সিরাজগঞ্জে রং-সুতার মূল্য বৃদ্ধিতে ১ লাখ তাঁত বন্ধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিরাজগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং ও রং-সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে তাঁত কারখানাগুলোতে ধস নেমেছে। ফলে ১ লাখ তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছেন।

সুতার বাজারমূল্য বাড়ার সঙ্গে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। যার কারণে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে তাঁত মালিকদের। তাঁত সমৃদ্ধ এই জেলায় ৩ লাখ তাঁত কারখানার ইতিমধ্যে ১ লাখ কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

শুক্রবার (৯ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানা মালিকেরা ডিজেল চালিত জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ দিয়ে তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করলেও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁত মালিকদের বিদ্যুৎ বিলও দিতে হচ্ছে আবার জেনারেটরও চালাতে হচ্ছে। এতে শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা উৎপাদনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে তাঁত মালিকদের। এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা। পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিন কাটছে তাদের।

জেলার বেলকুচি, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, এনায়েতপুর, রায়গঞ্জ, চৌহালী ও কাজীপুরে কম বেশি তাঁত কারখানা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হয়। উল্লাপাড়া, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুর, পাঁচিল বাজারে সপ্তাহে দুই দিন কাপড়ের হাট হয়। এই হাটে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন। বর্তমানে যে পরিমান উৎপাদন হচ্ছে তাও হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেকেই তাঁত কারখানা বন্ধ রাখছেন। আবার বর্তমান সুতার বাজারমূল্য যা রয়েছে তাতে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এতে করে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

তাঁত শ্রমিকেরা জানান, মহাজন কাপড় বিক্রি করতে পারে না, তাই কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। আগে সারা দিনে একজন শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকার কাজ করতেন। এখন সারা দিনে একজন শ্রমিক ৩০০-৪০০ টাকার কাজ করছেন। যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতো এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিকেরা।

তাঁত মালিকেরা জানান, জেলায় প্রায় তিন লাখ তাঁত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি হয়। সুতায় রং দেওয়া, শুকানো, সুতা তৈরি ও কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রতি তাঁতে ৩-৪ জন শ্রমিক প্রয়োজন। এতে মালিক কর্মচারী মিলে প্রায় চার লাখ শ্রমিক এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

বেলকুচি উপজেলার তাঁত মালিক হাজী শাহীন প্রামাণিক বলেন, বর্তমানে আমরা দুর্বিসহ জীবন যাপন করছি। দিনের বেলায় ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময় তেল, ডিজেল দিয়ে জেনারেটর এর সাহায্যে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে প্রচুর খরচ বেড়ে যায় এবং শ্রমিক থাকে না। বর্তমানে কাপড় ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছে। এর পর শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে কাপড় উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

সাউথ এশিয়া হাইটেক সাটেল ইন্ডাস্ট্রিজ এর ম্যানেজার (আমদানি-রফতানি) অনিমেষ সরকার বলেন, বর্তমানে তাঁত শিল্পে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের ৪০টি তাঁত মাত্র দুজন শ্রমিক কাজ করছে। আমাদের লুঙ্গি উৎপাদন হচ্ছে না শ্রমিকদের বেতন দেব কি করে। প্রতি সপ্তাহে শ্রমিকদের ঠিকই বেতন দিতে হচ্ছে। শ্রমিকেরা না আসার কারণ হচ্ছে তাদের মজুরি বাড়াতে হবে। কিন্তু বাজারে রং-সুতার যে দাম তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না, ফলে মালামাল বিক্রি করতে পারছি না। শ্রমিকদের মজুরি কীভাবে বাড়াব।

বেলকুচি লাকী সেভেন কটেজের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে তাঁতের দুর্দিন চলছে। তাঁত প্রায় বন্ধের পথে। সুতার দাম বেড়েছে কয়েকগুন। সে তুলনাই কাপড়ের দাম বাড়েনি। শ্রমিকদের ঠিকমতো বিল দিতে পারি না। এই শিল্পের ওপর সরকারের নজর নাই। সরকারের কাছে দাবি এই তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে হলো রং-সুতাসহ সকল কাঁচামালের দাম কমানোর। তাহলে এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।

