সব রেকর্ড ভেঙে ভয়ঙ্কর ছিল আগস্ট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে— এমন আশঙ্কা ছিল বছরের শুরু থেকেই। সেই আশঙ্কাকে বাস্তবতায় রূপ দিয়ে দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে ভয়ঙ্কর আগস্ট। রেকর্ড ৩৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে এডিস মশাবাহিত এ রোগে। হাসপাতালেও ৭০ হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন এই মাসে, যা সর্বোচ্চ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, মে থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। আগস্টে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৭১ হাজার ৯৭৬ জনকে। এর মধ্যে ৩৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে ২০১৯ সালের আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশির ভাগই ডেঙ্গু সেরোটাইপ-২ বা ডেন-২ দ্বারা আক্রান্ত বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগী বাড়লেই মৃত্যু বাড়বে। আর এতে ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে নারী, বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী এবং শিশুরা। আর ডেঙ্গুর এই সময়ে স্থানীয় সরকারকে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ তাদের।

এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুনে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টে তা আরও বেড়েছে। মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬, মার্চে ১১১, এপ্রিলে ১৪৩, মেতে ১ হাজার ৩৬ ও জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। জুনে সারা দেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জুলাইয়ে সংখ্যাটি একলাফে ২০৪ জনে উঠে যায়। এর আগে জানুয়ারিতে ৬, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিলে ২, মেতে ২ এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে।

চলতি বছর যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে তা গত মার্চ মাস থেকেই স্বাস্থ্য অধিদফতর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সাবধান করে দিয়েছিল জরিপ করে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবধানতাকে তেমন পাত্তা দেয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগী সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ এবং এই রোগের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পরও সেদিকে নজর না দেয়ায় চলতি বছর ডেঙ্গু মারাত্মক হয়ে উঠেছে বলে জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন।

তারা বলছেন, এক সময় বাংলাদেশে ডেঙ্গু মৌসুমি রোগ বলে মনে করা হলেও কয়েক বছর ধরে বছরজুড়েই এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে এই রোগের চার ধরনের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং এটি দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।

   

জ্বালানি তেল বিক্রেতাদের কমিশন বাড়লো



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
সংগৃহীত প্রতীকী ছবি।

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি।

  • Font increase
  • Font Decrease

জ্বালানি বিক্রেতাদের কমিশন বাড়িয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অকটেন ৪.২৮ শতাংশ, পেট্রোল ৪.৩৪ শতাংশ, ডিজেলে ২.৮৫ শতাংশ এবং কেরোসিন তেলে ২ শতাংশ হারে কমিশন নির্ধারণ করা হয়েছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপসচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত গেজেটে ট্যাংকলরী পরিবহন ভাড়াও পুননির্ধারণ করা হয়েছে।

গেজেটে বলা হয়েছে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের (যাতায়াত-৮০ কিলোমিটার) এক্স-ডিপো মূল্য প্রদেয় হবে। ৪০ কিলোমিটারের বেশি দূরতে ১ কিলোমিটার (যাতায়াত- ২ কিমি) দশমিক ৫ লিটার ডিজেলের এক্স-ডিপো মূল্য প্রদেয় হবে।

বর্তমানে ডিজেলে ২, পেট্রোলে ৩ এবং অকটেনে প্রায় ৪ শতাংশের মতো কমিশন ছিল। এই কমিশন ৭.৫ শতাংশ করার দাবী ছিল পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে।

কমিশন বৃদ্ধি, এজেন্ট ঘোষণাসহ ৩ দফা দাবিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছিল সংগঠনটি।

এরপর সরকার তাদের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে জ্বালানি তেল বিপণনে সরকার ও বিপিসি কর্তৃক অনুমতি প্রাপ্ত জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী এবং ডিলারদের কমিশন এজেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে।

ওই ঘোষণার পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখে একটি পক্ষ। ওই আন্দোলন দেড় দিন চলার পর ৪ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় তারা।

মালিক সমিতির তিন দফা

মালিক সমিতির দাবিকৃত তিন দফা হলো, জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন ৭.৫০শতাংশ নির্ধারণ করা, পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীরা যে কমিশন এজেন্ট, তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা এবং (ক) ট্যাংকলরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়, এ বিষয়ে সু-স্পষ্ট গেজেট প্রকাশ ও (খ) ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফের জন্য পৃথকভাবে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।

;

চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ব্রেস্টফিডিং কর্নার উদ্বোধন



স্টাফ করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শিশু স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় মায়ের দুধের বিকল্প কিছুই নেই। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে চট্টগ্রামের পরীর পাহাড় তথা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রথমবারের মতো ব্রেস্টফিডিং কর্নার ‘মাতৃক্রোড়ের’ শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সোয়া পাঁচটার দিকে ফিতা কেটে ও ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ব্রেস্টফিডিং কর্ণারের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের সহধর্মিনী ও চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান। 

