রমেকের ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে পুড়ে গেছে রংপুর মেডিকেল কলেজের কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ। এতে ব্যাহত হচ্ছে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা সেবা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করতে না পারায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অনেক রোগী। তিন দিন আগে বৈদ্যুতিক শর্টসার্টিকের কারণে মেশিন নষ্ট হওয়ায় ডায়ালাইস বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া ওই ওয়ার্ডের রোগীদের সব ধরনের উপকরণ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। ফলে রোগীদের অর্থিক খরচের পাশাপাশি চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

রমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ইকো মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন থেকে। সেইসঙ্গে ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডে গিয়ে জানা গেছে, রংপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার প্রায় শতাধিক কিডনি রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তারা অগ্রীম টাকা জমা দিয়ে তালিকাভুক্ত হন। তাদের প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ডায়ালাইসিস করার জন্য আসতে হয়।

কিছুদিন আগে ২৮টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ৯টিই বিকল হয়ে যায়। পরবর্তিতে এসব ঠিক করা হলেও চিকিৎসার উপকরণ কিনতে হিমসিম খাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। রোগীরা অভিযোগ করেছেন এই বিভাগের রোগীদের স্যালাইন সুইসহ অন্যান্য ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে ডায়ালাইসিস ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজা টাকার মত। ফলে সরকারি হাসপাতাল হিসেবে যে সেবা পাওয়ার কথা তারা তা পাচ্ছেন না।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বিদ্যুতের শর্টসার্কিটের কারণে ডায়লাইসিস মেশিন অচল হয়ে পড়ায় রোগীদের ডায়ালাইসিস করা বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। কিডনি বিভাগে রোগী সামছুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ৩ মাস থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হঠাৎ ডায়ালাইসিস চিকিৎসাধীন মেশিন নষ্ট হওয়ায় চিকিৎসা পাচ্ছেন না। রোগীর স্বজন মিঠাপুরের বাসিন্দা আশুরা বেগম বলেন, তিনি তার স্বামীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। বর্তমানে ডায়ালাইসিস বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, একজন কিডনি রোগী টাকা জমা দিয়ে সপ্তাহে দুদিন করে ৪৮ বার ডায়ালাইসিস করাতে পারেন। এটি রোগীদের প্যাকেজ সুবিধা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাদের দুটো কিডনি বিকল, একমাত্র তাদের সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করানো হয়। আগে সব ধরনের উপকরণ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হতো। কয়েক মাস ধরে প্রত্যেক রোগীকে ডায়ালাইসিসের সব উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০০ হলেও জনবল রয়েছে ৫০০ শয্যার। এখানে রয়েছে ইনডোর বিভাগ, আউটডোর বিভাগ, জরুরী বিভাগ ও এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। এছাড়াও ডায়রিয়া ট্রেনিং ইউনিট, ইপিআই প্রোগ্রাম, ইওসি কার্যক্রম, ডটস কর্ণার, এম, আর ক্লিনিক, মডেল ফ্যামিলি প্লানিং ক্লিনিক, বেস্ট ফিডিং সেন্টার, সমাজ সেবা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।

হৃদরোগ বিভাগের ইকো মেশিনের সবগুলোই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। হৃদরোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে শুধু ইসিজি নির্ভর। ইকোমেশিন না থাকায় হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা চিহ্নিত করতে পারছেনা রোগীরা। হাসপাতালের সিটিস্ক্যান মেশিনটিও দীর্ঘদিন থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে রোগীদের সিটিস্ক্যান বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ এমআরআই মেশিনটিও নষ্ট।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুস আলী বলেন, বিদ্যুতের সর্টসার্কিটের কারণে সমস্যা হওয়ায় ডালালাইসিস বন্ধ রয়েছে। ঢাকা থেকে টেকনেশিয়ান আসার কথা রয়েছে। দুই একদিনে মধ্যে আবার ডায়ালাইসিস শুরু হবে।