৩ দিনের ছুটি ৭ মাসেও শেষ হয়নি কর্মকর্তার!



মোঃ আব্দুল হাকিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পারিবারিক কাজে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার। ছুটি শেষও হয়েছে। কিন্তু গত সাত মাসেও কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি। দু’দফা তলব করেও এই কর্মকর্তাকে ফেরাতে পারেনি বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তর। মাঝে বেতন আটকে গেলে ভুয়া স্মারকের চিঠিতে বেতন আবেদন করে ধরা পড়ে যান এই কর্মকর্তা।

বিভাগীয় ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার গত বছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। পারিবারিক জরুরি কাজ জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তার অনুপস্থিতিতে একই অফিসের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিনকে সাধারণ দায়িত্ব পালন করতে বলেন। ১৭ দিন পেরিয়ে গেলে সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান। একইসাথে বিভাগীয় ও প্রাণিসম্পদ মহাপরিচালক বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু কোন সদুত্তর মেলেনি।

সূত্র জানায়, নিয়ম বর্হিভূত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৯তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা।

একই অফিসের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়া অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর। সেটা করেন ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে যা সম্পর্কে জানেন না জেলা, বিভাগীয় কিংবা খোদ প্রাণিসম্পদের মহাপরিচালক।

একাধিকবার কৈফিয়ত চাওয়া হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে কোনো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি তিনি। উল্টো দিয়েছেন হুমকি। সে বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর কর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ২০১৭ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেন ও তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

সর্বশেষ হাল ছেড়ে বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলামের কাছে ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা। তবে, মুখ খুলতে নারাজ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো: তরিকুল ইসলাম জানান বলেন, “উনারা বড় মাপের মানুষ। এসপি আছে, ডিসি আছে, প্রাণিম্পদের সচিব আছে। আমাদের কে আছে? আমাদের হুকুম করলে করতে হয়। ভুয়া স্মারক ব্যবহার, অফিস করেন না, দূর্নীতি যা কিছু আছে সেসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”

এবিষয়ে একই দপ্তরের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিন বলেন, “স্যার গতবছরের আগস্টে তিন দিনের ছুটি নিয়ে এখন পর্যন্ত একদিনও অফিস করেননি। প্রকল্পের কাজ যখন আটকে গিয়েছিল তখন ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মো: আখতারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাজগুলো করিয়ে নেন। আমরা এভাবেই কাজ করে যাচ্ছি সমস্যার মধ্য দিয়ে। স্যার কোথায় আছেন আমরা জানিনা।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। গতবছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়ে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত ছিলেন।

চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখে যোগদান করে আবার ছুটি নিয়েছেন। দীর্ঘ সময়ে একদিনের জন্যও চেয়ারে বসেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শাস্তির বিষয়ে চাকরি থাকবে কিনা যাবে তা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত আছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান একাধিকবার নোটিশ ও কৈফিয়ত তলব করেছেন তাতে কোন কাজ হয়নি।

এছাড়া ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে বেতনভাতা তোলার চেষ্টা করে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করেছেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অধীনস্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর যা সম্পূর্ণ অপরাধ।

বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতির শাস্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারী ( শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৭, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৮ এবং গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী সম্পূর্ণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভাগীয় মামলা হতে পারে ও বিনা বেতনে চাকরি বলে গণ্য হবে। এছাড়া বিভাগীয় মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হতে পারে।

এ কর্মকর্তার অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জানান, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত হওয়ার কোন নিয়ম নাই। এজন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। অনুপস্থিত হওয়ার কারণ ব্যখ্যা দিবে। যদি সন্তোষজনক কোন ব্যখ্যা দিতে না পারে তাহলে দপ্তরের নিয়মানুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। পদাবনতি হতে পারে, পদোন্নতি আটকে থাকতে পারে অনেক কিছুই শাস্তির ব্যবস্থা আছে সেগুলো আমরা করব।

   

পর্যটন উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে দেশটির রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদি এ কথা জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে এভিয়েশন খাতের বিদ্যমান অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা করতে চাই। এভিয়েশন ও পর্যটন শিল্প দুদেশের জনগণের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করবে।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে আমরা নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। বাংলাদেশের পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়ন, হোটেল ও রিসোর্ট নির্মাণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। যদি আমিরাত এই খাতে বিনিয়োগ করে তবে আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবো।

