সমুদ্রে মৎস্য শিকারে আর লাইসেন্স দেবে না সরকার



তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমুদ্রগামী মৎস্য শিকারে উপযোগী জাহাজ নির্মাণ, আমদানি কিংবা শিকারের জন্য নতুন করে আর লাইসেন্স বা অনুমোদন দেবে না সরকার।

সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত (সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা ২০২৩) বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।

বিধিমালা অনুযায়ী, সমুদ্রে আহরণযোগ্য মৎস্য সম্পদের পরিমাণ নিরুপণ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে আর কোনো নৌযান আসছে না। নতুন করে সমুদ্রে মৎস্য শিকার উপযোগী পরিমাণ নির্ধারণ সাপেক্ষে জাহাজের অনুমতি দেয়া হবে। এ জন্য জরিপ করাতে হবে। জরিপ শেষে প্রয়োজন হলে নতুন জাহাজের অনুমতি দেবে সরকার। তবে, নৌযান ডুবে গেলে বা দুর্ঘটনায় ব্যবহারের অনুপযোগী হলেই শুধু নতুন লাইসেন্স দেয়া হবে।

কাঠের ট্রলারের বিষয়ে বলা হয়েছে, নতুন করে কোনো কাঠের ট্রলারের নকশা, আমদানি করার সুযোগ নেই। তবে কোনো মালিক যদি কাঠের ট্রলারের লাইসেন্স জমা সাপেক্ষ স্টিলের জাহাজ নামাতে পারবেন। বাণিজ্যিক ট্রলার নিষিদ্ধকরণে বলা হয়েছে- বিধিমালা কার্যকরের ৫ বছর অতিবাহিত হলে তা বটম ট্রলিং থেকে মিড ওয়াটার ট্রলিং ট্রলারে রূপান্তর করা যাবে। তবে আগের লাইসেন্সটি জমা দিয়ে নতুন লাইসেন্স নিতে হবে।

চিংড়ি পোনা বা ব্রুড আহরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- চিংড়ি পোনা বা ব্রুড আহরণে বাণিজ্যিক জাহাজকে বটম ট্রলিং করতে হলে জাহাজের বয়স কোনো ক্রমেই ১০ বছরের বেশি হবে না।

অবৈধ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারি অনুমতি ছাড়া মৎস্য শিকারে বা জলসীমায় প্রবেশ, সরকারি আইন ও বিধিমালায় উল্লেখিত নিয়মকানুন পরিপালনে ব্যর্থ হলে, একই অপরাধ বা জরিমানা বার বার (তিনবার) হলে সংশ্লিষ্ট নৌযান বাতিল বা অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

আহরিত মৎস্য প্যাকেটজাত করার ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে জাহাজের নাম উল্লেখ করে ট্যাগ লাগানো প্যাকেটের ওজন সর্বোচ্চ ১৫ কেজি করা, বাস্কেটে প্যাকেট করা হলে তা বরফ ও মাছ সমানুপাতে করতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রফতানিমুখী হলে বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী প্যাকিং করা যাবে বলেও বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিদেশি জাহাজের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশের সমুদ্রসীমায় মৎস্য শিকার করলে সেদেশের প্রতিনিধি বা অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের অফিস থাকতে হবে। যেখানে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা ও মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি পরিচালনা করা যাবে। জাহাজটি কখন কোথায় যাচ্ছে বা কি কি মাছ শিকার করছে বা কোন জায়গায় মাছ শিকার করছে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি প্রশাসনকে জানাতে হবে।

মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরা বা শিকার বন্ধ থকবে। তবে এটি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময় পরিবর্তন হতে পারে। সে সময়ে সকল মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। তবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ধৃত মাছ মজুদ ও সংরক্ষণ করা যাবে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। ইলিশ মাছ ধরা বা জাটকা ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়েও সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে। এ সময়ে মাছ ধরার জন্য কোনো জাহাজকে সমুদ্রে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে গবেষণা জাহাজ এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থকবে। নিয়মানুযায়ী সরকার কর্তৃক জাটকা ২৫ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। যেটি পরিবর্তনযোগ্য।

