাই ধরে রাখা সম্ভব না। আসলে আমি যখন উদ্যোক্তা হয়েছি তখন ছিল করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়। তাই উদ্যোক্তা হতে গিয়ে শুরুতেই কোন ট্রেনিং নেয়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি। প্রথমত আমি আমার কাজে নিয়মিত ভাবে ছিলাম। কাজটাকে সিরিয়াসভাবে নিয়েছি।

শামীমা বলেন, আপনি যা কিছু করুন না কেন সেটা সৎ ভাবে করতে হবে। সততা না থাকলে আপনি যে কোন সময় কাজ থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। আর সততা ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধৈর্য ধরে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে টিকে থাকতে হবে। ব্যক্তিগত পরিচয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন মানুষ আপনাকে চিনবে বা আপনার কাজ নিয়ে জানবে তখনই কেবল সে কিনতে আগ্রহী হবে। আমার কাজ নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী। তাছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো সবার আগে মানুষ হিসেবে আপনাকে ভালো ব্যবহার করতে হবে। এটা কাস্টমার ডিলিং এর ক্ষেত্রে ভীষণ জরুরি। যেহেতু আমার ব্যবসা পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক, সেখানে একটা মানুষকে সরাসরি না দেখে তার সাথে ডিল করাটা খুবই কঠিন। সেক্ষেত্রে ভালো ব্যবহারটা অবশ্যই জরুরি। কথা দিয়ে কথা রাখতে পারলে ক্রেতার বিশ্বস্ততা অর্জন সহজ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, নারীরা ঘর সংসার সামলে চাকরি করবে ব্যাপারটা ইদানীং কিছুটা সহজ হলেও উদ্যোক্তা হওয়াটা মেয়েদের জন্য একরকম যুদ্ধের মতন! তবু ইচ্ছাশক্তি, সততা, সাহস আর টিকে থাকার প্রবল ধৈর্য থাকলে আসলে সবটাই সম্ভব আমার মনে হয়। আত্নবিশ্বাসী হতে হবে তবে সেটা যেন অতিরিক্ত না হয়। পরিশ্রমী, ধৈর্যশীল হতে হবে সেই সাথে নিয়মিত থাকতে হবে। হতাশ হওয়া যাবে না যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে টিকিয়ে রাখার মানসিকতা থাকতে হবে। ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। আচার-আচরণে যথেষ্ট আন্তরিকতা থাকতে হবে। টাইম ম্যানেজমেন্ট, কমিটমেন্ট ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উদ্যোক্তা জীবনের ক্ষেত্রে সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে আর কথা কাজে মিল রাখাটাও ভীষণ জরুরি। কাজের ক্ষেত্র আর পারিবারিক ক্ষেত্র আলাদা রাখতে হবে। টিম ওয়ার্ক করতে হবে এবং তা লিড করার যোগ্যতা থাকতে হবে। আপনার কাজের ক্ষেত্র যত বড় হবে টিম ওয়ার্ক তত জরুরি হয়ে উঠবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। কারণ এটা ২০২২ সাল ডিজিটাল যুগ যেখানে প্রায় সবাই এখন প্রযুক্তি নির্ভর। মানুষ যত প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে অনলাইন ব্যবসা তত জমজমাট হয়ে উঠছে। আর আমার কাছে মনে হয় পোশাকের চেয়ে খাবার-দাবারে মানুষের আগ্রহ বেশি। আর সেখানে হোমমেড মানেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকরভাবে বাসার খাবারটাই মানুষ পাচ্ছে। যদিও খাবার নিয়ে কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং তবুও আপনার খাবার যখন ক্রেতার ভালো লাগবে তখন সেই ক্রেতা কিন্তু রিপিট ক্রেতা হয়ে বারবার ফেরত আসবে। প্রতিটা ফুড রিলেটেড আইটেমের ক্রেতা থেকে রিপিট ক্রেতার অংকটা কিন্তু বেশ ভালো রকমেরই হয় বা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে ডেলিভারি বা কুরিয়ারের ব্যাপারটা যত সহজ হবে ফুড আইটেমটা আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, আনকোরাকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে গড়তে চাই! আনকোরার মাধ্যমে যেন তাদের জন্য কিছুটা হলেও করতে পারি, সেই চেষ্টায় আমার এই আনকোরার সৃষ্টি। বিএসসি অনার্স (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ) শেষ। বর্তমানে এমএসসি (পদার্থবিজ্ঞান) অধ্যয়নরত আছি। অল্প বয়সে বিয়ে, বাচ্চা, সংসার, পড়াশোনা সামলে একজন উদ্যোক্তাও! আমি কিছু করছি বরং আমার বাবা, স্বামীর পরিচয় ছাড়াও আমার একটা পরিচয় আছে আর তা হলো আনকোরার স্বত্ত্বাধিকারী আমি শামীমা সুলতানা। এটাই আমার সফলতা আমার নিজের পরিচয়। ইচ্ছাশক্তি, সাহস, আত্নবিশ্বাস আর পরিশ্রমের মানসিকতা থাকলে বিনিয়োগটা কোন সমস্যা বলে আমার মনে হয় না। আপনি কোথাও ঘুরতে গেলেও কিন্তু হাজারখানি টাকা খরচ হয় সেটা না হয় নিজের উদ্যোগেই প্রথম ইনভেস্ট করুন। প্রথমেই লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে এমন কিন্তু না। শুরুটা অল্প থেকেই করুন, আস্তে আস্তে কাজ বুঝে পরিধি বাড়াবেন। আমার ৩০০ টাকার উদ্যোগ কিন্তু তিন লাখ ছাড়িয়েছে বহু আগেই! নিজের টার্গেট সেট করুন। পাঁচ বছর পর নিজেকে বা নিজের উদ্যোগকে কোথায় দেখতে চান সেই হিসাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করুন। সৎ থেকে পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে যে কোন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে সামলাতে হবে, কোন ভাবেই হতাশ হওয়া যাবে না। নিয়মিত ভাবে নিজের কাজে লেগে থাকতে হবে। সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে কাজ করুন সৎভাবে লাখ টাকা বিক্রি করা কোন ব্যাপারনা। সব ধরনের আচার আমসত্ত্ব নিয়ে, আমার সিগনেচার আইটেম আচারি শুঁটকি।

   

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;

পটিয়ায় বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের পটিয়াতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাটা নাকম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসরিফ (১৫) ও কক্সবাজারের রামুর নুরুল আলম (২৮)। তিনি চন্দনাইশের এলেহাবাদ এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামমূখী মারসা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে একটি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকী একজনের নাম জানা যায়নি। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

ওই অটোরিকশায় চালকসহ মোট ৪ আরোহী ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সাথে সাথে এক যাত্রী লাফ দিয়ে সরে পড়ে। তাই তিনি তেমন আঘাত পাইনি বলে যোগ করেন ওসি। 

;