‘সব মানুষের কাছে সুস্বাদু ইলিশ পৌঁছাতে কাজ করছে সরকার’



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশের সব মানুষের কাছে পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও সুদৃশ্য ইলিশ পৌঁছাতে কাজ করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে মৎস্য জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ইলিশ মাছ সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২৩ উদযাপন করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের ধারাবাহিকতায় এবার ১ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করা হবে। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য 'করলে জাটকা সংরক্ষণ, বাড়বে ইলিশের উৎপাদন'। দেশের ইলিশ সমৃদ্ধ ২০ জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন করা হবে। ১ এপ্রিল পিরোজপুরের হুলার হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদ্বোধন করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় জনগণকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করা।

ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের নানা কার্যক্রম তুলে ধরে এ সময় মন্ত্রী বলেন, ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে মা ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধ সময় ২২ দিন নির্ধারণ, জাটকা নিরাপদে বৃদ্ধির জন্য ১ নভেম্বর হতে ৩০ জুন পর্যন্ত সারাদেশে ৮ মাস জাটকা ধরা, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, দেশের ইলিশ সমৃদ্ধ নদ-নদীতে ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম স্থাপন ও নির্দিষ্ট সময়ে এ অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, নিষিদ্ধকালে জেলেদের প্রতিবছর ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা প্রদান, জাটকা আহরণে বিরত অতি দরিদ্র জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প বাস্তবায়ন, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ফলে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরো বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এমন জাল যেমন বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সরকার আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে শুধু সমুদ্রে বা নদীতে নয় বরং যেখানে এসব অবৈধ জাল তৈরি হয় সেখানে আঘাত হানতে হবে। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে যেখানে বেআইনি জাল উৎপাদন হবে, সে কারখানায় আমাদের অভিযান চলবে। যারা জাটকা নিধনের চেষ্টা করবে, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি যে অঞ্চলে জাটকা ধরা হবে সে অঞ্চলে বরফ কল বন্ধ রাখা হবে। বাজারেও মোবাইল কোর্ট থাকবে। জাটকা পরিবহন ও বিপণনে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্ত্রী আরো জানান, জাটকা নিধনে সবচেয়ে ক্ষতিকর জাল ধ্বংসে ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৭টি জেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় বিশেষ কম্বিং অপারেশন পরিচালনার মাধ্যমে মোট ৯৮৭ টি মোবাইল কোর্ট ও ৩ হাজার ২২৬ টি অভিযান পরিচালনা করে ৭ হাজার ৫৪ টি বেহুন্দি জাল, ৫৪৯ দশমিক ১৯ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল এবং ১২ হাজার ৪৮ টি অন্যান্য নিষিদ্ধ জাল আটক করা হয়েছে।

শ ম রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, ২০২২ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে ৫২ শতাংশ ইলিশ প্রজননক্রিয়ায় অংশ নিতে পেরেছে যা ২০০১-০২ অর্থবছরের তুলনায় অনেক বেশি।

মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে সরকার জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২০ জেলার ৯৭ উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৯ টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৭ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বিতরণ চলমান রয়েছে।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, সারাবিশ্বের বিস্ময়কর সুস্বাদু ইলিশ যার ৮০ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়, যার জিআই সনদ আমাদের, এ ইলিশ যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটাই জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২৩ এর লক্ষ্য। একটা সময় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায় চলে যাওয়া ইলিশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আজ আমরা সর্বোচ্চ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়ে এসেছি। এ প্রক্রিয়ায় মৎস্যজীবী সংগঠন, নৌ পুলিশ, কোস্ট কার্ড, সাধারণ পুলিশ, সিভিল প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ইলিশ উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে চাই। ইলিশের স্বাদ সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। সুযোগ হলে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতে চাই।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী আশরাফ উদ্দীন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের আগে মন্ত্রী ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২ এর মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।

অশান্তি তৈরি করলে রাজপথে জবাব: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, শান্তি বিনষ্ট করে অশান্তি তৈরি করলে রাজপথে জবাব দেওয়া হবে।

শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া বেপারী পাড়া এলাকায় একটি সড়কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম.ই মামুনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মো. ইকবাল হোসেন, জিনজিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি মো. সাকুর হাসেন সাক প্রমুখ।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আগামী নির্বাচনে সবাইকে নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় এখন থেকে কাজ করার আহবান জানান। হারিকেন নিয়ে সড়কে মিছিলকারী বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য করে নসরুল হামিদ আরও বলেন, মুসলিম লীগের চেতনা আর পাকিস্তানের চেতনা নিয়ে তামাশা চলবে না। হারিকেন ছিল মুসলিম লীগের প্রতীক।

তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের আমলে ১৪টি বছর কেরানীগঞ্জের মানুষ অন্ধকারে ছিল। এখন কেরানীগঞ্জ নয় সারা বাংলাদেশের মানুষ আলোকিত। দেশের প্রতিটি গ্রামে আজ আলো পৌঁছে গেছে।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ৬৪ হাজার ২৭৭ হজযাত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজ পালনের জন্য আজ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬৪ হাজার ২৭৭ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

শুক্রবার (৯ জুন) ঢাকায় হজ অফিসের এক বুলেটিনে জানানো হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৩৫০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৪ হাজার ৯শ’২৭ জন হজ যাত্রী বিভিন্ন হজ ফ্লাইটে সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

