অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি না থাকায় হুমকির মুখে কৃষি



তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ ও অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি না থাকায় আমদানিকৃত খাদ্যশষ্য ও বীজ দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলা ফসল সংগ্রহোত্তর ক্ষতি, কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও বিতরণসহ ক্রমহ্রাসমান আবাদি জমিতে ক্রমবর্ধমান বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বাংলাদেশের কৃষির জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অন্যের সংস্থানের জন্য একদিকে বিদেশ থেকে কৃষি পণ্য সামগ্রী আমদানি করা হচ্ছে, অন্যদিকে শস্য বীজও আমদানি করতে হচ্ছে। বাজারে দেশীয় বীজের সরবরাহ একেবারেই কম। আগে হাট বাজারে দেশি শস্যের বীজ মিললেও এখন তা দুষ্প্রাপ্য। দেশীয় উৎপাদনে চাহিদা মেটাতে না পেরে চায়না, ভিয়েতনাম, ভারত, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, মিশরসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চফলনশীল জাতের বীজ ও কৃষিপণ্য আমদানি করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আমরা আমাদের প্রয়োজনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি পণ্য আমদানি করলেও আগত কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়টি সব সময় গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ফলে বিদেশ থেকে ফসলের নানা ক্ষতিকর পোকামাকড়, রোগজীবাণু দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বালাইয়ের আক্রমণে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান কে বলেন, আমরা সবসময় পরিবেশের কথা চিন্তা করে কাজ করি। কৃষিজ পণ্য বা বীজ আমদানির ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে নিরোধ কেন্দ্রের কার্যকারিতা বাড়াতে হবে। তা না হলে নানা ধরনের রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সময়ে ফসলে নতুন পোকা বা ফসলের রোগ দেখি যা আমাদের ছোট সময়ে দেখিনি। অনেক সময়ে বিদেশ থেকে আনা বীজে ফসল না হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিদেশি কোনো কৃষিজ পণ্য আমদানি আগেই পণ্যগুলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুর্যোগকালীন প্রয়োজন হয় খাদ্য বা কৃষি পণ্য আমদানির। তাছাড়া সব ফসল, ফল-মূল জলবায়ুজনিত কারণে আমাদের দেশে উৎপাদন সম্ভব নয়। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় কৃষি পণ্য আমদানির। উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজন সর্তকতার। পণ্য আমদানিতে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা না হলে বিদেশ থেকে ফসলের নানা ক্ষতিকর পোকামাকড়, রোগজীবাণু দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বালাইয়ের আক্রমণে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

কৃষিমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পৃথিবীর সব দেশেই কৃষি পণ্য আমদানি ও রফতানির কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে বর্তমানে মোট ৩০টি বন্দরে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫টি বন্দরে (বেনাপোল, হিলি, বুড়িমারি, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়) বীজ পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। বাকি ২৫টির অধিকাংশইর এ সার্ভিসটি নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, আমদানিকৃত পণ্যের সাথে পরিবাহিত হয়ে ধ্বংসাত্মক পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের জীবাণু দেশের অভ্যন্তরে বা আমাদের দেশ থেকে অন্যান্য দেশে অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধ করার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হচ্ছে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ বা প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন। বাংলাদেশে আমদানি ও রফতানি প্রায় ৯২ শতাংশ সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রামের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বিদেশ থেকে আগত কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদানের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হলেই কেবলমাত্র ছাড়পত্র দিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) উপপরিচালক (আমদানি) মুহাম্মদ লিয়াকত হোসেন খান বলেন, আমদানির দুটি পর্যায়ে আমরা কাজ করি একটি খাদ্য শস্য, অন্যটি বীজ। তবে প্রতিটি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমরা আমদানিকারকেরদের কিছু শর্ত দিয়ে থাকি যা তাদের অবশ্যই মানতে হয়। সকল ক্ষেত্রেই আমরা সকলকে পণ্য বা বীজ বাধ্যতামূলক ভিউমিগেশন (ধোঁয়ার মাধ্যমে জীবানু মুক্ত) করার পরে জাহাজকে বা পবিহনের জন্য তুলতে হয়। আমাদের দেশে আসলে বন্দর এলাকার নমুনা সংগ্রহ করে তার (তিনদিন সংরক্ষণ) কালচার করে। পরীক্ষায় উন্নিত হলে পণ্য ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়। ল্যাবরেটরির মান বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর নেননি। তবে এটা সত্য আমাদের সব কেন্দ্র সকল সুবিধা নেই। ৫টি কেন্দ্র বীজ পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

