সুন্দরবনে গাছের প্রজাতি ও পরিমাণ নির্ণয়ে জরিপ শুরু
বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও পরিমাণ নির্ণয়ে জরিপ শুরু হয়েছে। বনবিভাগের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার (১৯মার্চ) থেকে শুরু হয় গাছ জরিপের কাজ। আগামী তিন মাসের মধ্যে জরিপ শেষ করবে বনবিভাগ।
সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই ম্যানগ্রোভ বনের ৪ হাজার ১৪২ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটারের স্থলভাগে কত প্রজাতির ও কি পরিমাণ গাছপালা রয়েছে তা জানতে এই জরিপ চালানো হচ্ছে।
বনবিভাগের তথ্য মতে, ১৯০৩ সালের গবেষণায় সুন্দরবনে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুর, কাঁকড়া, কেওড়া, ধুন্দল, বাইন, খলসি, আমুর, সিংড়াসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড ছিলো। ১৯৮৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে অরণ্য ও গুল্ম প্রজাতির সংখ্যা কমে তা দাঁড়ায় ৬৬ প্রজাতিতে। ১৯৯৭ সালের জরিপে সুন্দরবনে মাত্র ৪৮ প্রজাতির উদ্ভিদ ছিলো। এরপর ২০১৪-১৫ সালের সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বেঁড়ে দাঁড়ায় ১৮৪ টিতে। এরমধ্যে ৫৪ প্রজাতির গাছ, ২৮ প্রজাতির লতাপাতা, ১৩ প্রজাতির গাছড়া, ২২ প্রজাতির গুল্ম, ১৩ প্রজাতির ফার্ণ, ১২ প্রজাতির অর্কিড, ৩ প্রজাতির পরজীবী উদ্ভিদ, ২ প্রজাতির পাম, ২৮ প্রজাতির ঘাষ ও ৯ প্রজাতির ছত্রাক উদ্ভিদ রয়েছে সুন্দরবনে।
বর্তমানে সুন্দরবনে এসব উদ্ভিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই হচ্ছে সুন্দরী, গেওয়া ও গরান গাছ। তবে এসব উদ্ভিদের মধ্যে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় থাকা ৫ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে লাহুর, বনবকুল, মহাজনি লাতা ও দুই প্রজাতির অর্কিড।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র সুন্দরবনের স্থল ভাগে কতো প্রজাতির ও কি পরিমাণ গাছপালা রয়েছে তা জানতে শুরু হয়েছে এই বনভূমির গাছ জরিপের কাজ। বনবিভাগের বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আগামী তিন মাসের মধ্যে এই জরিপ কাজ শেষ করবে। তখনই জানা সম্ভব হবে এখন সুন্দরবনে কতো প্রজাতির ও কোন কোন প্রজাতির কি পরিমাণ গাছপালা রয়েছে।