কটিয়াদীতে জেলার বৃহৎ শতবর্ষী ‘কুড়িখাই মেলা’ শুরু 

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই মেলা। উজান-ভাটির মানুষের কাছে এই মেলা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। মেলা উপলক্ষে আশপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে বিরাজ করে আনন্দময় পরিবেশ। গোটা জেলার মানুষ আসে এই মেলায়৷ আশপাশের জেলা থেকেও মেলায় আসে অনেক মানুষ। শত বছরের প্রাচীন দেশের অন্যতম গ্রামীণ কুড়িখাই মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে সপ্তাহব্যাপী চলবে। 

কটিয়াদী উপজেলার মুমুদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই এলাকার এই মেলাটি কিশোরগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় গ্রামীণ মেলা হিসেবে পরিচিত। এই মেলাকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেছে আশেপাশের সব এলাকা।

বিজ্ঞাপন

কুড়িখাই এলাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) এর বংশধর হযরত শাহ সামছুদ্দীন (রহ.) এর সমাধি সংলগ্ন এলাকায় প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ সোমবার মেলা শুরু হয়। সপ্তাহব্যাপী মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সার্কাস, মৃত্যুকূপ, নাগরদোলা, পুতুল খেলাসহ রকমারি পসরা নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। বসে বিন্নি ধানের খই, কদমা, বাতাসা, গুড়, জিলাপির দোকান। এই মেলায় পাওয়া যায় বিশাল বিশাল মাছ, কাঠের আসবাবপত্র। পার্শ্ববর্তী কৃষি জমিসহ বিশাল চত্বরে বসে এই মেলা।

আশপাশের সমস্ত এলাকায় বছরের প্রধান উৎসব হয়ে ওঠে প্রায় শত বছরের প্রাচীন কুড়িখাই মেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার পরিবারগুলো আগে থেকেই টাকা জমিয়ে রাখতে থাকে মেলায় খরচ করবে বলে। দূরবর্তী আত্মীয়স্বজনকে মেলার বিশেষ দাওয়াত দেওয়া হয়। চারদিক থেকে এলাকার ছেলে-বুড়ো থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষের সপ্তাহব্যাপী দীর্ঘ লাইন থাকে মেলার দিকে।

বিজ্ঞাপন

এই মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মাছের হাট। মেলায় বিশাল এলাকাজুড়ে বসে মাছের হাট। এই হাটে বোয়াল, চিতল, আইড়, রুই, কাতল, সিলভার কার্পস, পাঙ্গাস, মাগুর, বাঘাইরসহ নানা ধরণের অন্তত চার শতাধিক মাছের দোকান বসে। মাছ বিক্রেতারা কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা সুনামগঞ্জের হাওর ও নদী থেকে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে এসব মাছ সংগ্রহ করে মেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের লোকজন এই মেলা থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। এছাড়া মেলায় হাজারো দর্শক আসেন মাছ দেখতে। মেলার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রতিবাড়িতে মেলা উপলক্ষে নতুন জামাই ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াতের রীতি রয়েছে।

মেলাকে ঘিরে কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। তবে কয়েক বছর ধরে মেলার জিনিসপত্রের দাম চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। অবস্থা এমন চলমান থাকলে মেলার আকর্ষণ এবং জৌলুশ হারাবে বলেই মনে করেন আগতরা। যদিও মেলা কমিটির সংশ্লিষ্টরা বলছেন মূল্য স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হবে৷ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যাবসায়ীরা বলছেন, মেলায় যায়গা পেতে তাদের টাকা দিতে হয়, স্থান ভেদে ডিমান্ড বেশি হয়। ফলে এর প্রভাব পড়ে জিনিসের উপর।