সিরাজগঞ্জে রং-সুতার মূল্য বৃদ্ধিতে ১ লাখ তাঁত বন্ধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিরাজগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং ও রং-সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে তাঁত কারখানাগুলোতে ধস নেমেছে। ফলে ১ লাখ তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছেন।

সুতার বাজারমূল্য বাড়ার সঙ্গে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। যার কারণে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে তাঁত মালিকদের। তাঁত সমৃদ্ধ এই জেলায় ৩ লাখ তাঁত কারখানার ইতিমধ্যে ১ লাখ কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

শুক্রবার (৯ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানা মালিকেরা ডিজেল চালিত জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ দিয়ে তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করলেও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁত মালিকদের বিদ্যুৎ বিলও দিতে হচ্ছে আবার জেনারেটরও চালাতে হচ্ছে। এতে শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা উৎপাদনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে তাঁত মালিকদের। এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা। পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিন কাটছে তাদের।

জেলার বেলকুচি, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, এনায়েতপুর, রায়গঞ্জ, চৌহালী ও কাজীপুরে কম বেশি তাঁত কারখানা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হয়। উল্লাপাড়া, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুর, পাঁচিল বাজারে সপ্তাহে দুই দিন কাপড়ের হাট হয়। এই হাটে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন। বর্তমানে যে পরিমান উৎপাদন হচ্ছে তাও হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেকেই তাঁত কারখানা বন্ধ রাখছেন। আবার বর্তমান সুতার বাজারমূল্য যা রয়েছে তাতে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এতে করে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

তাঁত শ্রমিকেরা জানান, মহাজন কাপড় বিক্রি করতে পারে না, তাই কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। আগে সারা দিনে একজন শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকার কাজ করতেন। এখন সারা দিনে একজন শ্রমিক ৩০০-৪০০ টাকার কাজ করছেন। যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতো এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিকেরা।

তাঁত মালিকেরা জানান, জেলায় প্রায় তিন লাখ তাঁত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি হয়। সুতায় রং দেওয়া, শুকানো, সুতা তৈরি ও কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রতি তাঁতে ৩-৪ জন শ্রমিক প্রয়োজন। এতে মালিক কর্মচারী মিলে প্রায় চার লাখ শ্রমিক এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

বেলকুচি উপজেলার তাঁত মালিক হাজী শাহীন প্রামাণিক বলেন, বর্তমানে আমরা দুর্বিসহ জীবন যাপন করছি। দিনের বেলায় ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময় তেল, ডিজেল দিয়ে জেনারেটর এর সাহায্যে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে প্রচুর খরচ বেড়ে যায় এবং শ্রমিক থাকে না। বর্তমানে কাপড় ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছে। এর পর শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে কাপড় উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

সাউথ এশিয়া হাইটেক সাটেল ইন্ডাস্ট্রিজ এর ম্যানেজার (আমদানি-রফতানি) অনিমেষ সরকার বলেন, বর্তমানে তাঁত শিল্পে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের ৪০টি তাঁত মাত্র দুজন শ্রমিক কাজ করছে। আমাদের লুঙ্গি উৎপাদন হচ্ছে না শ্রমিকদের বেতন দেব কি করে। প্রতি সপ্তাহে শ্রমিকদের ঠিকই বেতন দিতে হচ্ছে। শ্রমিকেরা না আসার কারণ হচ্ছে তাদের মজুরি বাড়াতে হবে। কিন্তু বাজারে রং-সুতার যে দাম তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না, ফলে মালামাল বিক্রি করতে পারছি না। শ্রমিকদের মজুরি কীভাবে বাড়াব।

বেলকুচি লাকী সেভেন কটেজের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে তাঁতের দুর্দিন চলছে। তাঁত প্রায় বন্ধের পথে। সুতার দাম বেড়েছে কয়েকগুন। সে তুলনাই কাপড়ের দাম বাড়েনি। শ্রমিকদের ঠিকমতো বিল দিতে পারি না। এই শিল্পের ওপর সরকারের নজর নাই। সরকারের কাছে দাবি এই তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে হলো রং-সুতাসহ সকল কাঁচামালের দাম কমানোর। তাহলে এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।

উপজেলার তামাই গ্রামের শ্রমিক শাহ আলম বলেন, তাঁত শিল্পের অবস্থা ভালো না। ঈদের আগ থেকেই মহাজনের কেনাবেচা ভালো না। মহাজন কাপড় বেচতে পারে না এ জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করেছে। প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা কাজ হয়েছে। এখন ৩০০-৪০০ টাকা হয় না। বিল চাইলে কয় কাপড় বেচতে পারি নাই। আমরা কি করি। কীভাবে সংসার চলে।

আরেক তাঁত শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, যে কারখানায় কাজ করেন, সেখানে ৩০টি তাঁতের বেশীর ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। মাত্র কয়েকজন শ্রমিক এখন ১০টি তাঁত চালাচ্ছেন। তবে ঈদের পরে বাকি তাঁতগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁতগুলো বন্ধ হয়ে গেলে বেকার হয়ে পড়ার পর কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই দরিদ্র তাঁত শ্রমিক।

বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি হাজী বদিউজ্জামান বলেন, এই জেলাকে তাঁত কুঞ্জু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় ৩ লাখ তাঁত রয়েছে। এই তাঁতে আমরা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে থাকি। করোনার সময় তাঁতের ব্যবসার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আশা ছিল আমাদের ব্যবসাটা ভালো হবে। কিন্তু করোনার পরে তাঁত শিল্পের জন্য যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে রং, সুতা, তুলা সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যার কারণে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এটি একটি বড় সমস্যা।

অনেক শ্রমিক ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে গেছে। অনেকে দেশের বাহিরেও চলে গেছে। যে কারণে শ্রমিক সংকট চলছে। আরেকটি কারণ রয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের সমস্যা। জেনারেটর দিয়ে তাঁত চালাইতে গেলে দেখা যায় ১ লিটার তেলের দাম ১১০ টাকা। জেনারেটর দিয়ে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে খরচ বেশি হচ্ছে। যে কারণে কাপড় উৎপাদন করতে পারছিনা।

সবকিছু মিলেই আজ তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। জেলায় ৩ লাখ তাঁতের মধ্যে ১ লাখ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এর মূল কারণ শ্রমিক সংকটও কাঁচা মালের দাম বেশি। সরকার যদি তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে চায় তাহলে তাঁত মালিকদের জন্য একটি তাঁত ব্যাংক করা প্রয়োজন। এই ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁতিদের স্বল্প সুদে তাঁত লোন দেওয়া হয় তাহলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। না হলে এই শিল্প ধংস হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বেলকুচি-চৌহালী উপজেলার লিয়াজোঁ অফিসার তন্বী হোসেন বলেন, আমরা তাঁতিদের স্বাবলম্বী করতে তাদের লোন দিয়ে থাকি। আগে আমাদের লোন ছিল ১৩ হাজার টাকা। এখন আমরা সেই লোন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন দিচ্ছি। ১৯টি তাঁত যাদের আছে তারা প্রান্তিক তাঁতি। তাদের জন্য আমরা লোনের ব্যবস্থা করেছি। তাঁতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। দুর্যোগ সময়ে তাদের সহযোগিতা করে থাকি।

   

কৃষকদের সারের বিপরীতে গুলি উপহার দিয়েছিল বিএনপি: হানিফ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৯৫ সালে কৃষকদের সারের বিপরীতে গুলি উপহার দিয়েছিল বিএনপি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক লীগের মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, সার চাওয়ার অপরাধে কৃষকদের গুলি করে হত্যা করেছিলেন, এখনও আপনারা জাতির কাছে ক্ষমা চাননি তারপরও ক্ষমতায় যেতে চান। 

হানিফ বলেন, আপনারা খুনির দল, হত্যাকারীর দল, কোন সাহসে আপনারা আবার ক্ষমতায় যেতে চান? এই সরকার জনগণের সরকার। আপনারা নিজের চেহারা আয়নায় দেখুন।

কোন অবৈধ সরকার জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আজকে থেকে আমরা বলতে চাই, কোন অবৈধ সরকার জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দুর্নীতিবাজ কোন মানুষের নেতৃত্বের সরকার দেখতে চায় না। আপনাদের থেকে সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সেটা আপনারা নিজেরাও দেখেছেন। আমেরিকার জরিপে দেখেছেন এখনো ৭০ ভাগ মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

প্রসঙ্গত, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে নিহত হওয়াদের স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষক লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে।

;

সিমকার্ড খুলে নেওয়ায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
সিমকার্ড খুলে নেওয়ায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

সিমকার্ড খুলে নেওয়ায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের বদরগঞ্জে পুজা মহন্ত (১৬) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। মোবাইল ফোন থেকে সিমকার্ড খুলে নেওয়ার ক্ষোভে মা-বাবার ওপর অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি পরিবারের।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বদরগঞ্জ থানার ওসি নজরুল ইসলাম। এর আগে শুক্রবার রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পুজা মহন্ত বদরগঞ্জ পৌরশহরের মমিননগর শাহাপাড়ায় সঞ্জয় মহন্তের মেয়ে। সে পার্বতীপুরের খোলাহাটি ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কিছুদিন থেকে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে পুজা। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতো। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ফেসবুক নিয়ে আসক্ত না হওয়ার জন্য ভাই ও মা-বাবা তাকে অনুরোধ করেন। কিন্তু পুজা কারো কথা শোনতো না। 

এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার পুজার মোবাইল ফোন সেট থেকে সিম কার্ড খুলে নেয় পুজার বড় ভাই সাগর। এ নিয়ে পুজা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিকেলের দিকে দরজা বন্ধ করে পুজা ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। 

বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙ্গে পুজাকে উদ্ধার করে প্রথমে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাত আটটার দিকে পুজা মৃত্যু হয়।

সঞ্জয় মহন্ত বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে পুজা। জেদের বসে সে এমন কাণ্ড করে বসবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। এখন আমার সর্বনাশ হয়ে গেল।

বদরগঞ্জ থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, পুজা নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।

