কথিত বাংলাদেশি ‘বিলিওনিয়ার’ডাবলু চৌধুরীর আসল পরিচয় পাওয়া গেছে!



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
কথিত বাংলাদেশি ‘বিলিওনিয়ার’ডাবলু চৌধুরীর আসল পরিচয় পাওয়া গেছে!

কথিত বাংলাদেশি ‘বিলিওনিয়ার’ডাবলু চৌধুরীর আসল পরিচয় পাওয়া গেছে!

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতালির ভেনিসে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়ে ভাইরাল হওয়া ‘কথিত’ বিলিওনিয়ার ডাবলু চৌধুরীর আসল পরিচয় পাওয়া গেছে! কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে ‘কে এই বাংলাদেশি বিলিওনিয়ার’ বলে ডাবলু চৌধুরীর যে পরিচয় দেয়া হচ্ছে, বার্তা২৪.কমের অনুসন্ধানে তার পুরো সত্যতা মেলেনি। ভেনিসে ইলেকট্রিক মোটর গাড়ি কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দেয়া ডাবলু চৌধুরী আসলে বাংলাদেশের একজন সাধারণ ব্যবসায়ী! যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর থাকলেও তিনি বাংলাদেশের বাসিন্দা, তাঁর বিদেশি নাগরিকত্বের কোন প্রমাণ মেলেনি। এমনকি তার বাড়ি সিলেটে নয়, কুষ্টিয়ায়। কুষ্টিয়া, পাবনা ও সুইজারল্যান্ডে লেখাপড়া করা ডাবলু চৌধুরী প্রবাসী ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংগ্রহের আওতায় সবুজ জ্বালানির গাড়ি কারখানার বিনিয়োগ সম্ভাবনা যাচাই করে বিদেশে ঘুরে ফিরছিলেন। এরই মধ্যে তথাকথিত বিলিওনিয়ার হওয়ার খবর বেরিয়েছে!

খবরে প্রকাশ, ইতালির ভেনিসে এপসিলন মোটরস ইনৃকপ্রায় এক বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দেয় সম্প্রতি।এই কোম্পানির চেয়ারম্যান ডাবলু চৌধুরী। এতে এই বাংলাদেশি বিলিওনারের কে এবং তার অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। জমি ও ইউটিলিটির সুযোগ পাওয়া গেলে গাড়ি কারখানার পাশাপাশি লিথিনিয়াম ব্যাটারি কারখানাও স্থাপন করা হবে বলে এসপিলনের প্রস্তাবে রয়েছে। এতে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ এক হাজার মানুষের চাকরির ব্যবস্থা হবে। এই প্রস্তাবের আলোকে মিলানে অবস্থিত বাংলাদেশ কনসাল অফিসের সহায়তা নেয়া হয়। এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রকাশিত ডাবলু চৌধুরীকে বিলিওনিয়ার হিসাবে উল্লেখ করে মিডিয়ায় খবর চাউর হয়।গণমাধ্যমে নানা রকম খবর প্রকাশিত থাকার প্রেক্ষিতে বার্তা২৪.কম প্রকৃত তথ্য জানতে নিবিড় অনুসন্ধান করে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাবলু চৌধুরীর জন্ম কুষ্টিয়া শহরে। তার বাবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী অবসর গ্রহণ করেন। তিনি কয়েক বছর আগে মারা যান। দু্ই বোনের পর ডাবলু চৌধুরী পিতার একমাত্র পুত্র। কুষ্টিয়া শহরের জেলখানা মোড়েতাদের দুটি ত্রিতল দালান রয়েছে। পঞ্চাশোর্ধ বয়সের ডাবলু দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকেন। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করার পর প্রবাসী হওয়ার লক্ষ্যে  সুইজারল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং সেখানে লেখাপড়া ও চাকরি করেন। পরে আবার দেশে ফিরে এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নানা পর্যায়ে ওঠ বসের সুবাদে ডাবলু চৌধুরী নানা রকম ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। এর আগে তিনি এভিয়েশন, নির্মাণ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতে অংশীদারি ব্যবসার চেষ্টা করেন। ২০০৭ সালের দিকে ডাবলু চৌধুরী স্লোভাকিয়ান এয়ারলাইন্সের জিএসএ নিয়ে এসে এভিয়েশন ব্যবসারও চেষ্টা করেছিলেন।

