যানজট এড়াতে পারলেও মানুষ জটে মেট্রোরেলের যাত্রীরা

ছবি: বার্তা ২৪.কম
কলেজ ছাত্রী লামিয়া আহম্মেদ। ক্লাশ শেষ করে তড়িঘড়ি করে উঠেছেন আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে টিকেট কাটতে। তবে ৩ টা থেকে থেকে সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত টিকেট সংগ্রহের জন্য লাইনে অপেক্ষা করে হাতে পাননি আগারগাঁও থেকে ৫ মিনিটের দূরত্ব শেওড়াপাড়া যাওয়ার টিকেট।
লামিয়ার মত একি অবস্থা ব্যবসায়ী আজমল হোসেনেরও। জরুরি প্রয়োজনে আগারগাঁও থেকে মিরপুর যাবেন তিনি। স্টেশনে এসে পড়েছেন বড় বিরম্বনায়। ৪০ মিনিট দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মিলেছে কাঙ্ক্ষিত টিকেট।
শুধু লামিয়া বা আজমল হোসেন নয় আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে টিকেট সংগ্রহ করতে আসা প্রতিটি যাত্রীর সময়ের গল্প ঠিক একি রকম।
রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজট ও বিশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রথম পছন্দ হিসেবে মানুষ বেছে নিচ্ছে দ্রুতগতির মেট্রোরেল। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে দ্রুতগামী এ রেল সেবার চাহিদা।
তবে সেখানেও যাত্রীদের টিকেট পেতে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ দীর্ঘ লাইনে। কারো কারো দশ মিনিটের যাত্রাপথের জন্য কাউন্টারে টিকেট পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ফলে যানজটের কারণে সড়ক পথে যেমন দীর্ঘ সময় কেটে যেত যাত্রীদের, ঠিক সেভাবেই মেট্রোরেলের টিকেট কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে কেটে যাচ্ছে কর্মঘণ্টা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে সাধারণ মানুষ মেট্রোরেল ব্যবহার করলেও সেখানে মানুষ জট কি এড়াতে পারছেন যাত্রীরা?
যাত্রীরা বলছে, দিন দিন মানুষের কাছে বেড়েই চলেছে মেট্রোরেলের চাহিদা। বিশেষ কিছু স্টেশনে প্রতিনিয়তই লেগে থাকে ভিড়। এতে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থাকার ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে ৬ টি অটোমেটিক এবং ৬ টি মেনুয়াল টিকেট কাউন্টার থাকলেও যাত্রী চাপ বিবেচনায় দ্রুত আরো টিকেট কাউন্টার বাড়ানোর দাবি যাত্রীদের।
কলেজ ছাত্রী লামিয়া আহম্মেদ বলেন, মেট্রোরেলে আগারগাঁও থেকে আমার গন্তব্য মাত্র ৩-৫ নিমিটের দূরত্ব। তবে সেই গন্তব্যের টিকেট কাটতে এসে আমাকে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এটা আসলে একদম বাজে অনুভূতি। তবে যে সকল স্টেশনে ভিড় বেশি সে সকল স্টেশনে কাউন্টার বাড়ানো গেলে আমাদের ভোগান্তি কমবে।
শাখাওয়াত হোশেন বলেন, এর আগেও আমি ২ দিন এসেছিলাম কিন্তু টিকেট পাইনি ভিড়ের জন্য। আজও একি ভাবে লাইন দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এখানে আরও কাউন্টার বাড়ানো উচিত।
নাঈমা ইসলাম নামের আরেক কলেজ ছাত্রী বলেন, আমাদের সময় বাঁচাতেই আমরা মেট্রোরেল ব্যবহার করছি। কিন্তু এখানে এসে আমাদের টিকেটের জন্য সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের বিষয় গুলো বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এদিকে দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষা করেও অনেকেই পান না কাঙ্ক্ষিত টিকেট। টাকার সমস্যা ও নেটওয়ার্ক জটিলতায় অনেক সময় সেবা প্রদান বন্ধ হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয় টিকেট কাউন্টারে। ফলে লাইনে অপেক্ষা করে পুনরায় নতুন করে অন্য লাইনে দাড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে দেখা যায় যাত্রীদের।