প্রত্যেক জাহাজকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রয়োজনীয় (জীবন রক্ষাসহ) যন্ত্রপাতি ও উপকরণ, অনুমতিপত্র, লাইসেন্স, রেডিও, পরিচয়পত্র, জাহাজে সংরক্ষণ করতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জাহাজের মাস্টার ব্রিজের বাইরে দৃশ্যমান নাম লিখতে হবে। যাতে দূর থেকে বোঝ যায়। এ ছাড়াও, বাংলাদেশের জলসীমায় গ্রেফতার বা আটক প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, জলীমায় অবৈধভাবে কাউকে আটক করা হলে গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে তথ্য বেতার বা ইমেইলে সংশ্লিষ্টদের জানাতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। বিদেশিদের ক্ষেত্রেও আটককৃতদের সকল তথ্য স্থানীয় প্রশাসনকে বিস্তারিত জানাতে হবে। প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক বলেন, সমুদ্র মৎস্য গবেষণা জাহাজ আরভি মিন অনুসন্ধানী এবং গবেষণা ইউনিটকে কাজে লাগিয়ে আমরা গবেষণার কাজ করছি। আমরা চাই পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে অন্যান্য দেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে। আমাদের দেশে উপকূলীয় এলাকার অনেক মানুষ রয়েছেন যাদের প্রধান জীবিকা হচ্ছে মৎস্য শিকার। রয়েছে হজার হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও আর্টিসান বোট। এগুলো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিকল্পিত মৎস্য আহরণ জেলেদের জীবন মান উন্নয়নে সহায়ক হবে সরকারের এ উদ্যোগ।

তিনি আরো বলেন, সামুদ্রিক একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) মৎস্য জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে চিংড়ি, তলদেশীয় এবং ভাসমান প্রজাতির মৎস্যের মজুদ নিরূপণ, আহরণ, মৎস্য মজুদ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মপরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ৩৪টি থেকে ৬৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, কোথায় কোন মাছ পাওয়া যচ্ছে, কী পরিমাণ আসছে সব তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধিকাংশ সামুদ্রিক মৎস্য অগভীর সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় আহরণ করা হয়ে থাকে। জাহাজের সক্ষমতা ও যথাযথ ফিশিং প্রযুক্তির অভাবে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা হয় না। বর্তমানে আমাদের মৎস্য আহরণ উপকূল থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে সীমাবদ্ধ। সুনীল অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। বর্তমানে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের অবদান ছিল মাত্র ১৫-২০ শতাংশ (০.৬৫৯ -৭০০মিলিয়ন মে. টন মৎস্য) এ কাজে ২৫৫টি বাণিজ্যিক ট্রলার এবং ৬৭ হাজার ৬৬৯টি আর্টিসানাল নৌযান (এর মধ্যে যান্ত্রিক ৩২ হাজার ৮৫৯টি এবং অযান্ত্রিক ৩৪ হাজার ৮১০টি মৎস্য নৌযান) মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত হয়। তবে এ মাছের সিংহভাগই আসে আর্টিসানাল থেকে।

সূত্র আরো জানায়, দেশের অধিকাংশ মাছ ধরা ট্রলার চলাচল বা মাছ ধরে ৪০ মিটার গভিরতার মধ্যে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ফিশিং বোট ৪০-১০০ মিটার পানির গভীরে চলাচল করে। এগুলো সাধারনত বাগদা চিংড়ি এবং ফিন ফিশ আহরণে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রপার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইলিশ মাছ। বর্তমানে বিশ্বের ৫০-৬০ শতাংশ ইলিশ মাছ বাংলাদেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জলরাশিতে, ২০-২৫ শতাংশ মিয়ানমারে, ১৫-২০শতাংশ ভারতে এবং অবশিষ্ট ৫-১০ শতাংশ অন্যান্য দেশে আহরিত হয়। এখনও পর্যন্ত দেশে মৎস্য আহরণ সনাতন কৌশল ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পুরনো কৌশল ব্যবহার হতে বের হয়ে আসতে হবে এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান মৎস্য আহরণ ক্ষেত্রের বাইরে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত গভীর একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ গভীর সমুদ্র থেকে বিশালাকার পেলাজিক মৎস্য আহরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই নতুন নতুন মৎস্য ক্ষেত্র অনুসন্ধানের লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মৎস্যের স্টক/মজুদ নির্ণয়ের জন্য জরিপ সম্পাদন করতে হবে। ২০১৮ সালে আরভি মিন সন্ধানি নামক জাহাজ বঙ্গোপসাগরে একটি মৎস্য জরিপ ও মৎস্য ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রাথমিক গবেষণা করেছে। তবে সুনীল অর্থনীতির পুরোপুরি সুফল পেতে আরো বেশি পরিমাণে এ ধরনের জরিপ সম্পাদন প্রয়োজন।

মৎস্য অধিদপ্তরের (সামুদ্রিক শাখা) উপপ্রধান কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ তানভীর হোসেন চৌধুরী বলেন, সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্যই সরকার এ বিধিমালা জারি করেছে। দেশের সমুদ্র সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্ব অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিধির প্রচলন করা যাবে।