জানা গেছে, ডাবলু চৌধুরী ডরোথি চৌধুরীকে বিয়ে করে কিছুদিন ঢাকায় বসবাস করেন। পরে স্ত্রীর উচ্চতর পড়াশুনার জন্য ২০০৮ সালে লন্ডনে পাড়ি জমান। ২০০৯ সালে লন্ডনে তাঁদের একমাত্র পুত্রের জন্ম হয়। কয়েক বছর পর  লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তিনি ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চেষ্টা চালান।স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের উদ্দেশে ২০১৫ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন বলে একটি সূত্র জানায়। ও্ই সূত্রমতে, স্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী ২০২১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাসের জন্য আসেন এবং লন্ডনের ইলফোর্ড এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী ও সন্তান বর্তমানে যুক্তরাজ্যেই বসবাস করছে।

জানা গেছে, ডাবলু চৌধুরী ২০২২ সালে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানির প্রবাসী ও বিদেশি নাগরিকদের একত্রিত করে এপসিলন মোটর কোম্পানি গঠন করে এই কোম্পানির চেয়ারম্যান হন। যুক্তরাষ্ট্রের দিলওয়ারে রাজ্য থেকে এর রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করা হয়।কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৌরভ মোহাম্মদ প্রবাসী বাংলাদেশি ও  বিশ্বখ্যাত মোটর কোম্পানিতে কাজ করার অভিজ্ঞ সম্পন্ন। এপসিলনের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, এর পরিচালনা পর্ষদে মিসেস ঝ্যাং ইয়ানমেই, ট্রিসিয়া ব্রাউন প্লাঞ্জ ও আফজাল আনসারী প্রমুখ দেশি বিদেশি উদ্যোক্তরা রয়েছেন। তবে এখনও একটি ঝকঝকে ওয়েবসাইট, কোম্পানির প্যাড এবং বিদেশি ও প্রবাসী কিছু অভিজ্ঞ ব্যক্তিই এই কোম্পানির পুঁজি করে ধারণা করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই কোম্পানির পক্ষে বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে ডাবলু চৌধুরী এ বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদার রেনো, লাসভেগাস, দুবাই, ক্যালফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেস, ইথিওপিয়ার আদিসআবাবা, জার্মানি, পর্তুগাল, হাঙ্গেরি ভ্রমণ করেন। একই প্রস্তাব নেভাদার রেনো ও লাসভেগাসেও দেয়া হয়। মাস দুয়েক আগে ঢাকা থেকে জনাব চৌধুরী আফ্রিকা হয়ে ইতালিতে যান বলে জানা যায়।

এ নিয়ে ডাবলু চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে বার্তা ২৪.কম। তিনি ইতালির বের্গামো শহরে আছেন বলে জানা যায়। অনলাইনে ডাবলু চৌধুরী এ প্রতিবেদককে জানান, এপসিলন মোটর্স ইনক এর আওতায় কারখানা স্থাপনে বিভিন্ন দেশে জায়গা খোঁজার খবর ঠিক। এতে আমাদের এক টাকাও বিনিয়োগ নেই, আমাদের এতো বিপুল অর্থও নেই। কোম্পানির প্রাথমিক অর্থের যোগান দিচ্ছে মোটরগাড়ি তৈরিতে আগ্রহী ও অভিজ্ঞ প্রবাসী এবং বিদেশি উদ্যোক্তাগণ। প্রকল্প প্রস্তাবের বিনিয়োগ আসার কথা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের আওতায় নতুন ও উদ্ভাবনী শিল্পে মূলধন লগ্নীকারীদের কাছ থেকে। বিশ্ব জুড়ে ব্যবসা বাণিজ্যে এভাবেই বিনিয়োগের যোগান হয়। তিনি বলেন, আমাদের কোম্পানির স্লোগান হচ্ছে, এপসিলন শুধু কোম্পানি নয়, লাগসই জ্বালানিতে সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন। বাংলাদেশি হিসাবে আমার  মেধা, নানা দেশের অভিজ্ঞতা বিনিয়োগ করেছি মাত্র! আমাদের প্রস্তাবটি গ্রীন হাউজ গ্যাসের বিপরীতে টেকসই পৃথিবীর জন্য ইতিবাচক বলে মনে করি। এর বিপরীতে গণমাধ্যমে অনাকাঙ্খিত ও আজগুবি তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