উপজেলার তামাই গ্রামের শ্রমিক শাহ আলম বলেন, তাঁত শিল্পের অবস্থা ভালো না। ঈদের আগ থেকেই মহাজনের কেনাবেচা ভালো না। মহাজন কাপড় বেচতে পারে না এ জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করেছে। প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা কাজ হয়েছে। এখন ৩০০-৪০০ টাকা হয় না। বিল চাইলে কয় কাপড় বেচতে পারি নাই। আমরা কি করি। কীভাবে সংসার চলে।

আরেক তাঁত শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, যে কারখানায় কাজ করেন, সেখানে ৩০টি তাঁতের বেশীর ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। মাত্র কয়েকজন শ্রমিক এখন ১০টি তাঁত চালাচ্ছেন। তবে ঈদের পরে বাকি তাঁতগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁতগুলো বন্ধ হয়ে গেলে বেকার হয়ে পড়ার পর কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই দরিদ্র তাঁত শ্রমিক।

বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি হাজী বদিউজ্জামান বলেন, এই জেলাকে তাঁত কুঞ্জু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় ৩ লাখ তাঁত রয়েছে। এই তাঁতে আমরা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে থাকি। করোনার সময় তাঁতের ব্যবসার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আশা ছিল আমাদের ব্যবসাটা ভালো হবে। কিন্তু করোনার পরে তাঁত শিল্পের জন্য যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে রং, সুতা, তুলা সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যার কারণে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এটি একটি বড় সমস্যা।

অনেক শ্রমিক ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে গেছে। অনেকে দেশের বাহিরেও চলে গেছে। যে কারণে শ্রমিক সংকট চলছে। আরেকটি কারণ রয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের সমস্যা। জেনারেটর দিয়ে তাঁত চালাইতে গেলে দেখা যায় ১ লিটার তেলের দাম ১১০ টাকা। জেনারেটর দিয়ে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে খরচ বেশি হচ্ছে। যে কারণে কাপড় উৎপাদন করতে পারছিনা।

সবকিছু মিলেই আজ তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। জেলায় ৩ লাখ তাঁতের মধ্যে ১ লাখ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এর মূল কারণ শ্রমিক সংকটও কাঁচা মালের দাম বেশি। সরকার যদি তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে চায় তাহলে তাঁত মালিকদের জন্য একটি তাঁত ব্যাংক করা প্রয়োজন। এই ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁতিদের স্বল্প সুদে তাঁত লোন দেওয়া হয় তাহলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। না হলে এই শিল্প ধংস হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বেলকুচি-চৌহালী উপজেলার লিয়াজোঁ অফিসার তন্বী হোসেন বলেন, আমরা তাঁতিদের স্বাবলম্বী করতে তাদের লোন দিয়ে থাকি। আগে আমাদের লোন ছিল ১৩ হাজার টাকা। এখন আমরা সেই লোন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন দিচ্ছি। ১৯টি তাঁত যাদের আছে তারা প্রান্তিক তাঁতি। তাদের জন্য আমরা লোনের ব্যবস্থা করেছি। তাঁতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। দুর্যোগ সময়ে তাদের সহযোগিতা করে থাকি।

   

খুলনায় ১২টি স্বর্ণের বারসহ গ্রেফতার ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনায় ১২ পিস স্বর্ণের বারসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে কেএমপি’র লবণচরা থানা পুলিশ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এক বাস তল্লাশি করে এই স্বর্ণের বার উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে লবণচরা থানার একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টুংগীপাড়া এক্সপ্রেসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯০৩৩) একজন ব্যক্তি সন্দেহজনক কোন বস্তু বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। বাসটি জিরোপয়েন্ট মোড়স্থ খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে রূপকথা রেষ্টুরেষ্টের সামনে আসলে বাসটি তল্লাশি করা হয়।

টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহন থামিয়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; সহকারী পুলিশ কমিশনার (খুলনা জোন) গোপীনাথ কানজিলাল; লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এবং এসআই (নি:) প্রদীপ বৈদ্য সহ সঙ্গীয় ফোর্স, স্থানীয় জনগণ এবং সাংবাদিকের সম্মুখে