তিনি বনলেন, এভিয়েশন খাতের বিদ্যমান সম্পর্কের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র, দুদেশের সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

;

জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিককে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে নিরাপদে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার সব প্রচেষ্টা চলছে। তবে সবকিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকেও সতর্কভাবে সংবাদ প্রচারেরও আহ্বান জানান তিনি।

যুদ্ধের মধ্যে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্যদের আগের প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠাতে ‘কাজ চলছে’ বলেও জানান হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ২০০ সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদেরকে ফেরানোর জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ প্রতিবছর কমছে উল্লেখ করে অর্থবরাদ্দ পর্যাপ্ত পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ 'এমভি আবদুল্লাহ' জিম্মি হওয়ার সাতদিন পেরিয়ে গেছে। সোমালিয়ার উপকূলের একেবারে কাছে নোঙর করা এই জাহাজ নিয়ে এখনো আসেনি কোনো সুখবর। কেননা এখন পর্যন্ত দস্যুদের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ কিংবা দাবির বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। ফলে জিম্মি নাবিকদের মুক্তি ঠিক কতদিনে সম্ভব সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে। যদিওবা ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটিকে উদ্ধারে সোমালি পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে।

;

স্বাস্থ্যসেবাকে এমন পর্যায়ে নিবো সারাবিশ্ব হাততালি দিবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবাকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাতে চাই যাতে সারাবিশ্বের মানুষ হাততালি দেয়। তারা যাতে বলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা অনেকদূর এগিয়েছে। আমাদের একটাই চাওয়া, স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। আর এটার সবচেয়ে বড় কারিগর আপনারা।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে এ হলেই আমাদের স্বাস্থ্য খাতের সব কনফারেন্স হবে। কোনো ফাইভ স্টার হোটেলে আমরা যাব না। এ প্রতিষ্ঠানকে আমরা জনগণের কাছে নিয়ে যাব। এখানেই আমাদের আগামী পাঁচ বছরের যত অনুষ্ঠান আছে, সব করব।

স্বাস্থ্য খাতে এখন থেকে ‘কথা কম, কাজ বেশি’ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কথা কম বলতে চাই ও কাজ বেশি করতে চাই। তাহলে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তার ইচ্ছা পূরণ হবে।

অনুষ্ঠানের উদাহরণ দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, আজ সকাল ১০টায় প্রোগ্রাম শুরু করে ১১টার মধ্যেই শেষ করতে চেয়েছি। আমি চাই এখানে যারা বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় জড়িত মানুষরা আছেন, তারা এখান থেকে গিয়ে দ্রুত কাজে যোগ দেবেন। তাই সময়ের মধ্যেই শেষ করব।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা না থাকলে আজ আমি থাকতাম না। আজ মন্ত্রী হতে পেরেছি, আপনারা যারা আমার সামনে এসেছেন তারা আসতে পারতেন না। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মার্চ মাসে আমরা থাকতাম ইস্কাটনে। তখন হাতিরপুলে গেলে বঙ্গবন্ধু লুঙ্গি পরে নিচে আসতেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তারা জানি তার দেশের প্রতি কতটুকু ভালোবাসা ছিল। তিনি সবচেয়ে বেশি যেটি চিন্তা করতেন সেটি হলো, সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া। তিনি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কয়েকবারই গিয়েছিলেন। তখন ডাক্তার-নার্সদের উদ্দেশে বলতেন, তোমরা হচ্ছো ডাক্তার, নার্স। তোমরা যদি সময়মতো আসো, সময়মতো সেবা দান কর তাহলে আমি সন্তুষ্ট। তাহলে আমি বুঝব আমার সারাজীবনের কষ্ট আর দেশ স্বাধীন করা সার্থক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্যসচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম প্রমুখ।

 

;

বিয়ে, ডিভোর্সের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ নিতে সাধনার প্রতারণা



ziaulziaa
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি, যিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা।

