বাংলাদেশের প্রতি শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির কৃতজ্ঞতা

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
কার কত ভূমি উন্নয়ন কর- তা আগেই জানিয়ে দেওয়ার বিধান রেখে ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এখন বাংলা বর্ষপঞ্জি (ক্যালেন্ডার) অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয়। নতুন আইন অনুযায়ী জুলাই থেকে জুন মেয়াদে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে। আর্থিক বছরের সঙ্গে এটি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আগে পহেলা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত সময়ের জন্য ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হতো। এখন সেটা হবে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।’
খসড়া আইন অনুযায়ী এখন থেকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘ম্যানুয়ালি আর কর আদায় করা যাবে না। কোনো ভূমির মালিক যদি একসঙ্গে তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর না দিয়ে থাকেন তাহলে প্রথম বছর থেকে তৃতীয় বছর পর্যন্ত সোয়া ৬ শতাংশ হারে জরিমানাসহ কর আদায় করতে হবে।’
‘ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবহার ভিত্তিক হবে। আগের ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ ছিল, এখনও সেটা বলবৎ আছে। কেউ যদি ২৫ বিঘার বেশি জমির মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে পুরোটারই ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।’
সচিব বলেন, ‘প্রতি বছর কার কত ভূমি উন্নয়ন কর, সেটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তালিকা তৈরি করে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে পাঠাবেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) তা নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেবেন। এ বিষয়ে যদি কারও আপত্তি থাকে, সেটা তিনি দায়ের করতে পারেন। তিনি এসিল্যান্ড ও জেলা কালেক্টরের কাছে আপত্তি দায়ের করতে পারেন। জেলা কালেক্টর তা ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন।’
এছাড়া জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সচিব।
ছবি: সংগৃহীত
ভোলার রাজাপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. তারেক মাহমুদ বাবু (২৮) নামে যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার (২৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বাবু পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের চর নন্দনপুর গ্রামের মৃত হেলাল হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরেই রাজাপুরের হেলাল মেম্বার পক্ষ ও আলাউদ্দিন পক্ষের মধ্যে জমি জমা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে আসছিল। এরই রেস ধরে গতকাল সোমবার (২৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নিহত বাবু ভোলা সদর থেকে তার নিজ বাড়ি পশ্চিম ঈসার যাওয়ার সময় রাজাপুর এলাকায় পৌঁছালে পথে মধ্যে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে এলোপাথারি হামলা ও কুপিয়ে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বাবুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকায় রেফার কবে। ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালী বাবু মৃত্যু হয়।
হামরার প্রত্যক্ষদর্শী আলী আকবার শিয়ালী বলেন, আমি আর বাবু অটোরিকশায় করে বাড়ি যাওয়ার পথে কয়েকজন এসে আমাদের রিক্সার সামনে গাছ ফেলে গতিরোধ করে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা আমাদের উপরে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এতে আমি দাঁত চিৎকার দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাই। পরবর্তীতে বাবুর উপরে তারা হামলা চালায় এবং কুপিয়ে যখন করে।আমার ডাকটিকি আর শুনে লোকজন আসলে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর বাবুকে আমরা ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করাই। একথা বলতে বলতেই সে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নিহত বাবুর চাচা মো. মুক্তারুজ্জামান বলেন, গতকাল রাতে বাবু ভোলা থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে নাসির ফকির, রফিক মিজিসহ কয়েকজন গাড়ি থেকে নামিয়ে মাইরধর করে রক্তাক্ত করে। পরে আমরা উদ্ধার করে ভোলা শত হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। আমরা গাড়ি এনে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় গাড়িতে উঠানোর আগেই বাবুর মৃত্যু হয়। আমরা এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের ফাঁসি চাই।
রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিঠু চৌধুরী বলেন, এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা চলে আসছিল কয়েকবার আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসাও করে দিয়েছি। আমার শান্তিপূর্ণ রাজাপুর কে যারা অশান্ত করতেছে, প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায়নের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন ফকির বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতরর পরিকারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের লাশের ময়না তদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং পূর্ব শত্রুতার জররে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হারুন, রনি, কামরুল, লিটন।
বড় প্রকল্পে বড় চুরি, প্রকৌশলীদের পোয়াবারো!