ব্রেস্টফিডিং কর্ণার ‘মাতৃক্রোড়’ উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই প্রথম ব্রেস্টফিডিং কর্ণারের উদ্বোধন করা হয়েছে। যেসকল মহিলা সেবাপ্রার্থী তাদের নবজাতকদের নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসে তারা অত্যন্ত নিরাপত্তা ও নিশ্চিন্তভাবে ‘মাতৃক্রোড়’-এ বসে শিশুদেরকে বুকের দুধ পান করানোর পাশাপাশি তাদের ডায়াপার ও পোশাকসামগ্রী পরিবর্তন করাতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ব্রেস্টফিডিং কর্ণারের পাশে মহিলা-পুরুষের জন্য আলাদাভাবে বেসিনসহ মোট ৪টি টয়লেট ও ৪টি ইউরিনাল তৈরী করা হয়েছে। শুধু জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নয়, পরীর পাহাড়স্থ বিভাগীয় কমিশনারের অফিস ও আদালতে নবজাতক নিয়ে আসা মহিলা বিচার প্রার্থীরাও এ ব্রেস্টফিডিং কর্ণার ‘মাতৃক্রোড়’-এ বসে বুকের দুধ পান করাতে পারবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আবদুল মালেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মোঃ আবু রায়হান দোলন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ, আরডিসি নুএমং মারমা মং, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা জামমেদ আলম রানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি-পটিয়া) ফাহমিদা আফরোজ, সিনিয়র সহকারী কমিশনার এসএম আলমগীর, সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ আশরাফুল আলম, সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ রাজিব হোসেন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাকিবুল ইসলাম, এনডিসি হুছাাইন মুহাম্মদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি প্লাবন কুমার বিশ্বাস ও তাদের সহধর্মিণীগণ। 

;

কুষ্টিয়ায় নদীর চরে উচ্ছেদ অভিযান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় নদীর চরে অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

কুষ্টিয়ায় নদীর চরে অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় নদীর চরে অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় গড়াই নদীর বাম তীরের হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ মৌজায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম শীলের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিনসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলির অভিযোগ, স্থানীয় কিছু দূর্বৃত্তচক্র মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গরিব মানুষদের এখানে বসতে দিয়েছে।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন বলেন, ‘সরকারী সম্পত্তিতে অবৈধ দখলমুক্ত করনে উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান উদ্যোগ। আজকেও তার অংশ হিসেবে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে গড়াই নদীর বামতীরে কয়েক‘শ বিঘা সরকারী সম্পত্তিতে অবৈধ ভাবে যারা স্থাপনা ও অবকাঠামো গড়ে তুলেছিল, তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে চলে যাওয়ার জন্য ইতোপূর্বেই নোটিশ দেয়া হয়েছিলো। যারা যায়নি তাদের উচ্ছেদ করা হলো। তবে পরিস্থিতি বুঝে আজকেও সবগুলি উচ্ছেদ করা যায়নি।’

তিনি আর বলেন, ‘আগামী ৩দিনের মধ্যে তাদের যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া গৃহহীনদের আবাসনের ব্যবস্থা সরকার করে দিচ্ছে। তারা চাইলে সরকারের কাছে ঘর চেয়ে আবেদন করতে পারেন। এখানে অভিযোগ উঠেছে কে বা কারা নাকি এসব গরীব মানুষদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে সরকারী জমিতে বসিয়েছে। সে বিষয়ে যদি কেউ সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উচ্ছেদ হওয়া গৃহহীন জেসমিন বলেন, ‘আমি বাধের চরে ভাড়া ছিলাম, হঠাৎ দেখি এই চরে টাকার বিনিময়ে জমি দেয়া হচ্ছে ঘরবাড়ি করার জন্য। আমিও স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নেদাই মেম্বারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ৩কাঠা জমি নিয়ে কিস্তির লোন তুলে এই ঘরটা তুলেছিলাম। এখন আমার সব গেল। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই’। 

তবে অভিযুক্ত নেদাই মেম্বর অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিই নাই, টাকা নিয়েছে ছেলে পেলে।’

সদর উপজেলার ১নং হাটশ হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একদল দূর্বৃত্তচক্র লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সরকারী এসব জমি বিক্রি করেছে। যে সব লোকজন এর সাথে জড়িত আছে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে তার প্রতিকার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একাধিকবার দরখাস্ত করেছি প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি।’

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল বলেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলে রাখার কোন সুযোগ নিই। যারাই এই দখলের সাথে জড়িত থাকনা কেন, তাদের আর যে পরিচয়ই থাকুক তা দেখা হবেনা। আইন সবার জন্যই সমান ভাবে প্রযোজ্য।’

;

প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের ঠিকানা, রাজাখালী উন্মুক্ত পাঠাগার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
রাজাখালী উন্মুক্ত পাঠাগার