   

হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র এই দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গায় আজ সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জাকিরের বাবা আমির হোসেন বলেন, তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। তাই জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।

এদিকে, দুপুরে পাবনায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে সুকুমার দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।

জানা গেছে, পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সুকুমার দাস। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, কয়েক দিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

;

হাজারীবাগে ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে রফিকুল (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে হাজারীবাগ বায়তাল মহারম মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে।

রফিকের সহকর্মী মো. শাহিন জানান, রফিকের বাড়ি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় থাকতেন তিনি। হাজারীবাগের ওই ভবনে রড মিস্ত্রীর কাজ করতেন।

তিনি আরও জানান, সকালে ওই ১০তলা ভবনের ছাদে সেন্টারিংয়ের টিনের সিট খুলছিলেন রফিক। এ সময় অসাবধানতাবসত ১০তলা থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা ওই শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

;

গৌরীপুরে শসার মণ ১শ টাকা, লোকসানে চাষিরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে, ৮০-১০০ টাকা দরে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেতের শসা ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে ক্ষেতেই ফেলে দিচ্ছেন অথবা কেউ ক্ষেত থেকে শসা তুলছেনই না!

উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ৮০-৯০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেও এখন তো ক্ষেতেই যাই না। কারণ, শসা ৮০-১০০ টাকা মণ দরে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। ক্ষেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে। ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।

মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ দরে বিক্রি করেছি। বাজার দরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা, খরচ তোলাই তো দায় হয়ে পড়েছে!

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর থেকে বস্তায় করে শসা সিলেটে পাঠানো হচ্ছে, ছবি- বার্তা২৪.কম

ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১শ টাকা মণ দরে কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণে। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়ৎদারকে দিতে হয় ২০ টাকা। লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা। বস্তা কিনতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না। লোকসান গুণতে হচ্ছে।

ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২/৩ লাখ টাকা করে লস হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরের কৃষকেরা বেশি পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছেন এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। সে কারণে দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।

 

;

একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ

একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রত্যাশার একদিন আগেই দস্যুমুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার আশা করছেন মালিকপক্ষ। আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা নাগাদ জাহাজটি বন্দরে নোঙর করবে। এর আগে ২২ এপ্রিল জাহাজটি দুবাইয়ে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ। তবে জাহাজটির বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী দ্রুতই দুবাই অভিমুখে এগিয়ে চলায় আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে তারা।

জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা নাগাদ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে। সেখানে বার্থিং শেষে আরও ৪-৫ দিনের আনুষ্ঠানিকতা আছে। তারপর ২১ নাবিক জাহাজটি নিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে। দুজন আসবেন উড়োজাহাজে।’

মালিকপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা ছয়টার সময় জাহাজটি হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাতে পারে। তবে সেখানে বন্দরের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী সেখানে বার্থিং ২৪-৩২ ঘণ্টা বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর জোয়ারের সময় এই বার্থিং হতে পারে। মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম নাবিকদের গ্রহণ করতে দুবাই যাচ্ছেন।

১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাবার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ।এরপর জাহাজটিকে নিজেদের উপকূলে নিয়ে যায় দস্যুরা। সেখানে প্রায় এক মাস ধরে নাবিকদের জিম্মি করে রাখে তারা। এর ৩৩ দিন পর মুক্তিপণের অর্থ পেয়ে ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর গন্তব্য দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।

সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ। দস্যুমুক্ত হওয়ার পর নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআরের যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। এর মধ্যে এডেন উপসাগর পর্যন্ত সাগর নিরাপদ নয়। এডেন উপসাগর পার হওয়ার পর যুদ্ধজাহাজগুলো এমভি আবদুল্লাহকে বিদায় দিয়ে নিজেদের গন্তব্যে ফিরে যায়। অবশ্য জাহাজে নিজস্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এমভি আবদুল্লাহর রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতার, ডেকে ফায়ার হোস, জাহাজে নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত এলাকা সিটাডেল, ইমার্জেন্সি ফায়ার পাম্প এবং সাউন্ড সিগন্যাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া সমুদ্র পথে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নকারী এবং ঝুঁকি হ্রাসে পরামর্শদাতা এমব্রেই গার্ডিয়ান সার্ভিস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ এসআর শিপিং। আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত জাহাজটির চারপাশে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা ক্যাপ্টেনকে জানাবে প্রতিষ্ঠানটি। 

;