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক বর্ধিতকরণসহ সংস্কার কাজ চলছে প্রায় দুই মাস ধরে। জেলার সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যাচ্ছেতাই ভাবে কাজ সম্পাদন করলেও অজ্ঞাত কারণে সড়কে অনুপস্থিত কর্তাব্যীক্তরা। নিম্নমানের ইট ও বালুর ব্যবহার এবং সড়কের পাশের মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করা হচ্ছে। কালভার্ট নির্মাণে দেওয়া হচ্ছে ঢাকার লোকাল রড। এত কিছুর পরেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন প্রকৌশলী থাকেন না কাজের পাশে। ফলে এই বড় প্রকল্পে বড় চুরি আর প্রকৌশলীদের পোয়াবারো বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
জানা গেছে, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক বর্ধিতকরণ ও সংস্কার প্রকল্পের আওতায় গাংনীর তেরাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে খলিশাকুন্ডি ব্রিজের পূর্বপাশ পর্যন্ত একটি প্যাকেজ। এ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিং, মেসার্স রিমি নির্মাণ সংস্থা। এ প্যাকেজটির প্রাক্কলিত মূল্য ৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বামন্দী বাজারের অদূরে অস্থায়ী কার্যালয় ও ফিল্ড স্থাপন করেছে। সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে নিম্নমানের ইট ভেঙ্গে বানানো হচ্ছে খোয়া। এই খোয়া ও নিম্নমানের বালু দিয়েই সম্প্রসারিত অংশের ডাব্লিউবিএম সম্পন্ন হচ্ছে। সঠিকভাবে কমপ্কেশন করা হচ্ছে না মর্মে এলাকার লোকজান বারবার অভিযোগ দিলেও তাতে কর্ণপাত করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজের পাশে দেখা মিলছে না সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের। ফলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছেমাফিক নিন্মমানের কাজ করলেও নালিশ করার জায়গা নেই এলাকার মানুষের।
নিয়ামানুযায়ী বাইরে থেকে মাটি এনে রাস্তার দুপাশ ভরাট করার শর্ত থাকলেও তা অগ্রাহ্য। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার পাশে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করেছে। এতে জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। তাছাড়া একটু ভারি বৃষ্টি হলেই রাস্তার পাশে দেওয়া ওই মাটি ধ্বসে রাস্তা বিনষ্ট হওয়ার আশংকাও দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, সড়কটিতে রয়েছে কয়েকটি কালভার্ট। কালভার্ট নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, খোয়া আর ঢাকার লোকাল রড। স্থানীয়রা এ বিষয়টিতে বাধা দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকিতে মুখ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, এ সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপুর্ণ। জেলা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মে. টন খাদ্য শস্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তাছাড়া দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাস ও স্থানীয় হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ বড় প্রকল্পের আওতাভুক্ত করেছে। কয়েকশ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি সরকারের সুনাম অর্জন হওয়ার কথা। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রকৌশলীদের আতাতের কারনে তা ভেস্তে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, এ প্যাকেজ আওতাধীন সড়কে কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। এতে নিম্নমানের ইট, বালু আর ঢাকার লোকাল রড ব্যবহার করা হচ্ছে দেদারসে। ফলে নতুন নির্মিত এসব কালভার্ট জীবনঝুঁকির মধ্যে ফেলবে এ সড়কে চলাচলকারীদের।
অভিযোগের বিষয়ে মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ বলেন, আমার পরিষদের সামনে দিয়ে কাজ হচ্ছে। নিম্নমানের ইট, বালু দিয়ে রাস্তা করা হলেও প্রকৌশলীদের কাছে পাইনি। তাছাড়া রাস্তার পাশের মাটি কেটে রাস্তায় দেওয়ায় রাস্তা ভেঙ্গে পড়ার আংশকা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারিতার ভিত্তিতে শত কোটি টাকার কাজে পুকুর চুরি করছে। জনস্বার্থে সড়কটির কাজ ভাল করা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে কয়েকদিন আগে কল দেওয়া হয় মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারি মোবাইল নম্বর। তিনি কল রিসিভ করে অপর একজন প্রকৌশলীর নম্বরে কর দিতে বলেন। সেই নম্বরে কয়েকদিন যাবত কল দিলেও তা রিসিভ হয়নি। অপরদিকে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের সময় কাজের পাশে পাওয়া যায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন প্রকৌশলীর। যার ফলে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীর বিষয়ে কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।
ছবি: সংগৃহীত
আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে রেল মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানান রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল আলম।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। তাই আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রাককারে মূল সেতুর রেলের ট্র্যাক প্যানেল (লোহার পাত) আর মালামাল নেওয়া হচ্ছে। বিশাল আকৃতির ট্র্যাক প্যানেল বোঝাই ট্রাককারটি ভায়াডাক্ট পেরিয়ে মূল সেতুতে চলছে পাথরবিহীন রেললাইনের ওপর দিয়ে। সেখানে ভায়াডাক্ট ও মূল সেতুর রেল কাজের প্রকৌশলীরাও আছেন। সেতুর রেললাইন নির্মাণে চলছে শত শত শ্রমিকের কর্মযজ্ঞ।
ক্রেনের সাহায্যে রেলের ট্র্যাক প্যানেল বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত স্থানে। এরপর ধীরে ধীরে বসিয়ে দেওয়া হয় সেতুর ওপর। যন্ত্রের সাহায্যে তা নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ওয়ার্কশপ থেকে নিয়ে মূল সেতুতে তৈরি করা হচ্ছে পাথরবিহীন রেলের ট্র্যাক স্ল্যাব।