   

বন বিভাগের গেটের দেওয়ালে চাপা পড়ে শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় বন বিভাগের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে জুরাইন আহমেদ (৪) নামে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলা বন বিভাগের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে এ ঘটনা ঘটে।

জুরাইন আহমেদ খোকসা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মাঠপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী উজ্জলের ছেলে।

নিহত শিশুর চাচা আজিজুল ইসলাম জানান, শিশুরা খেলছিলো আবার কেউ ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলো। এসময় অসাবধানতাবশত গেটের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে নিহত হয়।

বন কর্মকর্তার অফিসটি সব সময় অরক্ষিত থাকে। কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় জুবায়েরের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

উপজেলা বন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এক বছর আগে কুষ্টিয়ার এক ঠিকাদার গেট নির্মাণ করেছে।

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। গেট নির্মাণে ত্রুটি থাকতে পারে। ঠিকাদার গেটের পিলার এমনভাবে তৈরি করেছেন, মনে হচ্ছে পিলার দুটি মাটির ওপরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। নাড়া দিলেই নড়ছে। বন কর্মকর্তার গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

বাঘা শরীফের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে দুই গুরুর ত্যাগ!



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাবা-মায়ের দেওয়া নাম মোহাম্মদ শরীফ। কিন্তু বলীখেলার রিংয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপের কারণে সেই আসল নামটিই এখন বলতে গেলে হাওয়া। সবার মুখে মুখে রটে তাঁর নামটাই হয়ে গেছে ‘বাঘা শরীফ’। কুমিল্লার হোমনার এই ডানপিটে হৃষ্টপুষ্ট শরীরের তরুণ এবার প্রথমবার অংশ নিয়েছিলেন ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলায়। পরেরটাতো ইতিহাস। একে একে চ্যালেঞ্জ রাউন্ড, সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল জিতে ইতিহাসের পাতায় যেন নিজের নামটা খুঁদাই করে গেলেন কুমিল্লার মানুষের ‘প্রিয় বলী’ বাঘা শরীফ। গল্পটা যেন সেই পুরনো প্রবাদের মতো-আসিলাম, দেখিলাম, জয় করিলাম!

অথচ বাঘা শরীফের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথাও ছিল না। বলীখেলায় অংশ নিতে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে এলেও চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে তাঁকে রাখেনি আয়োজক কমিটি। তাতে মন খারাপ হয়ে যায় শরীফের। সেটি দেখে বাঘা শরীফকে সুযোগ দিতে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী নিজের নামও প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু তাতেও আয়োজকদের মন গলেনি। শেষ পর্যন্ত গত আসরের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীও বাঘা শরীফকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রত্যাহার করে নেন নিজের নাম। অবশেষে এক প্রকার বাধ্য হয়ে শাহজালালের অনুরোধ রাখে আয়োজক কমিটি। আর এতেই ভাগ্য খুলে যায় বাঘা শরীফের। চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে খেলতে নেমেই কক্সবাজারের নুর মোহাম্মদ বলীকে হারিয়ে বাঘা শরীফ উঠে যান সেমিফাইনালে। আর সেমিফাইনালে একইভাবে হারান সীতাকুণ্ডের রাসেল বলীকে।

ফাইনাল শুরু হতেই রিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বাঘা শরীফকে নানা দিক নির্দেশনা দিতে থাকেন শাহজালাল বলী। অদূরে দাঁড়িয়ে জীবন বলীও সমর্থন জানান শরীফকে। আর এতেই কিনা দ্বিগুণ উৎসাহে রাশেদকে চাপে রাখেন শরীফ। অবশ্য রাশেদও কয়েকবার চেষ্টা করেন ‘মরণকামড়’ দেওয়ার। কিন্তু শরীফের বলের কাছে পরাস্থ হন বারবার। এভাবে ১১ মিনিট ধরে চলতে থাকে ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! শেষ পর্যন্ত রাশেদ পারলেন না আর, মেনে নেন হার। এর মধ্যে দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

