ফোনআলাপ ফাঁস: আবু আসিফের নিখোঁজ নাটক!

আবু আসিফ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ দুদিন যাবত নিখোঁজ আছেন বলে পরিবারের অভিযোগের পরেরদিন ঘটনার নতুন মোড় নিয়েছে। ইতোমধ্যে একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। যাতে শুক্রবার আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা তার এক কর্মচারি মিটুকে ফোন করে আসিফকে কাপড় চোপড় নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলছে। এই ঘটনার দুইদিন পর সাংবাদিকদের কাছে আবু আসিফের স্ত্রী অভিযোগ করেন যে আসিফকে পাওয়া যাচ্ছে না। এনিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা অভিযোগ করেন তার স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদকে দুদিন যাবত পাওয়া যাচ্ছে না। এসময় তিনি আরো বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আসিফকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছে তা বুঝতে পারছি না। প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা যাওয়া করছে। তাদের ভয়ে আমি নিজেই পালিয়ে ছিলাম। আজকের মধ্যে খোঁজ না পেলে রাতেই একটা কিছু করবো। এসময় তিনি রিটার্নি কর্মকর্তা জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবেন বলেও জানান।
এই ঘটনার পর রোববার রাতে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেসার একটি অডিও কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে মেহেরুন্নেসা মিঠু থনামের এক কর্মচারীকে কল করে তার স্যার আসিফ কোথায় আছেন জানতে চায়। পরে মিঠু বলেন স্যার বাসায়। পরে তাকে সব জামা কাপড় দিয়ে তারাতাড়ি দিয়ে যে। কেউ যেন না জানে সে কোথায় গেছে। তারাতাড়ি বাসার ক্যামেরা অফ করে দে। স্যার যাওয়ার ১০ মিনিট পরে ক্যামেরা অন করতে বলেন মেহেরুন্নেসা।
নিচে কথাগুলো হুবহু তুলে দেয়া হল...
মেহেরুন্নেসা : হ্যালো মিঠু,
মিটু : জি বলেন,
মেহেরুন্নেসা : স্যার কই স্যার
মিঠু : স্যার আছেতো বাসায়,
মেহেরুন্নেসা : তাড়াতাড়ি স্যাররে ফোনটা দে দৌড় দে
জামা কাপড় গেঞ্জি জাইনগা, জুতা মোজা শীতের কাপড় ইতা দিয়া দে।
মিঠু : দিতাছি দিতাছি।
মেহেরুন্নেসা : তাড়াতাড়ি, তাড়াতাড়ি, কেউ যাতে না জানে। স্যার কই গেছে।
মিঠু : আইচ্ছা
মেহেরুন্নেসা : হ্যালো ক্যামেরার লাইন বন্ধ কর বাসার,
মিছু : আইচ্চা আইচ্চা ঠিক আছে।
মেহেরুন্নেসা : স্যার গিয়া সারলে ১০ মিনিট পরে ক্যামেরার লাইন ওপেন করবে। ক্যামেরা বন্ধ কর।
মিঠু : ঠিক আছে, ঠিক আছে।
এই ঘটনার পর থেকে আসিফকে আর কোথায় দেখা যায়নি। এর আগে আবু আসিফ স্বাভাবিকভাবেই তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছিল। তবে বিষয়টিকে নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ আসিফের স্ত্রীকে আইনের আওতায় নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ এর স্ত্রী মেহেরুন্নেসার বক্তব্য জানতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলে কর করেও সেটি বন্ধপাওয়া যায়।
১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন- বিএনপির বহিষ্কৃত পাঁচবারের সাবেক সাংসদ আব্দুস সাত্তার ভূইয়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। এদের মধ্যে জিয়াউল হক মৃধা প্রতীক বরাদ্দের পর বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।