রাজাখালী উন্মুক্ত পাঠাগার

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন রাজাখালী। সেই ইউনিয়নের সবুজ বাজারের দক্ষিণে কৃঞ্চচূড়া মোড়ে ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের এক তারিখ উদ্বোধন করা হয় রাজাখালী উন্মুক্ত পাঠাগার। এই পাঠাগার রাজাখালী ইউনিয়নের সর্বপ্রথম পাঠাগার। করোনায় পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে এলাকার শিক্ষিত যুবকদের প্রচেষ্টায় সৃষ্টি হয় রাজাখালীর এই পাঠাগার।

পাঠাগার সৃষ্টির পেছনে বর্তমান সভাপতি ম.ফ.ম  জাহিদুল ইসলাম, মিসবাহ উদ্দিন, এডভোকেট কামরুল কবির আজাদ, হেফাজ উদ্দিন, মোস্তাক আহমেদ, হুমায়ুন কবির খোকন, লায়ন আরিফ চৌধুরী, আনোয়ার ইসলাম মামুন গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে পাঠাগারটি পরিচালনায় উপদেষ্টা, কার্যকরী ও সাধারণ পরিষদ নামের তিন স্তরের কার্যকর পরিষদ গঠন করেছে কতৃপক্ষ। যেখানে উপদেষ্টা হিসাবে রাখা হয়েছে স্হানীয় শিক্ষক, আইনজীবি, সংগঠক, বেসরকারি ও সরকারি  কর্মকর্তাসহ ৯ জন বিশেষ ব্যাক্তিকে। কার্যকরী পরিচালনা পরিষদের সদস্যসংখ্যা ২১। সাধারণ পরিষদে রাখা হয়েছে ১০০ জন সদস্য৷

এই পাঠাগারে প্রায় এক হাজার বই আছে৷ প্রতিদিন একটি পত্রিকা এবং মাসিক কয়েকটি ম্যাগাজিন রাখা হয়। বই আদান প্রদান রেজিস্টারে স্বাক্ষর করে বাড়িতে পড়ার সুযোগ রয়েছে এই পাঠাগারে৷ এলাকায় পাঠাগারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, পরিবেশ রক্ষার কার্যক্রম চালায় কতৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে সাহিত্য আড্ডা, পাঠচক্র, বুক রিভিউ, চিত্র অঙ্কন, কুইজ, রচনা, কবিতা পাঠ, ৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড, ক্যারিয়ার গাইড লাইন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ক কর্মশালা, সাইবার সিকিউরিটি, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও আইনি সহয়াতা বিষয়ক কর্মশালা, পরিবেশ রক্ষায় তারুণ্যের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা, বৃক্ষ রোপণ ও বিতরণ, অভিভাবক সমাবেশ, বিনামূল্যে পাঠদান, গনস্বাক্ষর অভিযান, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, সহমর্মিতার ইদ উদযাপন, উপহারের মাধ্যমে ইদ শুভেচ্ছা বিনিময়, করোনা এবং রমজানে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, করোনায় ১৫০০ ব্যাক্তিকে বিনামূল্যে টিকার রেজিষ্ট্রেশন, মাস্ক ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ, বিখ্যাত কবি ও লেখকের জন্মজয়ন্তি উদযাপন, রক্তদান, বিভিন্ন জাতীয় আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালী, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য।

পাঠাভ্যাস গড়তে বিভিন্ন পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করা হয় নতুন পাঠকদের

 

সইবার সিকিউরিটি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার, জরুরি সেবার হটলাইন, পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতা এবং ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৩৫০০ হাজার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এছাড়া খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, শিক্ষা উপকরণ বিতরণন,অভিভাবক সমাবেসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ১৫০০ হাজার ব্যাক্তিকে বিভিন্ন  সুবিধা প্রদান করা হয়। পরিবেশ রক্ষায় প্রায় ৮ হাজার গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ করা হয়।

পাঠাগারের সার্বিক বিষয়ে কার্যকরী পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ম.ফ.ম. জাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনায় শিক্ষাবিমুখী ও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ এবং এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য তরুণ শিক্ষিত প্রজন্মের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে গড়ে তোলা হয় রাজাখালী উন্মুক্ত পাঠাগার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থানীয় বিভিন্ন অসাধু মহলের বিরোধিতা ও বাধার স্বত্বেও বিভিন্ন জনক্যালনমূলক কার্যক্রম এবং পাঠাগার পরিচালনা করে যাচ্ছে কতৃপক্ষ। এটাই তাদের সবথেকে বড় সার্থকতা। উপদেষ্টা পরিষদ ও সদস্যদের মাসিক চাঁদার মাধ্যমে এই উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এই পাঠাগার।

পাঠাগারের কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব মিনহাজুল ইসলাম বলেন, যেকোনো বয়সের নারী পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে পাঠের অভ্যাস সৃষ্টিতে এই পাঠাগার গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি সবার সহযোগিতায় বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার অদম্য ইচ্ছে তাদের।

;