শরীফ বলী জিততেই আনন্দে ফেটে পড়েন শাহজালাল ও জীবন বলী। জানতে চাইলে জীবন বলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাড়ি থেকে আসার আগে শরীফ আমাকে ফোন করেছিলেন। তার খেলার খুব আগ্রহ ছিল, সেটি জানিয়ে সহযোগিতা চেয়েছিল। আর সে খুব ভালো বলীও। কুমিল্লায় তাঁকে এক নামে চেনেন সবাই। কিন্তু তাঁকে সুযোগ দিচ্ছিল না আয়োজক কমিটি। মূলত তাঁকে সুযোগ করে দিতে আমি নিজের নাম প্রত্যাহার করি নিই। কিন্তু এরপরও সুযোগ না দেওয়ায় শাহজালাল বলীও তাঁর জন্য নাম প্রত্যাহার করে নেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের মুখ উজ্জ্বল করল শরীফ। আর আয়োজক কমিটিকেও দেখিয়ে দিল সে কত বড় বলী।’

ছবি: জীবন বলী ও শাহজালাল বলী

প্রায় একই কথা বললেন শাহাজালাল বলীও। তিনি বলেন, ‘বাঘা শরীফ আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সে খুব আশা নিয়ে খেলতে এসেছিল। কিন্তু আয়োজক কমিটি সুযোগ দিচ্ছিল না। সেজন্য আমি নিজে না খেলে তাঁকে খেলাতে অনুরোধ জানাই। ভাগ্যিস কমিটি সেই অনুরোধ মেনে নিয়েছিল।’

দুই সিনিয়র বলীর কাছে শ্রদ্ধায় যেন নুইয়ে পড়লেন বাঘা শরীফ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাহজালাল ভাই আমার কাছে বড় ভাইয়ের মতো। বলীখেলায় তিনি আমার গুরুতুল্য। জীবন ভাইও তেমন। তাঁদের দুইজনের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।’

বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাঘা শরীফ ট্রফির সঙ্গে পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকার সম্মানীও। এই টাকায় কি করবেন এমন প্রশ্নে বাঘা শরীফ বললেন, ‘স্মৃতি হিসেবে রেখে দেবে বেশিরভাগ টাকা। আর কিছু টাকায় আমার দুই বছরের মেয়ে মিমের জন্য কাপড় কিনে নিয়ে যাব। মেয়েকে বলে এসেছিলাম চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরব। সে বুঝতে না পারলেও হেসেছিল। এখন নিশ্চয় আরও বেশি খুশি হবে।’

এবারের বলীখেলাটি হয়তো স্মরণীয় হয়ে থাকবে দুই বলীর ‘ত্যাগের’ জন্যও। খেলায় অংশ নিলে শাহজালাল আর জীবন বলীর মধ্যেই হয়তো হতো ফাইনালের লড়াই, যেটা হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। কিন্তু একজন জুনিয়রকে সুযোগ করে দিতে দুজন যেভাবে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন, সেটি ছুঁয়ে গেছে সবাইকে। দর্শকেরা তাই বললেন, এমন ত্যাগও হয়!

আর বাঘা শরীফ তো বলেই দিলেন, ‘এই ট্রফি, এই সম্মানি আমার একার নয়, এই অর্জনের পেছনে পুরো কৃতীত্ব শাহাজালাল ভাই আর জীবন ভাই। তাদের ত্যাগই আমাকে এনে দিল চ্যাম্পিয়নের সম্মান।’

নাম প্রত্যাহার করে শুধু বাঘা শরীফকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগটাই করে দিলেন না জীবন আর শাহজালাল। জানিয়ে গেলেন-লড়াই না করেও জেতা যায়!

