কুষ্টিয়ায় নদীর চরে উচ্ছেদ অভিযান

কুষ্টিয়ায় নদীর চরে অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় নদীর চরে অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় গড়াই নদীর বাম তীরের হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ মৌজায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম শীলের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিনসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলির অভিযোগ, স্থানীয় কিছু দূর্বৃত্তচক্র মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গরিব মানুষদের এখানে বসতে দিয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন বলেন, ‘সরকারী সম্পত্তিতে অবৈধ দখলমুক্ত করনে উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান উদ্যোগ। আজকেও তার অংশ হিসেবে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে গড়াই নদীর বামতীরে কয়েক‘শ বিঘা সরকারী সম্পত্তিতে অবৈধ ভাবে যারা স্থাপনা ও অবকাঠামো গড়ে তুলেছিল, তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে চলে যাওয়ার জন্য ইতোপূর্বেই নোটিশ দেয়া হয়েছিলো। যারা যায়নি তাদের উচ্ছেদ করা হলো। তবে পরিস্থিতি বুঝে আজকেও সবগুলি উচ্ছেদ করা যায়নি।’
তিনি আর বলেন, ‘আগামী ৩দিনের মধ্যে তাদের যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া গৃহহীনদের আবাসনের ব্যবস্থা সরকার করে দিচ্ছে। তারা চাইলে সরকারের কাছে ঘর চেয়ে আবেদন করতে পারেন। এখানে অভিযোগ উঠেছে কে বা কারা নাকি এসব গরীব মানুষদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে সরকারী জমিতে বসিয়েছে। সে বিষয়ে যদি কেউ সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উচ্ছেদ হওয়া গৃহহীন জেসমিন বলেন, ‘আমি বাধের চরে ভাড়া ছিলাম, হঠাৎ দেখি এই চরে টাকার বিনিময়ে জমি দেয়া হচ্ছে ঘরবাড়ি করার জন্য। আমিও স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নেদাই মেম্বারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ৩কাঠা জমি নিয়ে কিস্তির লোন তুলে এই ঘরটা তুলেছিলাম। এখন আমার সব গেল। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই’।
তবে অভিযুক্ত নেদাই মেম্বর অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিই নাই, টাকা নিয়েছে ছেলে পেলে।’
সদর উপজেলার ১নং হাটশ হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একদল দূর্বৃত্তচক্র লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সরকারী এসব জমি বিক্রি করেছে। যে সব লোকজন এর সাথে জড়িত আছে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে তার প্রতিকার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একাধিকবার দরখাস্ত করেছি প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি।’
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল বলেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলে রাখার কোন সুযোগ নিই। যারাই এই দখলের সাথে জড়িত থাকনা কেন, তাদের আর যে পরিচয়ই থাকুক তা দেখা হবেনা। আইন সবার জন্যই সমান ভাবে প্রযোজ্য।’