 

;

নদী রক্ষা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত: আনু মুহাম্মদ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নদী রক্ষা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত। যারা নদী দখল করে তারা বড় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক, তাই এটি রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় আসেন।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে “দখলের গ্রাসে সুটকি নদী’র ২৬ কিলোমিটার: ৫০ বছরে নদী লুট ঠেকাতে নাগরিক আহবান” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ মন্তব্য করেন।

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সুটকি নদী দখলদারিত্বের একটি প্রতিনিধিত্ব মাত্র। সারা দেশে এমন আরো বহু ঘটনা ঘটছে। নদীকে দেখার জন্য আমাদের আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো সেরকমভাবে তৈরি হয়নি। শীতলক্ষ্যার পাড়ে আমরা এখনো দেখছি শুধু সিমেন্ট কারখানা। জিডিপি বৃদ্ধির সাথেও নদী দখল জড়িত। কিছুদিন আগে এক মন্ত্রী বললেন, এতো চওড়া নদীর দরকার নেই। নদী ভরাট করে জমি বানাতে হবে। অতীতে নদী নিয়ে আন্দোলনকারীকে ক্রসফায়ারেরও হুমকি দেয়া হয়েছে এদেশে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আইনের অনেক অপব্যাখ্যা হচ্ছে। কিন্তু সংসদে নদীর স্বার্থের পরিপন্থী কোনো আইন এখনো পাশ হয়নি। নদী রক্ষা কমিশনের তেমন ক্ষমতা নেই, ফান্ডও নেই।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের সামগ্রিক নদী প্রশাসনের অবস্থা বেশ ঘোলাটে। ভরাট, দখল, উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সবই যেনো টাকার খেলা। নদী রক্ষা করতে হলে সাহসিকতা ও সততার সাথে কাজ করতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র সাবেক প্রধান নির্বাহী শীপা হাফিজা বলেন, সুটকি দখলদারিত্বে লোকটির দূরদর্শিতা আছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। আমাদেরকে এসব দখলদারিত্ব উচ্ছেদে নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে এবং তরুণদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে এ কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত দার্শনিক ও গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান সুমন শামস্ প্রমুখ।

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, নোঙর, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং ইনিশিয়েটিভ ফর পিস যৌথভাবে উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন ও ইনিশিয়েটিভ ফর পিস এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।

;

রমেকে জনবল সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম চট্টগ্রাম রংপুর
রমেকে জনবল সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা

রমেকে জনবল সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন জনবল নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়োগ না হতেই চুক্তিভিত্তিক প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাটাই করেছেন সদ্যবদলি হওয়া পরিচালক। এ অবস্থায় হাসপাতালের কার্যক্রম ব্যাহতসহ ছাঁটাইকৃত স্বাস্থ্যকর্মীদের বেড়েছে দুর্গতি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমনিতেই জনবল সংকট তার উপর ছাঁটাই। সংকটের উপর সংকট সৃষ্টি মানেই রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে থাকা রমেক হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাসহ সেবামূলক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। 

এদিকে রমেকে জনবল বৃদ্ধি না পেলেও হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পরিধি বেড়েছে দ্বিগুণ। ঘোষিত ১ হাজার রোগীর স্বাস্থ্য সেবার পরিবর্তে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশী রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন। এছাড়াও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন।

পাশাপাশি রোগীর স্বজন, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে প্রতিদিন অনেক মানুষের সমাগম হয় এই হাসপাতালে। 

কর্মচারীরা বলছেন, জনবল সংকটে তিন শিফটে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। উপরন্তু, নতুন জনবল নিয়োগ না হতেই চুক্তিভিত্তিক জনবল হ্রাস করায় পরিস্থিতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। 

সচেতন মহল বলছেন, সম্প্রতি নতুন জনবল সরবরাহের জন্য টেন্ডারে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানটির দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) কর্তৃক সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও কাজ না দেয়া রহস্যজনক।

দ্রুত স্থগিত জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে ঠিকাদাররা বলেছেন, মূল্যায়ন কমিটির সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার পর কেন গোল্ফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে কাজ না দিয়ে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান এবং সর্বশেষ টেন্ডার স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে টিইসির সদস্য সচিব এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান বলেন, সদ্যবদলি হওয়া পরিচালক নিজ ক্ষমতাবলে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান ও স্থগিত করেছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। তবে প্রাথমিক এবং কারিগরি মূল্যায়ন শেষে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত গোল্ফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের সুপারিশসহ টেন্ডার অনুমোদনের পরবর্তী গ্রহণ ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনে রমেক পরিচালককে অবগত করা হয়েছিল।

তিনি স্বীকার করেন, বর্তমানে হাসপাতালের পরিধি ও কার্যক্রম অনেক বেড়েছে, কিন্তু জনবল সে তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি নতুন জনবল নিয়োগ না করে চুক্তিভিত্তিক জনবল হ্রাস ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে সদ্যবদলি হওয়া রমেক হাসপাতালের পরিচালককে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেয়ার জন্য বলেন। পরে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি। 

;