এছাড়া সৌদি আরবের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে ১০ হাজার ৪৫৯ জন হজ যাত্রী স্বয়ংক্রিয় চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করেছেন।

এবার মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৭৯ টি হজ যাত্রী ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। বাকি ভিসাও শিগগিরই পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ হজ অফিস মক্কার কনফারেন্স কক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) এবং প্রশাসনিক দলের দলনেতা মো. মতিউল ইসলামের সভাপতিত্বে হজ প্রশাসনিক দলের নিয়মিত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে কাউন্সিলর (হজ) মো. জহিরুল ইসলাম, কনসাল (হজ) মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিমানের শেষ হজ ফ্লাইট যাবে আগামী ২২ জুন। গত ২১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স এসব হজযাত্রী পরিবহন করবে।

আগামী ২ জুলাই হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। শেষ ফিরতি ফ্লাইট হবে ২ আগস্ট।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে মক্কায় ২ জন মহিলাসহ ৮ জন হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন।

;

মায়ের শাড়ি মুড়িয়ে দাফন করা হবে সিরাজুল আলম খানকে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাসদের প্রবাদ পুরুষ ও বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানকে (দাদা ভাই) তার ইচ্ছে অনুযায়ী মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে নোয়াখালীতে শায়িত করা হবে।

শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলজে হাসপাতালে প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের ভাতিজি ব্যারিস্টার ফারা খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল থেকে মোহাম্মদপুরের মারকাজুল ইসলামে গোসলের জন্য মরদেহ নেওয়া হবে। সেখান থেকে শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রথম জানাজা হবে। তারপর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলীপুর প্রামে নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। সেখানে জানাজা শেষে তার মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে সেখানেই সমাহিত করা হবে।

সিরাজুল আলম খানের ছোট ভাই ফেরদৌস আলম খান জানান, বড় ভাইয়ের শেষে ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে গ্রামের বাড়ি বেগমগঞ্জে মায়ের কবরে মায়ের একটি শাড়িতে মুড়িয়ে সমাহিত করা হবে। জীবনের অন্তিম পর্যায়ে এসেও চান না কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মান। পরিবারকে জানিয়েছেন সে কথাও।

মৃত্যুকালে সিরাজুল আলম খানের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক এবং মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন তিনি।

;

আরপিও সংশোধনী বিল পাস হলে ইসির ক্ষমতা খর্ব হবে: টিআইবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা আরও খর্ব করবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস করা হলে কমিশনের কাছে নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘনের কারণে যৌক্তিক বিবেচিত হলে যেকোনো নির্বাচনী এলাকায় চলমান নির্বাচন বাতিলের যে ক্ষমতা বিদ্যমান আইনে রয়েছে, তা কেড়ে নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

শুক্রবার (৯ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বলেছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, জাতীয় সংসদে উত্থাপিত সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী এই ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য, বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(ক) ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতি প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন না, তালে যেকোনো ভোটকেন্দ্র [বা, ক্ষেত্রমতে, সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায়] নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ‘যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা, ক্ষেত্রমতে, সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে’, এই বিধানটিকে সুকৌশলে বাতিল করে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ (পোলিং) বাতিল করার মধ্যে কমিশনের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এই সংশোধনীটি আইনে পরিণত হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কমিশনকর্তৃক নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা থাকবে না।

বিষয়টিকে নির্বাচনী ব্যবস্থায় ‘মড়ার ওপর খাড়ার ঘা’ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গত বছর অক্টোবরে সিসিটিভি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছিল কমিশন। কমিশনের এই পদক্ষেপ ক্ষমতাসীন দলের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে মর্মে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মধ্যে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, এই সংশোধনী তার যথার্থতাই প্রতীয়মান করে। সংশোধনীতে প্রস্তাবিত ‘ইলেকশন’-এর স্থলে ‘পোলিং’ শুধু শব্দগত পরিবর্তন নয়, এর ব্যাপকতা আরো অনেক বেশি। এই বিল পাসের মাধ্যমে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হলে তা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা সম্পর্কে আস্থাহীনতার সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, গাইবান্ধা-৫ এর মতো দুয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম হবে এমন প্রত্যাশার পেছনে যুক্তি যেখানে একান্তই বিরল; বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকার সম্ভাবনা যেখানে মরিচীকার মতো, সেখানে এই সংশোধনী কমিশনের বিদ্যমান আইনগত সক্ষমতা যতটুকুই রয়েছে তাকেও নিজেদের স্বার্থে আরও গণ্ডিবদ্ধ করার উদ্যোগ ছাড়া কিছুই নয়। নির্বাচনী অনিয়ম রোধে কমিশনের ক্ষমতা এভাবে খর্ব করা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ঋণখেলাপী ও বিলখেলাপীদের জন্য সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যমান আদেশে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সাত দিন আগে ব্যাংকঋণ ও বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধের অনুলিপি জমা দেয়ার বিধান থাকলেও, সংশোধনীতে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত সে সুযোগ রাখা হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে, ঋণখেলাপী ও বিলখেলাপীদের নির্বাচনে উৎসাহিত করা হচ্ছে- এমন ধারণা জোরালো হওয়া মোটেই অমূলক নয়।

উল্লিখিত সংশোধনী প্রস্তাবটি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার চর্চার স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

;