;

গরমে জানটা শ্যাষ হয়া গেইল!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের সাহেব আলী। এই অইদের (রোদ) ঠ্যালায় জানটা ব্যার হয়া যাবার নাগছে বাহে! গরীম মানুষ বাঁচে কেমন করি। জারের (শীত) সমায় (সময়) কনকনা ঠান্ডা আর গরমের সমায় গরম। হামরা ঘর থাকি ব্যার হওয়া যায় না। জানটা শ্যাষ (শেষ) হয়া গেইল।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রবাহে সৃষ্ট দাবদাহে অতিষ্ট লালমনিরহাটের জনজীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ ক্রমশ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আগুন ঝরা বাতাসে নারী-শিশুসহ কর্মজীবী মানুষ দিন দিন অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীর সংখ্যা কম, জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছেন না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় হাতীবান্ধা উপজেলার ভ্যানচালক নুরআলম সাথে, তিনি বলেন, বৈশাখের চনচনা অইদোত রোদে মাল নিয়া ভ্যান চালাইতে কষ্ট হয়। গরমের ঠ্যালায় কইলজা ফাটি যায়। ওই জন্যে ঠান্ডাত (গাছের ছায়া) একনা দম নিবার নাগছি।

তিনি আরো বলেন, কোথাও ঠান্ডার আভাস নাই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়বো। পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়া দুরুহ ব্যাপার হয়ে পড়বে। রিকশাচালক হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত চার-পাঁচ দিন ধরে আয় রোজগার কমে গেছে। বেলা সাড়ে ১০-১১টার পর রাস্তায় আর কোনো যাত্রী থাকে না।

বাসচালক আকবর আলী বার্তা২৪.কমকে জানান, গরমের কারণে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ (বিটুমিন) উঠে গাড়ির চাকার সাথে লেগে যায়। এতে খুব সতর্ক অবস্থায় গাড়ী চালাতে হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রমজান আলী বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রচন্ড গরমে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দৈনিক শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলার প্রতিটি হাসপাতালে শিশু রোগী ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ, যথাসম্ভব বাহিরে বের না হওয়া, সাথে খাবার পানি রাখা, ছাতা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।

কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটে তাপমাত্রা ৩৮.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

লালমনিরহাট জেলা তথ্য অফিসার শাহজাহান আলী (অতিরিক্ত দায়ত্বি) বার্তা২৪.কমকে জানান, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে জেলার সর্বত্র সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।

;

কুয়াকাটায় জেলের জালে ২৬ কেজির কোরাল



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, (কলাপাড়া-পটুয়াখালী)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালির কুয়াকাটায় বঙ্গোপসাগরে রাসেল মাঝি (৩৫) নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১.৩০ মিনিটে কুয়াকাটা মেয়র মৎস্য মার্কেটের মনি ফিস আড়তে মাছটি নিয়ে আসা হয়। এসময় মাছটি এক নজর দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। পরে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী বিক্রম চন্দ্র নিলামের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বঙ্গোপসাগরের বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় মাছটি ধরা পড়ে।

মাছ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল মাঝি বলেন, প্রতিদিনের মত গত সোমবার (২২ এপ্রিল) ধুলাস্বার ইউনিয়নের বাবলাতলা বাজার থেকে (মায়ের দোয়া) নামের ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে যাই। পরে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় জাল ফেলার পর অন্যান্য মাছের সঙ্গে এ কোরাল মাছটি ধরা পড়ে। মাছটির ওজন বেশি হওয়ায় আমাদের ট্রলারে তুলতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও আমার জালে ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজনের কোরাল মাছ ধরা পড়েছিলো। তবে আমার জালে ধরা এটিই সবচেয়ে বেশি ওজনের কোরাল। মাছটি খুব ভাল দামে বিক্রি করেছি। এত বড় মাছ পেয়ে আমার ট্রলারে থাকা জেলেসহ আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।

মাছটি ক্রয় করা ব্যবসায়ী বিক্রম চন্দ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মাছের ব্যবসা করি, এত বড় কোরাল আসলে সব সময় পাওয়া যায় না। মাছটি দেখেই আমার পছন্দ হয়েছে। তাই নিলামে আমিই বেশি দাম হেঁকে এ মাছটি ক্রয় করেছি। মাছটি বিক্রির জন্য আজই ঢাকায় পাঠাবো। আশা করছি আমি ভালো মানের লাভ করতে পারব।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, কোরাল মাছ খুবই সুস্বাদু। শিশুদের মানসিক বিকাশে কোরাল মাছ গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি বৃষ্টি হলে জেলেদের জালে ইলিশের পাশাপাশি আরও বড় বড় মাছ ধরা পড়বে।

;