কুলসুম আসাদী মহল সাধনা নামে ওই নারীর চতুর্থ স্বামী দাবিদার ওই ব্যক্তির অভিযোগ, সাধনা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফিনল্যান্ডের নাগরিক। গত বছর প্রেমের সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের মাসখানেক পরই স্বামীর কাছে সাধনা মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করতে থাকেন।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী স্বামীর দাবি, সাধনা বিয়ের পর তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ টাকা দিতে চাপ দেন। সংসার টেকাতে বিয়ের দুই মাস পর যৌথ অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেন। এরপর দুই দফায় দেন আরও ১০ লাখ। এখন আবার তাকে মামলার জালেও ফাঁসানো হয়েছে।

থানায় করা এ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি ও বিয়ের কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাধনা এর আগেও তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রত্যেক স্বামীর কাছ থেকেই মামলা ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা।

জানা গেছে, মাধ্যমিক পাসের পর সাধনার প্রথম বিয়ে হয় সদ্য অবসরে যাওয়া সাবেক এক আমলার সঙ্গে। বিয়ের মাসখানেক পর ভেঙে যায় সেই সংসার। ১৯৯৬ সালে এক সহপাঠীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ২০০৬ সালে ভেঙে যাওয়া সেই সংসারে সাধনার দুই সন্তান রয়েছে।

এর পর সাধনা ২০১০ সালে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তাকে তৃতীয় বিয়ে করেন। আড়াই বছর টেকা ওই সংসার ভাঙে স্বামীর কাছে টাকা দাবি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার মধ্য দিয়ে। ওই স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর পর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহার করে।

ভুক্তভোগী সর্বশেষ স্বামীর ভাষ্য, প্রেমের সম্পর্কের পর ১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনে তিনি সাধনাকে বিয়ে করেন। ৭ মাস টিকে থাকা সেই সংসারে তারা একসঙ্গে ছিলেন গত ১৩ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে তিন মাসেরও বেশি সময় সাধনা বিদেশে ছিলেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন ওই ব্যক্তি।

ভুক্তভোগী স্বামীর দাবি, বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব, গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা, বিভিন্ন ক্লাবে মদ্যপান করাসহ হঠাৎ প্রায়ই নিরুদ্দেশ হয়ে যেতেন সাধনা। এসবের প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকি দেওয়া হতো। স্ত্রী সাধনা এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন।

সাধনার চতুর্থ স্বামীর অভিযোগ, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ, যৌতুক আইনে, বিয়ে গোপন করে বিয়ে এবং খোরপোশ দাবিতে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে। তবে বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে হওয়ায় খোরপোশের কোনো বিধান নেই।

গত ২৬ জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় ভুয়া ও জাল মেডিকেল সার্টিফিকেট ব্যবহার করেন সাধনা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার জালিয়াতির বিষয় আদালতেও জানিয়েছে।

বর্তমানে ৫১ বছর বয়সী কুলসুম আসাদী মহল সাধনার এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তার দাবি, তিনিই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

সাধনা রবিবার (১৭ মার্চ) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি যদি অর্থলোভী হই, দুশ্চরিত্রা হই, মানব পাচারকারী হই, দেহ ব্যবসায়ী হই, তাহলে তিনি (চতুর্থ স্বামী) আমাকে ডিভোর্স দেন না কেন? কারণ, ডিভোর্স দিলে তিনি ধরা পড়ে যাবেন, জবাবদিহি করতে হবে। আমার চরিত্র এত ঠুনকো না।’ প্রথম স্ত্রীর মামলা থেকে বাঁচতে তার স্বামী তাকে জড়িয়ে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলেও দাবি সাধনার।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি একটি বিয়ের কথা উল্লেখ্য করেন এবং তার আগের স্বামীর রেখে যাওয়া সন্তানরা দ্বিতীয় স্বামীর বলে উল্লেখ্য করেন। এ সময় সাংবাদিকরা তার আগের ৩ টা বিয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমি যা বলবো সেটাই ঠিক।

আদালতে আপনাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মামলা চলছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালত পুলিশ, সাংবাদিক, ও অ্যাডভোকেটরা আমাকে ঠকিয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগী একটি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গুলশান থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. শাহীন মোল্লা। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

অন্য একটি অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকতা এসআই (নিরস্ত্র) ফাইজুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সাধনা পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। মামলার বিবাদী সাধনা মহল বিদেশের নাগরিক। তার নাম-ঠিকানা-পরিচয় সব কিছু যাচাই করছি। যাচাই-বাছাই শেষে আমরা আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করবো।’

;