যাত্রীদের তল্লাশি করাকালে স্বর্ণ চোরা চালানকারী সাতক্ষীরা’র দেবহাটা থানার শাখরা কমলপুর এলাকার মোঃ আলম গাজীর ছেলে মাসুম বিল্লাহ (২৮) কে জুতার (লোফার) ভিতরে সুকৌশলে সাজিয়ে রাখা ১২ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার প্রতিটি স্বর্ণের বারের ওজন ১১৬ দশমিক ৬৫ গ্রাম প্রায় ও সর্বমোট ওজন ১৩৯৯ দশমিক ৭৪ গ্রাম। যার সর্বমোট মূল্য অনুমান ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০৩ টাকা।

পুলিশ আরো জানায়, ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে স্বর্ণের বার বাসযোগে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সেখান থেকে স্বর্ণ সাতক্ষীরা বর্ডার অঞ্চল দিয়ে ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। উল্লেখিত স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে আরও কে কে জড়িত আছে এবং কোথা থেকে স্বর্ণগুলো আনা হয়েছে ও কোথায় পৌঁছে দিবে সেই রহস্য উদঘাটনের জন্য গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

;

উপজেলা ভোট

তৃতীয় ধাপেও আপিল নিষ্পত্তি করবেন ডিসিরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোটেও প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশন থেকে আপিল শুনানি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসককে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮মে। আপিল নিস্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।

তৃতীয় ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক।

দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে সেখানে একাধিক সহকারি রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের শেষ সময় ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে।

;

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে: মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধর সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রজন্ম ’৭০ বাংলাদেশের প্রজন্ম সম্মেলন ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৪৮-’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র এগারো দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠে। ’৭০’র সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে দেয়নি।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা অনুধাবন করেন, স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও বঞ্চনার অবসান হবে না। তাই তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, চলতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

মন্ত্রী বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর থেমে যায় বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা। শুরু হয় হত্যা, ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে আজ তিনি উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।

প্রজন্ম ৭০ বাংলাদেশ-এর সভাপতি আশরাফুল করিম ভূঁইয়া সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন খান, বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ফসিহ উদ্দিন মাহতাব, সদস্য সচিব এস এম মাহাবুবুর রহমান, আলোক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন বক্তৃতা করেন।

;

বরিশালে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য। ঘটনাটি নগরীর রূপাতলী গ্যাস্টারবাইন পুলিশ বাড়ি সড়ক এলাকার।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য তানিয়া আক্তার। তিনি এ সময় দাবি করেন, তার প্রতিবেশী রিয়াজ ফরাজী ও বিএমপি’র (বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ) ওয়্যারলেস অপারেটর এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তার অনেকদিন ধরে একটি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।

এ ঘটনায় তিনি বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (এমপি নং ১৪৪)। পরে আদালত অভিযুক্ত রিয়াজ ফরাজী, আমিনুল ইসলাম, শহিদ ফরাজীকে ১৪৪/১৪৫ জারি অনুযায়ী, তাদের প্রতি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আদেশ জারি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তানিয়া আক্তার আরো অভিযোগ করেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে এসআই মাইনুল তার লিখিত মতামত বাদী পক্ষের হয়ে কোর্টে জমা দেন। সে প্রেক্ষিতে আদালত ১৮৮ ধারা জারি করেন। ওই জমিতে কিছুদিন পর দালান নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে রিয়াজ ও তার দুলাভাই এএসআই আমিনুল ইসলাম ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলরের কাছে যান। তারা জমি মেপে যে সিদ্ধান্ত দেন, তা আমরা মানলেও তারা মানেননি।

পরে রিয়াজ ও তার দুলাভাই এএসআই আমিনুল ইসলাম তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের অ্যাডভোকেট ও আমিন দিয়ে সরেজমিন মাপজোখ করেন এবং প্রাথমিক একটি সিদ্ধান্ত দেয় থানা পুলিশ।

সে সিদ্ধান্তও তিনি মেনে নিলেও তার প্রতিপক্ষ মেনে না নিয়ে উল্টো তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করে। তারা তানিয়াকে ধরতে না পেরে অন্তঃসত্তা ছোট বোন মুনিয়াকে বেধড়ক মারধর করে ফের তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

তানিয়া অভিযোগে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মামলাটি দায়ের করা হয়’। এটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা বলে দাবি করেন তানিয়া আক্তার। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে আলাপ করতে চাইলে শারীরিকভাবে অসুস্থ দাবি করে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

;