সূত্র জানায়, সীমিত কৃষি জমির সর্বোত্তম ব্যবহার, শস্য চাষের নিবিড়তা বৃদ্ধি, উন্নত কৃষি ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করেও বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগান দেওয়া কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে গত অর্থবছরে এক কোটি ৮৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্ভিদ ও উদ্ভিজাত পণ্য আমদানি করতে হয়েছে যা মাত্র পাঁচ বছর পূর্বেও ছিল মাত্র এর অর্ধেকেরও কম। তাছাড়া যে পরিমাণে আমরা পণ্য আমদানি করি তার মাধ্যমে যেকোন পণ্য দিয়ে বা যেকোন ভাবে বিদেশ থেকে ফসলের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর বালাই দেশে প্রবেশ করে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত করে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। গমের ব্লাস্টের কারণে উৎপাদন কমেছে প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন আবার ভুট্টার ফল অর্মি ওয়ার্ম প্রবেশের মাধ্যমে আশানুরূপ ভুট্টার ফলন পাওয়ার সম্ভবনা কম।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণে দানাদার খাদ্যশস্যের পাশাপাশি শাক সবজি ও ফলমূল উৎপাদনে দেশে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। শাক-সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। কিন্তু উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য রফতানির এক বিশাল সম্ভবনা থাকলেও সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। আমাদের দেশে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে এখনো অর্গানিক ফার্মিং/ কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ব্যাপক প্রসার ঘটেনি। ফলে প্রথাগতভাবে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক, সার ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে। আর কনট্রাক্ট ফার্মিং ছাড়াই কৃষিজাত এই সব পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত তাতে কি কি ইনপুট (সার, কীটনাশক ইত্যাদি) কি মাত্রায় কখন প্রয়োগ করা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে শাক সবজি সংগ্রহ করে কীটনাশক অবশিষ্টাংশের বিষক্রিয়ার মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত কোনো ল্যাবরেটরি না থাকায় দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য এম.আর.এল অথবা একসেপটেবল ডেইলি ইনটেক (এডিআই) মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কোন অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি নাই। বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র এবং ইন্টারন্যাশনাল প্লান্ট প্রটেকশন কনভেনশন (আইপিপিসি) এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড আর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও) এর বিধি বিধান অনুসরণ করা সকল দেশের জন্য বাধ্যতামূলক। এ বিধি-বিধান অনুসরণ করার জন্য পৃথিবীর সকল দেশই আলাদাভাবে স্বতন্ত্র স্বাধীন সংস্থা সৃষ্টি করেছে যা বাংলাদেশে হয়নি। ফলে বাংলাদেশে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কার্যক্রম গতি লাভ করছে না। উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করা হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি, কৃষিজাত পণ্য আমদানি-রফতানিতে ও প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন কাযক্রমে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি না থাকায় যে কোনো সময় অজানা বিদেশি ধ্বংসাত্মক রোগজীবাণু প্রবেশ করে খাদ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ঢাকার শ্যামপুরস্থ কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ একটি ল্যাবরেটরি রয়েছে। সেটাকে আন্তর্জাতিক মানের করার কাজ চলছে বলে জানাগেছে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

   

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত শাস্তি দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মৌলভীবাজারে বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা খুবই মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক। এই ঘটনায় মূল দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে 'বিজনেস ডাইজেস্ট' পরিচালিত 'মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মৌলভীবাজারের ঘটনা তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা একটি পরিবারের জন্য কিছু করতে পারলাম না, কিন্তু এমন শত শত পরিবারের জন্য আমাদের করণীয় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অধিকার বিষয়টি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণমাধ্যমের নিত্য চর্চার বিষয়। গণমাধ্যম সকল অনিয়মকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, মানুষকে তাদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতেই আমরা সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারি।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ জনগণের মাঝে সংবিধান, আইন ও অধিকার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জ্ঞানের প্রসারের জন্য সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আহবান জানান।

আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি নিয়ে বলেন, বিগত বছরগুলোতে সংঘটিত নিমতলি, নিউমার্কেট ও বঙ্গবাজারে বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো থেকে আমরা যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ করিনি। আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হতো।

;

অনিয়মে বাধা দেয়ায় এলজিইডি কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে সড়ক পাকাকরণের কার্পেটিং কাজে বিটুমিন কম দেওয়ায় প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডির ১ কর্মকর্তা ও ২ কর্মচারীকে মারধর করেছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালের দিকে সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের উত্তর শর্শদি কেল্লাশাহ সড়কের নিমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিষয়টি জানাজানি হলে জেলাজুড়ে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, ফেনী সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপ সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা, কার্যসহকারি মো. বেলাল হোসেন মজুমদার এবং নৈশপ্রহরী মো. নুরুল আবছার রাজু।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) এলজিইডির সদর উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে কাজে অনিয়ম দেখতে পান। পরবর্তী বুধবার সকালের দিকে আবার পরিদর্শনে গেলে সড়কে বিটুমিনের পরিমাণ স্পেসিফিকেশনের তুলনায় কম দেখতে পান। ত্রুটি সংশোধন করে পুনরায় বিটুমিন মিশ্রণ করতে মৌখিক নির্দেশনা দেন তিনি।

এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সোহেল ও শ্রমিকদের মাঝি মোফার নেতৃত্বে শ্রমিকরা তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে উপসহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানাকে তারা মারধর শুরু করে। তাকে বাঁচাতে এলে কার্যসহকারি বেলাল হোসেন মজুমদার, নৈশপ্রহরী নুরুল আবছার রাজুকেও মারধর করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ও শ্রমিকরা।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, উত্তর শর্শদি থেকে ধোপাখিলা এলাকার কেল্লাশাহ সড়কের ৯৭০ মিটার সড়ক পাকাকরণের কাজের কার্যাদেশ পান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আহাদ নয়নের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নয়ন এন্টারপ্রাইজ। কার্যাদেশ অনুযায়ী ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দের এ সড়কের কাজ গত ২১ মার্চের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশনা ছিল। অথচ দুয়েকদিন আগে সড়কে বিটুমিন দেওয়া শুরু হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাস গুপ্ত বলেন, ঘটনাটি এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, উন্নয়ন কাজে অনিয়মের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। এ ব্যাপারে সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। অনিয়ম করে কারো পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আবদুল আহাদ নয়ন প্রবাসে অবস্থান করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় একটি অবহিতকরণ পত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;

রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা

রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ১৩ অঞ্চলে রাতের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এছাড়া মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

পাশাপাশি এই সময় সারাদেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

;

বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী

বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা দেশে আরও ১ হাজার ৩৩৩টি শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। 

তিনি বলেন, বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বিশেষ ‘প্রকল্প পর্যালোচনা সভা’য় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ম্যাপসহ মালিকানাভিত্তিক খতিয়ান চালু করা সম্ভব হবে এবং খতিয়ানে দাগ শেয়ার করতে হবে না। ম্যাপ সংযুক্ত মালিকানাভিত্তিক খতিয়ান প্রণয়ন করা সম্ভব হলে ভূমি নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা ও সীমানা বিরোধ অনেকাংশে কমে যাবে।

এ সময় বিডিএসকে একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালককে অগ্রাধিকার দিয়ে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

সভায় অবহিত করা হয় যে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা এবং ধামরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ইডিএলএমএস প্রকল্পের (ইস্টাবলিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রকল্প) মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

খুব শিগগিরই আরেকটি প্রকল্পের রিভিউ শেষ হলে পটুয়াখালী, বরগুনা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ জেলার ৩২টি উপজেলায়ও বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে 'বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে' পরিচালনা করা হবে বলেও সভায় জানানো হয়।

ভূমিসচিব খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় ভূমি মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

;